ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের গনক মুড়া গ্রামে বিয়ে বাড়িতে দই না পাওয়ায় কনের বাবাকে পিটিয়ে হত্যার মামলাটি অবশেষে আদালতের নির্দেশে পুলিশ ১৯ দিন পর রেকর্ড করলো। তবে একই দিনে আসা ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পাওয়ায় গত সোমবার ( ২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মামলা হিসেবে গ্রহন করেন পুলিশ। ফলে পুরো এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। জানা যায়; স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল পুলিশকে মামলা না নিতে বাধ্য করেছিলো।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর ভ’ইয়া জানান, গত সোমবার নিহত ইকবাল হোসেনের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন আসার পর দেখা গেছে তার আঘাতজনিত কারনে মৃত্যু হয়েছে। একই দিনে আদালতেরও নির্দেশ আসায় নিহত ইকবাল হোসেনের স্ত্রী জোৎ¯œা বেগমের দায়ের করা অভিযোগটিকে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ অক্টোবর নিহত ইকবাল হোসেনের তৃতীয় কন্যা কারিমা আক্তার (২০) এর সংগে পাশ্ববর্তী বিষ্ণাউড়ী গ্রামের দুলাল মিয়ার দ্বিতীয় পুত্র পারভেজ মিয়ার বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। বিবাহের দিন দই খাওয়া নিয়ে বর পক্ষের লোকদের সাথে কনেপক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন ( ৬ অক্টোবর) রাত ১০টার সময় গনকমুড়া হারুনের চায়ের দোকানে কনের বাবা ইকবাল হোসেনকে বিষ্ণাউড়ী গ্রামের মান্নাফ ও হান্নান সর্দারসহ তার লোকজন দুই দফা হামলা করে।
কনের বাবা ইকবাল হোসেনকে একা পেয়ে হান্নান সর্দারের বাড়ির ১৪/১৫ জন লোক এসে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে দেহের অভ্যন্তরে গুরুতর জখম করে। তাকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে পথে ব্যারিকেডও সৃষ্টি করে হামলাকারীরা। একপর্যায়ে বিষ্ণাউড়ী গ্রামে সদ্য বিবাহীত ইকবাল হোসেনের মেয়ে কারিমার স্বামীর বাড়িতেও এসকল দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
পরে গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হরমুজ আলীর সহযোগিতায় সদ্য বিবাহিত কনে কারিমার বাবা ইকবাল হোসেনকে কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় নিহত ইকবালের স্ত্রী জোৎ¯œা বেগম প্রথমে ১৭ জনকে আসামী করে কসবা থানায় একটি হত্যার অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার কথা বলে মামলাটি আমলে নেয়নি।
পরে নিহত ইকবালের স্ত্রী জোৎ¯œা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন। গত ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে আদালতে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক মামলা রুজু নির্দেশ দিলে গত সোমবার সন্ধ্যায় কসবা থানা পুলিশ মামলা গ্রহন করেন। ইতোমধ্যে ময়না তদন্ত রিপোর্টও পুলিশের হাতে এসে পৌঁছে।