মার্চের সেই উত্তাল দিনগুলোতে ফিরে যেতেই কি বিশ্ব আজ উত্তাল। তবে যদি এই উত্তাল হাওয়া আমাদেরকে মার্চের অগ্নীমূর্তী বহনে সক্ষম করে তুলতে পারে তাহলে খুবই ভাল; কারণ এর পরেই আছে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পদচারন। ইতিহাস আমাদেরকে এই শিক্ষা দেয়। মার্চের সেই দিনগুলোর পরই আমরা পেয়েছিলাম আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ এবং বর্তমানের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি। তবে বর্তমানের উত্তালময় বিশ্ব কি পারবে ফিরিয়ে আনতে সেই হারিয়ে ফেলা শান্তি ও স্থিতিশীলতা যা আমাদের সৃষ্টি পরের সৃষ্টিকর্তার অভিব্যক্তি প্রকাশিত চমৎকারিত্ব। এককথায় মানুষের হারিয়ে ফেলা সেই চমৎকারিত্ব কি ফিরে আসবে? বিশ্বের হারিয়ে ফেলা চমৎকারিত্ব কি ফিরে আসবে? প্রশ্ন এখন সকলেরই দৃষ্টিসীমায়; কেউ ভাবতে পারে, কেউ বুঝতে পারে, আবার কেউ কেউ অগ্রীম দেখতে পায়, কেউ কেউ বলে ফেলে বিভিন্ন উপায়ে। সেই বুঝতে পারা মানুষদের কাছ থেকে পরামর্শ, শিক্ষা, দিক্ষা নেয়ার ফারাক লক্ষ্য করা যাচ্ছে তবে ছোটবেলায় মুরুব্বীদের কাছ থেকে একটি জনপ্রীয় কথা শুনে আসছিলাম যে, “ঠেকলে তিনমাথার কাছে যেয়ো”। আর এখন আল্লাহর কালাম পর্যবেক্ষন ও পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই সৃষ্টিকর্তা অনেক আগেই এই কথা বলে রেখেছিলেন যে, “কোন প্রকার সন্দেহ হলে বা অবিশ্বাস হলে পুর্ববর্তী কিতাবধারীদের কাছে যেয়ো এবং সমস্যা সমাধান করে নিয়ো” তিনি আরও বলেন; “মুরুব্বীদের কাছ থেকে সমাধান বা পরামর্শ অথবা উপদেশ নিয়ে সামনে এগোবে”। এখানে প্রশ্ন হলো আগামীর কল্যাণের তরে কে কে কাজ করছে এবং করবে সেই বিষয়টি এখন গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে, নিত্যপন্যের বাজারে উত্তাল হাওয়া কিন্তু শুভ নয়। বাংলার মানুষ কিন্তু বর্তমানে ফুসে উঠেছে এবং শুধু সময়ের ও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে এমনকি যে কোন সময় ফুসে উঠতে পারে। তবে বাংলার মানুষ দিনে দিনে ভুল পথে এগুনোর সাহস পাচ্ছে এমনকি ভুল পথ বেঁছে নেয়ার জন্য সরকারের অধিনস্তজনরাই সাধারণ ও নিরিহ জনগণকে ঠেলে দিচ্ছে। জনতার রোষানল থেকে বেচেঁ থাকার বা বাঁচানোর জন্য সরকারের কোন এজেন্সিই দায়িত্ব নিবে না এমনকি অতিতেও নেয়নি আর ভবিষ্যতেও নিবে না। সরকারের সকল উন্নয়ন ও সফলতা ভেস্তে দিতে মরিয়া এখন বিরোধী দল এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারের উচ্চাবিলাসী ভোগকারী লোকজন। তাদের ইচ্ছা আকাঙ্খা পরিপূর্ণ করতেই তারা বিভিন্ন বেসামাল কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে এমনকি নিত্যপন্যের বাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে; এই আগুনের সামনেই সরকার বিরোধীরা সুযোগ নিতে চাইছে। তাই সরকার এবং জনগণের মধ্যে তৈরী দূরত্ব ঘুচানোর সময় এখন। নতুবা নতুন অশনি সংকেত অপেক্ষা করছে। সরকার চেষ্টা করছে সকলের জন্য কিন্তু এই চেষ্টায় বৈষম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে তাই সরকারকে এখন ভাবতে হবে এবং বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করতে হবে। সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের চাহিদার অতিরিক্ত প্রাপ্য পাওয়ার পরও আরো চাচ্ছে এবং ভাগিয়ে নিচ্ছে কিন্তু জনগণ কি পাচ্ছে? বর্তমান সাধারণ জনগণের প্রাপ্তীর জায়গাগুলোতে আগুন দাও দাও করে জ্বলছে কিভাবে ঐ আগুন নিভাবে সেই পথে হাটার পথ খুঁজতে হবে। তৈলসহ নিত্যপন্যের দাম যা সাধারণ জনগণ সরাসরি যুক্ত ঐসকল জায়গাগুলোকে সহনশীল পর্যায়ে আনতে হবে। কারণ সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদার যোগান দিতে সবই পাচ্ছে এবং আরো পাওয়ার নিশ্চয়তা করে নিচ্ছে। কিন্তু জনগণ ঐ জায়গাতে শুন্যের কোটায় রয়েছে এবং এই নিত্যমূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে ভুল পথে এগিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন দ্বীগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে আর জনগণের নিত্যপন্যের মূল্য বৃদ্ধির ব্যবস্থা সমান তালে পাচ্ছে তাই এই দুইয়ের ফারাক দুরীকরণের ব্যবস্থা আশু করনীয়।
