ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় প্রায় ৪ বছরেও শেষ হয়নি পাবলিক লাইব্রেরীর কাজ। ফলে বই পড়ুয়াদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। অপরদিকে লাখ লাখ টাকার মুল্যবান বই ও মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সত্তরের দশকের শেষ দিকে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ এই পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তাঁর নিজ বাড়িতে। তিনি বিভিন্নভাবে বই সংগ্রহ করে হাজার হাজার বই দিয়ে পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করেন। পরবর্তীতে আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান সহিদুল হোসেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হুচ্ছাম চৌধূরী পাঠাগারের জন্য একটি একতলা ভবন নির্মান করে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরের পূর্ব পাড়ে। কসবা- আখাউড়া সড়কের পাশে অবস্থিত এই পাঠাগারটি ছিলো পাঠকদের কাছে জ্ঞান আহরনের কেন্দ্রবিন্দু।
২০১৬ সালে পাঠাগারটি জরাজীর্ণ হয়ে গেলে এর সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা পরিষদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহানারা হক পাবলিক লাইব্রেরি হিসেবে নামকরন করেন। উল্লেখ্য; জাহানারা হক সাবেক সংসদ সদস্য বরেণ্য আইনজীবী মরহুম এডভোকেট সিরাজুল হক’র সহধর্মিনী ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র মাতা। এ ছাড়াও মরহুম জাহানারা হক প্রথিতযশা সাংবাদিক মরহুম আতাউস সামাদের বোন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম এমএসসি ২০১৭ সালের ১০ আগষ্ট একই স্থানে ৫৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দোতলা লাইব্রেরি ভবন নির্মানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এর কাজ। কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করছে এই কাজ তা কেউ কিছু জানেন না। জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির ( পিআইসি) মাধ্যমে টেন্ডার না দিয়েই এই প্রকল্পের কাজ নিজেই করছেন জেলা পরিষদ সদস্য মোশারফ হোসেন ইকবাল। পূর্বের জরাজীর্ণ একতলা ভবনটি ভাংগার আগেই লাইব্রেরির কয়েক হাজার বই ও মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে স্তুপাকারে রাখা হয়। বর্তমানে বইপত্র ও মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য মোশারফ হোসেন ইকবালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আশা করি আগামী একমাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। ঠিকাদার কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের ঠিকাদার কে তিনি জানেন না। ঠিকাদারের নাম জানতে ইঞ্জিনিয়ারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এটিএম রবিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন; লাইব্রেরির কাজের তদারকী করছেন জেলা পরিষদ। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন; পাঠাগারের কাজ জেলা পরিষদের তত্ববধানে হচ্ছে। আমি তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য অনুরোধ করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম এমএসসি বলেন; আইনমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে। সহসাই কাজ শেষ হয়ে যাবে।