শুরুতে খোদার কালাম থেকে একটি আয়াত উল্লেখ করে মূল লিখায় যেতে চায়:“তোমাদের জন্য আমার পরিকল্পনার কথা আমিই জানি; আর তা তোমাদের মঙ্গলের জন্য/ উপকারের জন্য; অপকারের জন্য নয়; বরং সেই পরিকল্পনার মধ্যেদিয়েই তোমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ হবে।” হ্যা তা যেন হয়। খোদার পরিকল্পনামাফিক জীবনেই যেন আমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ হয়। জীবন-মান উন্নয়নে নেয়া পদক্ষেপগুলোতে মাঝে মাঝে ছাড় দিতে হয় বা বৃহত্তর লাভের আশায় ক্ষুদ্র লাভ ত্যাগ করতে হয়। যদি এই আঙ্গিকে পরিচালিত হওয়া যায় তাহলে সফলতা শতভাগ নিশ্চিত। নাহলে উন্নয়নের খোলষে আবৃত হয়ে পরিকল্পনাগুলো মুখ থুববে পড়বে এবং অতিতেও পড়েছে। তাই এখনই সময় ঐ বেড়াজাল থেকে বের হয়ে আসার। নতুনভাবে ভাবার এবং নতুন করে বাস্তবমুখী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার।
আমাদের খেলার মানোন্নয়নে নেয়া পরিকল্পনাগুলো এখন ঠুনকো ও অনধিক পুরোনো যার ফলশ্রুতিতে আজ আমরা বিশ্বদরবারে মলিন চেহারায় আর্ভিবুত হয়েছি। শুধু দেশেই ভাল খেলব এবং দেশের বাইরে গিয়ে মুখ থুবরে পড়ে দেশ ও জাতীকে নিমজ্জ্বিত করব এটা কামনা করা যায় না। বাঙ্গালী বীরের জাতি এবং পেরেছে ও পারবে তাই মুখ বিষন্ন করে মলিন চেহারায় মাথা নিচু করে ঘরমুখো হবো তা মেনে নেয়া যায় না। এখন ভাবার সময় এসেছে সঠিক পরিকল্পনায় পরিধির পরিসর এর ব্যাপ্তি বৃদ্ধীকল্পে এগিয়ে যাওয়া উচিত ও অনুচিতের। সমালোচনা নয় বরং নিজ নিজ অবস্থান থেকে দুর্বলতা এবং অক্ষমতাকে আবিস্কার করুন আর সেই অনুযায়ী আগামীর পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এগিয়ে যান। বিশ্বদরবারে মুজিবীয় গতি ও স্থিতি এবং সম্প্রীতি আর উত্তাল উম্মাদনার জোয়ারে সয়লাভ হয়ে বার বার বাংলাদেশকে সমুজ্জ্বল করুক।
বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নও থমকে আছে মহা পরিকল্পনার বেড়াজালে। নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতায় লাগাম টেনে ধরার লক্ষ্যনেও ধ্বস নেমেছে। তবে পরিকল্পনাই এর জন্য দায়ী। আমাদের ব্যবসায়ীরাও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। মোট কথা লোভ একটি প্রথম সারীর কারণ (ফ্যাক্টর)। তবে লোভ কিন্তু সরকার এবং জনগণ উভয়ই করে। তবে পরিকল্পনায় ঐ লোভকে প্রশমিত করতে না পারলে উধ্বগতির লাগাম টানা সম্ভব নয়। তবে এই লাগাম টানাতে বড় বাধা হলো উন্নয়ন পরিকল্পনা। আর এই পরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িতরা বহুলাংশে ভোক্তভোগি নয় বরং মধ্যম ও নিম্ন সারির জনগণই বেশী নিস্পেষিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। ধরে নেয়া হয় এইটিই বুঝি নিয়তির বিধান। না এইটি নিয়তির বিধান নয় বরং এইটি পুজিবাদের এবং এর শ্রষ্টা ধনিক শ্রেণীর চাপিয়ে দেয়া বিধান। যা সৃষ্টিকর্তার বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এইতো গতকাল সরকার এর নিয়ন্ত্রনাধীন পরিকল্পনাকরীরা ডিজেলসহ কিছু ব্যবহৃত তেল ও গ্যাস জাতিয় তরল পন্যের ব্যবহারকারী বহুলাংশে গরীবের এবং নিম্ন ও মধ্যম স্তরের মানুষের ব্যবহায্যের দাম বৃদ্ধি করেছেন। যা মরার উপর খারার ঘ্যা হিসেবেই পরিগণিত হয়েছে এবং হবে। তবে এই বৃদ্ধির পেছনে খোড়া যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়েছে; যা গ্রহণযোগ্য নয় তবুও গ্রহণ করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। মানুষ ও শ্রেনী -পেশার কথা বিবেচনা করে এমনকি দ্রব্যমুল্য ও কৃষক-শ্রমিকের জীবিকার মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতার কথা মাথায় রেখে এর লাগাম টানা উচিত ছিল। কিন্তু কোন উচিত-ই আর এখন উচিত নয়; এই ভাবলেশহীন ভাব পরিণত হওয়া ভবিষ্যতের জন্য কল্যাণকর নয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ার আগেই সুযোগসন্ধানীরা মুল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনে নাভিশ্বাস তুলেছে। সরকারের পক্ষে ঘোষনা আসার আগেই দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। যুক্তি হলো আগামীকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে মাল পাওয়া যাবে না। তাই মুল্য বৃদ্ধি করলাম। তবে যে মাল এখনও মওজুদ রয়েছে সেই মালের বৃদ্ধি কেন প্রশ্নে কোন জবাব নেই বরং ভাবলেশহীন আচরণ ও চাপিয়ে দেয়ার নীতি প্রয়োগে ব্যতিব্যস্ত। শুধু কি তাই এই প্রভাব কিন্তু ভাম্যমান ভ্যান ও ফেরি করে বিক্রেতারাও দেখিয়ে যাচ্ছে।
