ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামে গত রবিবার সন্ধ্যায় পরকীয়ার জের ধরে প্রেমিকার বাড়ির সামনে মদ ও বিষপান করে কামরুল হাসান (২২) নামে দুই সন্তানের জনকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবী কামরুলকে পিটিয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করেছে ধজনগর গ্রামের কতিপয় যুবক।
কসবা পৌর এলাকার আকবপুর গ্রামের ছিরন মিয়ার পুত্র অটোরিস্কা চালক দুই সন্তানের জনক কামরুল হাসানের সংগে একই উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী ধজনগর গ্রামের রুমা বেগম (২৬) নামক এক মহিলার পরকীয়া ছিলো। রুমা ধজনগর গ্রামের ইমন ভ’ইয়ার স্ত্রী।
ছিরন মিয়া জানান, তার পুত্র গত রবিবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে রুমার ফোন পেয়ে ধজনগর চলে যায়। গত দুই বছর যাবত রুমার সংগে তার সম্পর্ক। গত দু’বছরে সে কয়েক লাখ টাকা নষ্ট করেছে। রাত নয়টার ধজনগর থেকে ফোন পায় তাকে মারধোর করে রুমার বাড়ীর পাশে ফেলে রেখেছে কে বা কারা। আমি রাতেই ধজনগর যাই। সেখানে যাওয়ার পর তাকে পাইনি। পরে জানতে পারি বাবুল মিয়া নামক এক শিক্ষক তাকে হাসপাতালে ফেলে চলে যেতে চায়। তখন আমার মেয়ের জামাতাসহ কামরুলকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এখন রুমার পরিবারসহ ধজনগর গ্রামের লোকজন বলছে সে বিষপান করেছে। আমার ছেলে বিষপান করেনি। তাকে পিটিয়ে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে।
রুমা এ প্রতিবেদককে জানান, আমি তাকে বহুবার বলেছি আমার স্বামী ও সন্তান রয়েছে তুমি সরে যাও। কিন্তু সে কিছুতেই কথা শুনেনি। গতকাল রাতে আমাদের বাড়ির পাশে দেখতে পাই সে পরে আছে। পরে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সানু মিয়া জানান, রাতে আমরা ভারতীয় ছেলেদের মুখ থেকে জানতে পারি যে মদও খেয়েছে আবার বিষও পান করেছে।
গ্রামের আছিয়া খাতুন নামে এক বৃদ্ধাসহ একাধিক মহিলা জানান, গতকাল বিকেলেও কামরুল থেকে টাকা নিয়ে রুমা এলাকার জয়নগর বাজার থেকে বাজার করেছে। তখন কামরুল রুমার ঘরেই ছিলো। রুমার স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। রুমার নিজের সন্তান না থাকায় একটি সন্তান দত্তক হিসেবে লালন পালন করছেন।
কসবা থানা ওসি (তদন্ত) মো.হাবিবুর রহমান জানান, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির জন্য দুজন অফিসারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার একজন সাব ইন্সপেক্টর রয়েছেন। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে নিহত কামরুলের বাবা ছিরন মিয়া জানান, তিনি এ ঘটনায় রুমা সহ ৭জনকে আসামী করে কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার দাবী তার পুত্রকে পিটিয়ে আধমরা করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে।