ফতুল্লায় সড়কে নৌকা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ গত কয়েক দিনের হালকা ভারীবর্ষণ এবং মঙ্গলবার ভোররাতের মুষলধারার বৃষ্টিতে ফতুল্লার অধিকাংশ এলাকায় রাস্তা ছাপিয়ে পানি এখন বসতঘরে। তলিয়ে গেছে রান্নাঘর, বাথরুমসহ পুরো বাড়ি। নিরুপায় হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। অনেকেই আবার কোথাও যাওয়ার জায়গা না পেয়ে পানিবন্দি হয়ে নিজ বাড়িতেই রয়েছেন।

কলকারখানার বিষাক্ত কেমিকেলযুক্ত পানির সংমিশ্রণ ঘটেছে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে। এ ছাড়া স্যুয়ারেজের পানি মিশে একাকার। বিবর্ণ এই পানি মাড়িয়ে জরুরি প্রয়োজনে কাজে যাচ্ছেন মানুষ। কিন্তু এই দুর্ভোগ থেকে কবে রক্ষা পাবেন—এই প্রশ্নের উত্তর নেই কারো কাছে। ফতুল্লার লালপুর, ইসদাইর, দাপা, আলীগঞ্জ, জালকুড়ি, পাগলা, পিলকুনী, রামারবাগ, শিয়াচর, রসুলপুর, শাহীবাজার, নূরবাগসহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জনসাধারণের কষ্ট চরমে পৌঁছেছে। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও বুক সমান পানি পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। নৌকা চলতে দেখা গেছে অনেক সড়কে।

নূরবাগের বাসিন্দা, নিঃসন্তান বৃদ্ধা আকলিমা বেওয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘স্বামী মইরা গেছে ২০ বছর আগে। এরপর থিকা একাই এই খুপরি ঘরে থাহু। ভোরে ভিক্ষা করতে বাইর হই। মানুষ দয়া কইরা যা দেয় তা নিয়া সন্ধ্যায় ঘরে ফিরি। কিন্তু আমার ঘরে এখন হাঁটুসমান পানি। রাস্তাগুলোও পানিতে তলাইয়া গেছে। মানুষজনের চলাচলও নাই। কোথায় যামু, কার কাছে যামু। খাইতে না পাইরা আমার মরার দশা। আমগো মরণই ভালা।’

এদিকে পানিবন্দি অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এমন বিপর্যয়ের সময়েও জনপ্রতিনিধিদের দেখা মিলছে না। আমরা খেয়ে, না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। দুঃখী মানুষের কান্না তাদের কাছে পৌঁছায় না। প্রতি বছর বর্ষা এলেই সীমাহীন কষ্ট করতে হয় আমাদের। রীতিমতো আমরা হাঁপিয়ে উঠেছি। প্রকল্পের পর প্রকল্প আসছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি মিলছে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.