প্রয়োজন ও অপ্রয়োজন

সময়ের প্রয়োজনে সবকিছুই বদলায় কিন্তু বদলায় না শুধু আমাদের ঘুণেধরা রাজনীতি। সময়ই আমাদেরকে আগামীর করনীয় সম্পর্কে শিক্ষা দেয় কিন্তু এই সময় থেকে শুধু রাজনীতিবিদরাই শিক্ষা নেয় না। তাই মনে কষ্ট নিয়েই এই কথাগুলো বলতে বা লিখতে হচ্ছে। যুগ পাল্টায় কিন্তু মত ও পথ পাল্টায় না। মতভেদ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ থাকতে পারে; তার অর্থ এই নয় যে, দেশের তরে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত হবো। ব্যক্তির প্রয়োজনে দেশের ও দশের বারোটা বাজাবো; তা কি হয়! কিন্ত হয়েছে বটে। এই হলো বর্তমানের হালচাল। তবে ভাবতে ও বলতে কষ্ট হচ্ছে যে, গত ১৫বছর যাবত শুধু একটিই কথা শুনতে হচ্ছে বা দেখতে হচ্ছে যে, নেতা ও নেত্রীর প্রয়োজনীয়তা এবং তাদের নি:শর্ত মুক্তি এবং ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন কৌশল। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ষড়যন্ত্র কিন্তু যুগের দাবীর কাছে হার মেনেছে আর তাই তারা এখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জেল ও পলাতক অবস্থানে থেকে রাজনীতির মাঠ ফাকা করে দিয়েছে যেন অন্যরা ঐ ফাকা স্থান দখল করে নতুন আঙ্গিক সময়ের প্রয়োজনে নতুনের আহবানে যাগান্তকারী ও যুগোপযোগী হয়ে উঠতে সক্ষম হতে পারে। কিন্তু আমাদের ঐ পুরোনো সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার কোন সুযোগ কি আর অবশিষ্ট নেই? হঁ্যা আছে তাহলে হচ্ছে না কেন? এইসকল প্রশ্নের উত্তর এখন জনসম্মুখ্যে।
আসা যাক চলমান অনেক সংকট ও উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনার এমনকি পরামর্শের ও নির্দেশনার অথবা গভেষণালব্দ ফলাফলের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দ্যশ্যমানতায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে একদল বা সরকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে মরিয়া আর একদল মুক্তি বা বেকসুর খালাস অথবা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার আশায় মরিয়া। কিন্তু এইহেন চেষ্টায় দেশের বা জনগণের এমনকি দলের কল্যাণে কোন পদক্ষেপ নিয়েছে বা নেয়ার কোন শুভ লক্ষণও এই ১৫ বছরে প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হয়নি। তবে দলের বারোটা বাজিয়ে এখন নিজের বারোটার শেষ প্রখরে ক্ষণ গুণছে আর ক্ষোভ ও যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরাচ্ছে। এই কাতরানোর শেষ পরিণতি কি হতে যাচ্ছে তাই দেখার বিষয়। তবে সময়ের শ্রোতে ভেসে গিয়ে বিলিন বা সলিল সমাধির স্তুপে নিশ্চিন্ন হওয়ার শেষ বাশি বেজে যাচ্ছে। দেশের কৃত্তিম বা মনুষ্য সৃষ্টি অথবা আন্তর্জাতিক চক্রান্তের সৃষ্টি বিভিন্ন সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং হবে কিন্তু সেইসব সংকট কাটিয়ে উঠার মোকাবেলার প্রস্তুতিতে নেই কোন ভুমিকা বা ইতিবাচক কোন প্রতিক্রিয়া। কিন্তু নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং দোষারোপের রাজনীতি চর্চা অব্যাহত রেখেছে ্এমনকি সরকারের নেয়া পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গতিরও নেই কোন দৃষ্টিভঙ্গির ঐকান্তিকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আছে শুধু দলীয় প্রধানের