প্রশান্তি ডেক্স ॥ সরকার দেশে লুটপাটের অর্থনীতি চালু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখানে দুর্নীতির অর্থনীতি বললে ছোট করা হয়, একেবারে ডাকাতির অর্থনীতি চালু করেছে। অথচ এরা সারাক্ষণ উন্নয়ন উন্নয়ন বলে চিৎকার করছে। মনে হয় যেন গোটা বাংলাদেশকে তারা সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান কমিটির কার্যক্রমেরও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ফাঁদে জনগণ আর পা দেবে না।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচক ১৭ ধাপ নিচে নামার তথ্য জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকেই পত্রিকায় এসেছে। হেরিটেজ ফাউন্ডেশন আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে, তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার বিষয়ে জরিপ করেছে। সেখানে তারা বলেছে, ১৭৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ১৩৭তম স্থানে, যা ২০২১ সালে ছিল ১২০তম।’
এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই যে সূচক নিচে নামছে, ক্রমান্বয়ে নামছে। কারণ, তারা (সরকার) অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে প্রথমে জনগণের রাজনৈতিক স্বাধীনতা হরণ করেছে। এরপর তারা মানুষের অধিকারগুলো, মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। এখানে একটা লুটপাটের, একেবারে ডাকাতির অর্থনীতি চালু করেছে। এই যে দুর্নীতি, এটা তাদের মজ্জাগত। এটাকে তারা অপরাধ মনে করে না, মনে করে এটাকে তারা অধিকার। এসব লুটপাট হচ্ছে তাদের কাছে উন্নয়ন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ চাল-ডাল-তেল-লবণের দাম যে হারে বেড়েছে, কোনো স্বাধীন দেশে এভাবে চলতে পারে না। এটা তো পুরোপুরিভাবে ভেনেজুয়েলা বা নাইজেরিয়ার মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছে। যেখানে অপচয়, অপব্যবহার, দুর্নীতির কারণে এই দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের অনুসন্ধান কমিটির কার্যক্রমের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এরা (সরকার) গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। খুব কথা বলতে শুরু করেছে কয়েক দিন আগে, আমরা সার্চ কমিটিতে নাম দিইনি কেন?’ অনুসন্ধান কমিটির কার্যক্রমকে ‘জনগণের সঙ্গে চরম প্রতারণা’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত নির্বাচনগুলোতে দেখেছি, একইভাবে তারা তাদের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য নিজেদের লোকজনকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন তৈরি করে। আমি অত্যন্ত পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই দেশের জনগণ আর সেই ফাঁদে পা দেবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন নতুন করে সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটি জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। রচনা প্রতিযোগিতায় ১২ স্তরে ১২টি বিষয়ের ওপর রচনা প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে ১৭ জন এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ৭৯ জন বিজয়ী হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার। কমিটির সদস্যসচিব এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির সদস্যসচিব আবদুস সালাম।