কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ॥ কুড়িগ্রাম: তিস্তার ভাঙনে ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় রাজারহাট উপজেলার গতিয়াশাম গ্রামের একটি পরিবার ঘরের চালা সরিয়ে নিয়ে সড়কের ওপর রাখছে। তিস্তার পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি তিস্তাপারের মানুষের। চরাঞ্চলের অনেক বাড়িতে এখনও পানি জমে আছে। ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। চরে আবাদ করা সব আগাম আলু ও মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে চরের কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসেবে ৫০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। রাজারহাট উপজেলার চর গতিয়াশামের বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন বলেন, এক একর জমিতে আগাম জাতের আলু লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যে বন্যা কবলিত হয়ে ক্ষেতের সব বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষেতের ওপর ৩-৪ ফুট পানি প্রবাহিত হওয়ার পর বালু আর পলি পড়েছে। একই অবস্থা এই গ্রামের জাবেদ, আশকর, আশরাফুল, নূর আলমসহ বহু কৃষকের।
অপরদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে গতিয়াশাম, খিতাবখা, ঠুটাপাইকর, থেতরাই ও বজরা পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। অনেকেই নৌকাযোগে ঘরবাড়ি সরিয়ে এনে রাখছেন রাস্তার ওপর।
রাজারহাট উপজেলার চর গতিয়াশামের বাসিন্দা কাদের মিস্ত্রি জানান, বুধবার রাতে হঠাৎ ঢল আসায় তাদের সব ঘর বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। কোনোমতে জীবন বাঁচিয়ে তাঁরা সরিষাবাড়ির এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই রাতে বাড়িঘর ভেঙে গেছে মিজানুর, সাইদুর, নুরুজ্জামানসহ অন্তত ২০টি পরিবারের। ঘরে মালামাল ভেসে গেছে প্রবল স্রোতে।
রাজারহাট উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুকনো খাবারসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি দুই-একটি বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগেও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখার জন্য রাজারহাটে আসছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত শুক্রবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।