মুক্তি, চিকিৎসা এবং দলের উত্তরসূরীর চাপিয়ে দেয়া বিভিন্ন দিকনির্দেশনার প্রতিচ্ছবি। তবে জন্মিলে মরিতে হইবে এবং ক্ষমতা দখল, পদ অলংকরণ এইসকল সাময়ীক সময়ের জন্য আসবে এবং ছেড়ে যাবে; এটাই হলো প্রকৃতির নিয়ম। এটাকে কেউ চিরস্থায়ীভাবে আকড়ে ধরে থাকার বা রাখার কোন সুযোগ নেই। যা ইতিহাস; ঐতিহ্য এবং সময়ের বাস্তবজ্ঞান থেকে এমনকি অতিত ও বর্তমানের বিশ্লেষনে ভবিষ্যতের করনীয়তে উপলব্দি, অনুধাবন এবং অনুমান করে বুঝা যায়। এক কথায় পাগলেও আপনা বুঝ বুঝে এবং সুদুরপ্রসারী চিন্তার ছাপ পরিকল্পনায় আটে। কিন্তু ব্যতিক্রম হলো শুধু আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বেলায়। তবে এই ক্ষেত্রে যারা সময়কে বুঝে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে জানে এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির চর্চায় নিমঘ্ন থাকে তাদেরকে দেখে শিখার অনুরোধ রইল। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সঙ্গে জাতির ভাঙ্গাকাশের পরিবর্ত হয় তবে এতে দুটো দিক থাকে এক ইতিবাচক আর দুই হলো নেতিবাচক। এই দুটোর কোনটি এখন বর্তমান তা আমাদের সকলেরই জানা। এই ইতিবাচক দিকগুলিকে ধারন ও লালন পালন করার এখন উর্বর সময়। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে আগামীর প্রয়োজনে নিজের, পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের এবং রাজনৈতিক দলের জন্য কিছু একটা করার সময়ও এখনই। তাই কাজে নেমে পড়–ন এবং দেশের প্রয়োজনে জনগণের কল্যাণে ভুমিকা রাখতে সংঘবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যান।
সংসদে বসে একটি তসবি নিয়ে জপনা জপার দিন শেষ। দেশের মানুষ আইন আদালত এবং কলা কানুন জানে এবং বর্তমান মিডিয়ার কল্যাণে মানুষের চোখ ফাঁকি দেয়ার দিন প্রায় শেষ। মিথ্যা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পায়তারা এখন প্রায় মৃত আর সত্যের ধর্মানুযায়ী প্রকাশিত হওয়ার দিন এখন স্বাভাবিকের চেয়ে গতিশীল। তবে মানব মনের কোণে লোকানে বিভেক এখনও জাগ্রত; তাই সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলার সাহস ও সুযোগ উভয়টাই একসঙ্গে কাজ করছে। নামোল্লেখ না করে পারছি না; এজন্য ক্ষমা প্রার্থী— জনাব ফারহানা রুমিন এবং বিএনপির কতিপয় সংসদ যে ভাষায় এমনকি মিথ্যা নাটকের অভিনয়ে মানুষ মন গলাতে চাচ্ছেন তা সঠিক নয় বলে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আর ঐ বহু আগে প্রত্যাখ্যাত হওয়া বিষয় নিয়ে বার বার ঢুল পিটানো মানুষতো নয়ই বরং বাকস্বাধীনতাবিহীন ইট পাথরও সহ্য করবে না। তাই অনুরোধ করছি আর পিছনের গন্ধযুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা না করে বরং আগামীর কল্যাণের তরে বহু বিতর্কীত বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং গঠনমূলক সমালোচনা এমনকি দিকদর্শন উপস্থাপন করে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনে মনোনিবেশ করুন। নতুন আগামীতে আপনারাও ে¯্রাতের এবং ভাটার টানে গহীন তলে তলিয়ে গিয়ে বিএনপি নামক কফিনে শেষ পেরেকটুকু মারবেন। তবে সময় এখনও আছে এবং এই সময়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে শিক্ষা ও দিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আর ইতিহাস