প্রশান্তি ডেক্স ॥ মিরসরাইয়ে মাল্টা চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বে পাহাড়, পশ্চিমে সমুদ্রবেষ্টিত মিরসরাই উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ১২ টন মাল্টা উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি ১৫০ টাকা করে এর বাজারমূল্য ১৮ লাখ টাকা। মাল্টা চাষে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা কাজী নরুল আলম বলেন, মিরসরাইয়ের মাটি মাল্টা চাষের জন্য খুবই সহায়ক। বিশেষ করে পাহাড়ের মাটিতে মাল্টা ভালো চাষ হয়। উপজেলায় বর্তমানে সব মিলিয়ে ১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ করা হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে মাল্টা চাষে আগ্রহীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও চারা দেওয়া হয়, যার ফলে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকে।
উপজেলায় মাল্টা চাষ করে সফল চাষিদের একজন জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের খিলমুরারী গ্রামের আকবর হোসেন। ২০০২ সালে স্নাতক পাশ করার পর চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও চাকরি পাননি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। চাকরি করে জীবনের মোড় না ঘুরলেও মাল্টার বাগান করে সফল হন আকবর হোসেন। ২০১৮ সালে বাড়ির পূর্ব পাশের পাহাড়ে তিন একর জায়গা লিজ নিয়ে সমন্বিত ফলের বাগান গড়ে তোলেন, বাগানের নাম দেন ‘ফিউচার এগ্রো হোমস’।
দৃঢ় মনোবল আর কঠোর পরিশ্রমের কারণে আকবর এখন সফল উদ্যোক্তা। ইউটিউব দেখে আকবর তার বাগান গড়ে তুলেছেন। বাগানে কোনো সমস্যা হলে বা নতুন কোনো প্রজাতির চারা রোপণ ও পরিচর্যাসহ সবই করেন ইউটিউব দেখে। তার বাগানের ফরমালিনমুক্ত সুস্বাদু মাল্টা ফলের দারুণ চাহিদা রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। উঁচু-নিচু পাহাড় ও পাহাড়ের ঢালুতে গাছের মধ্যে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো মাল্টা। গাছে রয়েছে পাকা ও আধা পাকা পেঁপে। ফলন এসেছে কমলাগাছেও। আকবরের বাগানে বর্তমানে রয়েছে ২৫০ পিস বারি-১ ও বাউ গ্রিন মাল্টা, ২০০ পিস রেডলেডি পেঁপে, ৬০ পিস কমলা, ১০০ পিস থাই পেয়ারা, ১০০ পিস লেবু, ৩ পিস আপেল, ৩ পিস আলুবোখরা ও কিছু চায়না-৩ লিচু, বানানো ম্যাংগো, কিউজাই, মিয়াজাকি, ব্ল্যাক স্টোন, ব্রুনাই কিংসহ অন্যান্য প্রজাতির ২০০ পিস আমের চারা।