গাজীপুরে রাস্তার পাশে মা-মেয়ের গলা কাটা লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর   \   গাজীপুর মহানগরীর দেশীপাড়া এলাকা থেকে মা-মেয়ের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলো- গাজীপুর সদরের খুদে বরমী গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম (২৮) ও তাঁর মেয়ে তাছমিয়া আক্তার (৪)। ফেরদৌসী স্বামীর সঙ্গে শহরের উত্তর হাড়িনাল এলাকার সেকান্দর আলীর বাসায় ভাড়া থাকতেন। গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স কম্পানির গাজীপুর চৌরাস্তা শাখার ফিল্ড সুপারভাইজার ছিলেন তিনি।

পাওনা টাকা দিতে তাঁকে ফোন করলে শিশুসন্তানকে নিয়ে গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সৈয়দ রাফিউল করিম বলেন, দেশীপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে এক নারী ও শিশুর গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা রাত  সাড়ে ৯টার দিকে থানায় খবর  দেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে লাশ দুটি উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। শিশুটির গলার সামনের দিকে এবং ওই নারীর গলার দুই পাশ কাটা ছিল। 

বোন ও ভাগ্নির শোকে হাসপাতালের সামনে গত বৃহস্পতিবার বিলাপ করছিলেন নিহত নারীর বড় বোন রোকসানা আক্তার। তিনি জানান, ফেরদৌসীর প্রথম বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর বাসিন্দা বাসচালক জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে। তিন বছর আগে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়। ওই সংসারে হাফছা আক্তার (১১) ও তাছমিয়া আক্তারের জন্ম। তারা মায়ের সঙ্গেই থাকত। পরে ফেরদৌসী বিয়ে করেন রবিউলকে। বুধবার রাত ৩টার দিকে পুলিশ ফোন করে মর্গে আসতে বলে আমাদের। পরে তিনি ও তাঁর বড় ভাই ইজ্জত আলী মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।

বড় মেয়ে হাফসা আক্তারের বরাতে স্বজনরা জানান, নিজ থেকে টাকা দিয়ে কালীগঞ্জের শালদিয়া এলাকার জাহিদ নামের এক ব্যক্তির বীমা করে দিয়েছিল ফেরদৌসী। কথা ছিল ওই টাকা এক সপ্তাহ পর দিয়ে দেবেন জাহিদ। কিন্তু দেই-দিচ্ছি বলে দুই-তিন মাস ধরে ঘোরাচ্ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে জাহিদ টাকা দেবে বলে ফেরদৌসীকে ফোন করে বাইরে যেতে বলে। ছোট মেয়েকে নিয়ে বের হওয়ার আগে বড় মেয়েকে ফেরদৌসী বলে যান, ‘টাকা নিয়ে আধাঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসবেন।’

ফেরদৌসীর সহকর্মী আকলিমা বেগম জানান, এক বছর আগে ফেরদৌসী বীমা কম্পানিতে যোগ দেন। বুধবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাঁরা একসঙ্গে অফিসে ছিলেন, মিটিং করেছেন। অফিসের সবার সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার জাকির হাসান বলেন, ফেরদৌসী বেগমের দ্বিতীয় স্বামী রবিউল ইসলাম ও বড় মেয়ের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। খুব শিগগির খুনের রহস্য উদঘাটন করে জড়িতদের আটক করা হবে।

এ ঘটনায় গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত মামলা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.