হিসেবে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার। তাই ভাবুন এবং উপযুক্ত কাজে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নেমে পড়ৃন। একটি বিষয় বড়ই বিব্রতকর যে, একজন ব্যক্তিকে আক্রমন করা যেমন এক মাননীয় আইনমন্ত্রী ও দ্বিতীয়তম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন ও আইনের উদ্ধে তুলে বিব্রত করা। বন্ধ করুন এই সকল কুটকৌশল এবং নোংরা খেলার। একজন চোর নিজের মত সবাইকেই মনে করেন আর একজন ডাকাত তারমত করে সবাইকেই ভাবেন। তেমনি আপরাও আজ এ চোর এবং ডাকাতের মত একই কাজটুকুই করছেন। বের হয়ে আসুন ঐ নোংরা এবং পরিত্যাক্ত খেলা থেকে; যা অনেক আগেই বিসর্জিত হয়েছে এবং আগামীতে আর মানবকুলে জীবনে, কর্মে এবং নিতীতে স্থান হবে না। সংসদকে সংসদের রীতি ও নীতির আলোকে আর দেশের কল্যাণের তরে ব্যবহৃত হতে সুযোগ করে দিন আর প্রত্যেকে স্ব স্ব ভুমিকা পালন করে সংসদের মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহযোগীতা করুন। এখন সময় এসেছে প্রয়োজন ও অপ্রয়োজনকে আলাদা করার। প্রয়োজনের তাগিদে কথা বলার এবং কাজ সম্পন্ন করার। অপ্রয়োজনীয় বিষয়াবলীতে মনোনিবেশ না করার। এখন সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর এই সময়কে নষ্ট করার কোন সময় নেই; তাই সময়কে প্রয়োজনানুযায়ী ব্যবহারে মনোনিবেশ করুন।
এই সময়ে বলতে হচ্ছে ঢাকায় নতুন করে যানযটের কারণের গভীরে কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত হোন্ডা। এই হোন্ডা সেবার মানোন্নয়নে এখনই কাজ করা প্রয়োজন। নতুবা হোন্ডা চক্রে জীবনে নাভিশ্বাস উঠবে, প্রাণহানী ঘটবে, সমাজে ও রাস্তা-ঘাটে বিশৃঙ্খলা বিরাজমান থাকবে। তাই সময় থাকতে এই সমস্যার আশু সমাধান জরুরী হয়ে পড়েছে। পরিবহন সেবা গতিশীলতা আনয়নে কাজ করতে এখনই কঠোর এবং কঠিন পদক্ষেপে আগাতে হবে। তবে এতে করে যাতে নতুন কোন সমস্যার উদ্ব্যব না হয় সেইদিকেও নজড় দিতে হবে। ভাস বাড়া, গাড়ির সংখ্যা, সিএনজি, এলপিইজি, পেট্টোল, ডিজেল এই সংখ্যা উল্লেখ এবং ভাড়া পুননির্ধারণ করে শ্রমীক মালিক এবং জনগণের সমন্বয়ে সু সম্পর্কের যোগসূত্র স্থাপন করে আগামীর কল্যাণ সাধন নিশ্চিত করে চলমান রাখতে হবে। তবে বিআরটিসিকে বিকল্প হিসেবে ভাবা যায় কি না সেটাও খতিয়ে দেখে শহর সেবার মানোন্নয়ন করা প্রয়োজন। যেহেতু বিআরটিসি বর্তমানে লাভবান প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে সেইহেতু এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই শহর সেবা সার্ভিসের চাকা সচল করে জনঅসন্তুষ এমনকি অস্বস্তি দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে। কারো উপরে দায় না চাপিয়ে নিজের উপর দায় নেয়ার ব্যবস্থায় মনোনিবেশ করার সময় এখন তাই সময়কে উপযুক্তভাবে কাজে লাগান। এইক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার স্মরণাপন্ন হয়ে তাঁর ক্ষমা, সততা, ন্যায়পরায়নতা এবং ভালবাসার উৎসস্থলে পরিণত হয়ে চলমান কাজকে আরো গতিশীল করে খোদায়ী স্থীতিশীলতা ও নিশ্চয়তার বিধান বিরাজমান রাখুন। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে সহায়তা করুন এবং তাঁর দেয়া প্রতিটি দায়িত্ব এবং জ্ঞান ও গুণ ব্যবহারে পরিপূর্ণতা দান করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.