কলাপাড়া ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত লাগোয়া বারবিকিউ মার্কেটের একটি দোকানে দেখা মিলছে বড় আকারের নীল রঙের একটি কাঁকড়ার। বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পরা এই নীল রঙের কাঁকড়াটির ওজন প্রায় এক কেজি। গত মঙ্গলবার বিকেলে সামুদ্রিক নীল কাঁকড়াটি মো. বেল্লাল হোসেন নামের মার্কেটের এক দোকানি জেলেদের কাছ থেকে কিনে তাঁর দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন। কুয়াকাটায় এই প্রথম নতুন প্রজাতির নীল রঙের কাঁকড়ার দেখা মিলল। কাঁকড়াটি দেখতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। অনেকে এর ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আবার অনেকে এটি কোন প্রজাতির কাঁকড়া এবং এর নাম জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বেল্লাল হোসেন বলেন, কাঁকড়াটি দেখতে সুন্দর। প্রজাতিটিও নতুন। এর ওজনও প্রায় এক কেজি। এক জেলের কাছ থেকে তিনি ৮০০ টাকায় কাঁকড়াটি কিনেছেন। পরে বিক্রির জন্য দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন। অনেক পর্যটক এসে কাঁকড়াটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অবশেষে গতকাল বুধবার রাতে এক পর্যটক ৯০০ টাকা দিয়ে কাঁকড়াটি কিনে নেন।
বরিশালের মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি বø্যাক মাড কাঁকড়া। এটি কাঁকড়ার একটি প্রজাতি, যা এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং আফ্রিকার মোহনা ও ম্যানগ্রোভ অঞ্চলগুলোতে পাওয়া যায়। এটি সিলা সেরাটা, ম্যানগ্রোভ ক্রাব, বø্যাক ক্রাব, সিরাটেড সুইমিং ক্রাব, জায়ান্ট মাড ক্রাব, ইন্দো–প্যাসিফিক সোয়াম্প ক্রাব, এডিবেল মাড ক্রাব ইত্যাদি নামেও পরিচিত। বø্যাক মাড কাঁকড়ার প্রাকৃতিক পরিসর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে। এটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারত মহাসাগরের উপকূল থেকে মালয় দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত পাওয়া যায়। বøাক মাড কাঁকড়ার ক্যারাপেস মসৃণ, শক্তিশালী ট্রান্সভার্সাল রিজসহ। একটি গভীর এইচ আকৃতির খাঁজসহ ক্যারাপেসের ওপর গ্যাস্ট্রিক জোন বিদ্যমান। এদের প্রতিটি অ্যান্টেরোলেটাল মার্জিনে প্রশস্ত দাঁত রয়েছে, এদের সব কটিই একই আকারের এবং তির্যকভাবে বাইরের দিকে প্রক্ষেপিত।
ওজন ও আকৃতি: এই প্রকারের কাঁকড়ার গড় প্রস্থ ২৪ সেমি. পর্যন্ত হয় এবং সাড়ে তিন কেজি পর্যন্ত ওজনে হয়ে থাকে। খাদ্যাভ্যাস: বø্যাক মাড ক্রাব কাঁকড়া খুব কমই উদ্ভিদ উপাদান ও মাছ খায়। প্রজনন: কাঁকড়াগুলো প্রজননের জন্য উপকূলে চলে যায়। এসব কাঁকড়া সাধারণত পরিণত হয়, যখন তারা প্রায় ৯ সেমি. ক্যারাপেস প্রস্থে পৌঁছায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এরা জীবনের প্রথম বছরের মধ্যে পরিপক্ক হয়ে ওঠে। বø্যাক মাড প্রজাতির কাঁকড়া এই অঞ্চলে তেমন একটি দেখা যায় না।