আন্তজার্তিক ডেক্স ॥ তালেবান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার কাছাকাছি চলে এসেছে বলে দাবি করেছেন আফগানিস্তানের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেন আফগান তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নরওয়ের অসলোতে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা থেকে ফিরে আসার পর আমির খান মুত্তাকি কোনো সংবাদমাধ্যমকে প্রথম সাক্ষাৎকার দিলেন।
তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত রয়েছে বলে সাক্ষাৎকারে জানান তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আফগানিস্তানের মানবিক সংকট প্রশমনে সহায়তার জন্য দেশটির জব্দ সম্পদ অবমুক্ত করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০ বছরের বিদেশি দখলদারির পর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে গত বছরের মধ্য আগস্টে দেশটির ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। ক্ষমতা দখলের পর গত সেপ্টেম্বরে সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় তালেবান। কিন্তু তালেবানের এ সরকারকে বিশ্বের কোনো দেশ এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।
আমির খান মুত্তাকি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, আফগানিস্তানের নতুন শাসকগোষ্ঠী ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করছে। তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্বীকৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়ায়…আমরা সেই লক্ষ্যের কাছাকাছি এসেছি।’ আমির খান মুত্তাকি বলেন, ‘এটা (স্বীকৃতি) আমাদের অধিকার, আফগানদের অধিকার। এ অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’ গত মাসের শেষ দিকে অসলোতে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন আফগান তালেবানের সদস্যরা। আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই প্রথম ইউরোপের মাটিতে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করল তালেবান।
তিন দিন ধরে চলা অসলো আলোচনায় আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও মানবিক সংকটের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। অসলো আলোচনার বিষয়ে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানিকেন হুইটফেল্ড বলেছিলেন, এ বৈঠক তালেবানকে বৈধতা দেওয়া বা স্বীকৃতির প্রতিনিধিত্ব করে না। তবে তাঁদের অবশ্যই আফগানিস্তানের কার্যত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশের সরকার সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় যুক্ত আছে। বিষয়টি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে তালেবানের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। আমির খান মুত্তাকি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। এ ক্ষেত্রে আমাদের ভালো অর্জন আছে।’ তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য, বেশ কয়েকটি দেশ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দূতাবাস পরিচালনা করছে। শিগগিরই আরও দেশ দূতাবাস খুলবে বলে তাঁরা আশা
করছেন। আমির খান মুত্তাকি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, কিছু ইউরোপীয় ও আরব দেশ দূতাবাস খুলবে।’