ভিআইপি আগমনে জনতার নাভিশ্বাস

ভি আই পি ও ভি ভি আইপি বলে কথা। তাই জনাব ভিআইপি মহোদয় আসবেন এর সুবাদে দীর্ঘ ৪মাইল রাস্তা পার হতে সময় নিয়েছে ৩ঘন্টা ৩৬মিনিট। যাকে জিজ্ঞাসা করি সেই বলে বিশ্বরোড মোড়ে জ্যাম লাগছে। গত ২৩ তারিখ সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রওয়ানা দিয়ে বেলা ৩.৪৫মিনিটে পৌঁছা হয় বিশ্বরোড মোড়ে। কি এক অসহনীয় যন্ত্রণা; গাড়ি আর গাড়ি, তিল ধারণের ঠায় নেই তবে যেন মৃত্যুকুপের কাছাকাছি ছিলাম আমরা। আশায় বুক বেধে ছিলাম যে, যেকোন প্রকারে ঢাকায় পৌঁছাব। সরকারের আইনই যত যামেলার কারন। পরের দিন লক ডাউন বা শাটডাউন তাই আইনকে শ্রদ্ধা করতেই হবে এবং অপরদিকে পুলিশের সৃষ্টি যানযটকেও বাধ্যতামূলক মানতে হবে। নিয়তির নির্মম পরিহাস এবং আইনের নিষ্ঠুর আচরণ।
যথন বিশ্বরোড মোড়ে পৌঁছালাম তখন দেখতে পাই যে, সিলেট থেকে ঢাকাগামি সকল গাড়িকে নিব্রিঘ্নে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন সম্মানীত পুলিশ ভাইয়েরা। বি-বাড়িয়া থেকে ঢাকাগামী গাড়িগুলোকে বন্ধ করে দিয়ে এই যানজট সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে আমি নিজেই ড্রাইভার কারণ ঈদে আমার ড্রাইভারকে ছুটি দিয়ে বাড়িতে পাঠাই মা বাবার সঙ্গে ঈদ করার জন্য। তাই আমার স্ত্রীকে বললাম তুমি যাও গিয়ে ট্রাফিক ভাইকে বলো এই চারটা গাড়ি অন্তত ছাড়তে। কথানুযায়ী আমার স্ত্রী গিয়ে ঐ ট্রাফিক ভাইকে বলল যে, আমাদের প্রয়োজন; তখন ঐ ট্রাফিক ভাইটি সদয় হয়ে আমাদের গাড়িটিকে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সততা ও আইন মেনে চলা এই যুগে অনেক কষ্টের তারপরও চলতে হবে এবং সকলকে সম্মান করে আগামীর পৃথিবীকে সাজাতে হবে।
আমার মূল্যায়ন হলো যে, ভি আইপি ও ভি ভি আইপিদের যাতায়াত নিবিঘ্নে করার জন্য সাধারনের কষ্ট লাঘবে একটি পন্থা বের করা জরুরী হয়ে পড়েছে। তবে ভিআইপিদের সম্মানের সহিতই বলছি যে, আপনারা যখন জরুরী প্রয়োজনে দেশের ভিতরে বিভিন্ন স্থানে যাবেন তখন বিমান অথবা হেলিকপ্টার ব্যবহার করলে সকলেরই সম্মান ও সময় এবং কষ্ট লাঘব হবে। তবে রাষ্ট্রিয় প্রয়োজন হলে রাষ্ট্রীয় খরচে এই ব্যবস্থা করা হউক। আর ব্যক্তিগত প্রয়োজন হলে ব্যক্তিগত খরচে এই ব্যবস্থার আওতায় এসে দেশবাসীকে সুখে স্বাচ্ছন্দে চলার ব্যবস্থা করা হউক।
ভিআইপি ও ভিভিআইপি এই দুইশ্রেণীর সম্মানীতদের জন্য সাধারণের কষ্টের সুযোগ আর সৃষ্টি না হউক। ঐ দুই শ্রেণীই সাধারণ দিয়ে সম্মানিত হয়েছেন। সাধারণে আবার অসারণও ঐ কষ্টের স্বীকারে পরিণত হয়। রোগী অথবা মৃত্যুপথযাত্রী সবাই ঐ অসহনীয় পরিস্থিতিতে যন্ত্রনায় ছটফটায় ও আর বিষাক্ত নি:শাস ছেড়ে সৃষ্টিকর্তার স্মরণাপন্ন হয়। তাই সরকার এবং কর্তৃপক্ষ ও সম্মানীতদের এই বিনীত অনুরোধ করছি যেন সদয় বিবেচনায় নিয়ে আগামীর করণীয় ঠিক করেন। কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে না দিয়ে এমনকি কোন মানুষের স্বাভাবিক গতিময় জীবনকে বাধাগ্রস্ত না করে আগামীর নিজঞ্জাট বাংলাদেশ গড়ে তুলোন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.