কসবায় খাল ভরাট করে মার্কেট ও বাড়িঘর নির্মান করেছে ভ’মিদস্যুরা

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার হাতুরাবাড়ি গ্রামে সরকারী খাল ভরাট করে মার্কেট ও বাড়িঘর নির্মান করেছে এক শ্রেনির মানুষ। গ্রামের অভ্যন্তরে খালের উপর নির্মিত ব্রিজের দুপাশ ভরাট করলে একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের হাতুরাবাড়ি-মান্দারপুর সড়কটি ওই ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপুর্ন সড়ক। গ্রামের ভেতরে অসংখ্য সরকারী খালগুলোর মধ্যে অদের খাল থেকে প্রবাহিত হাতুড়াবাড়ি হয়ে মান্দারপুর বড় খালে মিলিত হয়েছিলো এই খালটি। কিন্তু গত দুবছরে গ্রামের প্রভাবশালী বশির উদ্দিন গংরা সড়কের দুপাশের খালটি ভরাট করে মার্কেট ও বাড়িঘর নির্মান করেছে। সড়কের পূর্ব পাশে খালটি সর্বোচ্চ ৫০ফুট প্রশস্ত। ওই সমস্ত জায়গা ভরাট করে দোকানপাট, মার্কেট ও বাড়িঘর নির্মান করায় গ্রামের বিরুপ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বাদৈর ইউনিয়ন সহকারী ভ’মি কর্মকর্তা ইব্রাহীম আহাম্মদ জানান,হাতুরাবাড়ি মৌজার ২৯৯ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত এই খালটির বিএস রেকর্ডে ও ম্যাপে পূর্বপাশে ২৫ ফুট প্রসস্ত থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত প্রসস্ত রয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিম পাশেও ২৫ থেকে ৩০ ফুট খাস সম্পত্তি রয়েছে। কতিপয় লোকজন খালের অস্তিত্ব নষ্ট করে জনজীবনে দূর্ভোগ নামিয়ে এনেছেন। বাদৈর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ৫নং ওয়ার্ড সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান জানান; হাতুরাবাড়ি গ্রামের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মান্দারপুর গ্রাম পর্যন্ত সড়কের দুপাশেই খাস সম্পত্তি রয়েছে।
মান্দারপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য সুবেদার শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামীন এই খালগুলো ভরাট করে জনজীবনে বিপর্যয় তৈরি করা হয়েছে।এক সময় এ সমস্ত খাল থেকে দেশীয় নানা জাতের মাছ ধরা হতো। তিনি অবিলম্বে খাল উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
হাতুরাবাড়ী গ্রামের আবদুল আলীমের স্ত্রী জামেনা খাতুন (৬৫) বলেন; এই গ্রামেই আমার বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ী। একসময় সড়ক ছিলোনা গোপাট ছিলো। গোপাটের দুপাশে খাল ছিলো। এখন গোপাট সড়ক হয়েছে। খালগুলো ভরাট বাড়িঘর ও দোকানপাট হয়ে গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। এ বিষয়ে মার্কেটের মালিক বশির আহাম্মদ বলেন, গ্রামের বাদশা মিয়া, আলাউদ্দিন, বাছির মিয়া সহ অনেকেই খাল ভরাট করে বাড়িঘর করেছে। তাই আমরাও ভরাট করে মার্কেট করেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ উল আলম বলেন; সরকারী খাল ভরাট করে মার্কেট ও স্থাপনা নির্মানের বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। কোনো অবস্থাতেই খাল ভরাট করে বা দখল করে পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করা যাবেনা। সহকারী কমিশনার ভূমিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সার্ভেয়ারের মাধ্যমে পরিমাপ করে দ্রুত খাল উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.