এইক্ষেত্রে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের সুবিধা শহরের সকলকে দেয়া হউক এর দাবী জোরালো থেকে আরো জোরালো হওয়ার পথ প্রসস্থ হলো। প্রাকৃতিক গ্যাস এর উপর চাপ কমিয়ে এলপিইজিতে রুপান্তরিত গাড়িগুলো পুনরায় প্রাকৃতিক গ্যাসে ফিরে যাওয়ার পথ প্রসস্থ হলো। এতে প্রতিয়মান হয় যে, কোন পরিকল্পনায় স্থায়ী নয় এবং স্থায়ী সমাধানে কার্যকর নয়। তাই খোদার পরিকল্পনার দিকে অগ্রসর হতে উৎসাহিত এমনকি ধাবিত হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা উকি দিচ্ছে। পৃথিবীর শেষ সময়ে এসে আরো কি কি প্রত্যক্ষ করব তা সাধারণে অনুভব করা সম্ভব নয়। তবে খোদার ইচ্ছায় এবং অভিপ্রায়ে এগুলে হয়ত প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হবে।
পরিবেশবিদসহ বিশ্ববাসী যে পরিবেশ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তার সুফল এখনও ঘরে উঠেনাই এমনকি উঠার কোন সম্ভাবনাও পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। তবে আশার বানি হলো এই নিয়ে সময় নষ্ট ও পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে কতকের জীবনের মূল্যবান এমনকি কঠিন ও কঠোর সময় পার হচ্ছে; এটাইবা কম কি। আশা দেখছি এবং রাখছি তবে সৃষ্টিকর্তার সহযোগীতা কামনা করে সেই আশায় ভরসা পাচ্ছি। ঠিক একইরুপে বলতে হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ূ সম্মেলন এর সফলতা নিয়ে। আমরা আশা দেখেছিলাম এবং নিরপরাধ হিসেবে অন্যের আক্রমনের স্বীকারে উষ্ণতা ভোগ করে জীবনের সমাপ্তি টানছি এবং টানতে হচ্ছে। তবে বিশ্ব মোড়লেরা ঐ পরিকল্পনায়-ই গলদ করে রেখেছে। তবে ঐ পরিকল্পনা এবং মিটিং মিছিল ও জড়ো হয়ে লোকদেখানোর কাজটুক সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছে। তবে মূল পরিকল্পনার বাস্তবায়নে নেয়া পদক্ষেপে ফারাক লক্ষ্য করা যাচ্ছে এমনকি প্রতিশ্রুতি পালন না করে কথার ফুলঝুড়িতে রূপদান করে যাচ্ছে। তবে কার কাছে এর প্রতিকার চাওয়া যায় এবং যাবে এইটা ভেবে দেখার এখন সময় এসেছে।
স্বীকারে পরিণত হওয়ারা যতবারই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে এগিয়ে যাচ্ছে ততবারই অপরাধিরা এর অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে এমনকি অপরাধ বোধ থেকে বের হয়ে এসেছে। সবই অক্ষমতার আবরণে প্রত্যক্ষ করে নিরবে নিবৃত্তে ঘোমরে মরছি এই ভাবেই জয় ছিনিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যাক সবই দৃশ্যমান এবং সরকারের আন্তরিকতার কোন কমতি বা ঘাটতি নেই বরং সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দৃশ্যমান বাস্তবতা প্রকাশ করে যাচ্ছে তবে এর মধ্যে ধৈয্য এবং শহ্যগুনেরও প্রকাশ বিদ্যমান রয়েছে। তবে অসহায়ত্বের মাঝেও আশার বানি প্রতিবারের ন্যায় এবারও শুনার প্রহর গুনছি এবং ব্যবসায়ী উন্নয়ন ও ফায়দা হাসিলের আশা জিইয়ে রেখে আগামীর শুভকামনা প্রত্যাশা করছি।
এত প্রতিকুলতায় কোথায় এখন আম জনতার আশ্রয়? আশ্রয়ের নেশায় আম জনতা আজ দিশেহারা এবং সেই দিশেহারা ভাবের নতুন এক প্রতিচ্ছবি হলো বর্তমানের টিকে থাকা। তাই টিকে থাকতে সর্বস্ব খুইয়ে এখন উপরওয়ালার দিকে তাকিয়ে দিনাতিপাত করে যাওয়াই মুখ্য বিষয়। কারণ তাঁর কাছেইতো ফিরে যাব আর তিনিইতো আমাদের মালিক। তাই মালিকের স্মরণাপন্ন হওয়াই এখন গতিহীনের গতি। আর তাঁর কাছে ফিরে যাবার আকুতিই এখন একমাত্র উপায়। আসুন আমরা খোদার পরিকল্পনায় মনযোগী হই এবং খোদার সান্নিধ্যে জীবনের বাকি কয়টা দিন কাটিয়ে তাঁর কাছে শান্তিতে ফিরে যাই। এই প্রত্যয়ে এবং বিশ^াসে বলিয়ান হয়ে পৃথিবীর কঠোরতা ও কঠিনতম সময়গুলি পার করি এমনকি মোকাবিলা করি। এই প্রত্যাশায় শুভকামনা রইল।