আসছে রমজান মাস আর ঐ আগমনের পূর্বেই মুল্যবৃদ্ধিতে আগুন ধাও ধাও করে জ¦লছে কিন্তু সামনে কিন্তু আরো আগুনে ঘী ঢালার ব্যবস্থা সম্প্রসারিত হচ্ছে। তাই বলছি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও কিনা রমজানের পবিত্রতাকে সম্প্রসারিত করা যায় না। সৃষ্টিকর্তার জবাবদিহিতার উদ্ধে এই রমজান মাস আর এই ক্ষেত্রকে আরো উদার করে পবিত্রতার পরিধীর ব্যাপ্তি বৃদ্ধিতে কাজ করুন। মধ্যপ্রাচ্যসহ এমনকি খ্রিষ্টান দেশ হিসেবে স্বীকৃত দেশেও রমজানের পবিত্রতাকে সম্মান করতে নিত্যপন্যের মুল্য কমিয়ে উদার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে আর আমাদের মুসলিম দেশে ব্যবসায়ীরা পর্যন্ত রমজানকে পুজি করে জনগণকে জিম্মী করে নিত্যপন্যের বাজারে আগুনের লেলিহান শিখা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি কি করা যায় না রজমানকে শ্রদ্ধা করে আল্লাহর পবিত্রতাকে নিজের জীবনে প্রকাশ করতে দ্রব্যমূল্য অধিক লাভে নয় বরং অল্প লাভে বিক্রির ব্যবস্থা করে নতুন করে ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা এমনকি সাম্যের বিধানাবলীর নতুন করে শুভসুচনা স্থাপন করতে আগামীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। ধনী গরীব সকলের মাঝে সাম্যের ব্যবস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করুন। ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষীত হউন এবং আগামীর জন্য নতুন ব্যবস্থার পথ উন্মোচন করুন। সরকার ও ব্যবসায়ীরা আগামীর জন্য নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনে মূল্য বৃদ্ধি নয় বরং এই নিত্যপন্য লাগাম টেনে ধনী ও গরীবের মাঝে অর্থনৈতিক ব্যবধান ও ক্রয়ক্ষমতার সমতা বিধান সুনিশ্চিত করুন। এই ভাবনায় ইসলাম ও কোরআনের এমনকি সৃষ্টিকর্তার বিধানের পূর্ণাঙ্গতা বাস্তবায়ন সুনিশ্চিত হবে।
বিশ্ব ব্যবস্থায় ঝড় তোলে করোনা নামক চক্রান্তের মাধ্যমে। কিন্তু সেই চক্রান্ত চলমান রেখে যখন বুঝতে পারল এতে করে ধনীক শ্রেণীর আকাঙ্খা পরিপূর্ণতায় পরিপূর্ণ হবে না। তাই নতুন করে শুরু হয়েছে ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক লোভের নিলজ্জ্ব মহড়া। তবে এই মহড়ায় জড়িত হয়েছে বিশ্বের সকল ধনীক শ্রেণী ও ক্ষমতাশালীরা। তারা দেখিয়ে যাচ্ছেন যে, তাদের লোভের স্বীকারে পরিণত হচ্ছে সাধারণ ও নিরীহ মানুষ। অস্রের ঝনঝনানি, হুংকার ও ঝংকারে নি:শেষ হচ্চে সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদ। তাই এই জীবন ও সম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসতে আহবান জানাচ্ছি খোদায়ী আদর্শ ও বিশ্বাসে বলিয়ান সকল বেহেস্তি শান্তিকামী মানুষজন। আপনি কি বেহেস্তি শান্তিকামী এবং শান্তি বিলিয়ে দেয়ার অধিকারী; যদি হওন তাহলে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুতি নিয়ে কাজে নেমে পড়ুন। তবে পৃথিবীকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে সৃষ্টিকর্তার ভবিষ্যতবানী এবং কর্ম সম্পন্নের যে ব্যবস্থা তা যদি হয় এই উত্তাল অবস্থা তা যেন সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় সুসম্পন্ন হয়। আর এতে আমাদের যে দায়িত্ব তা সঠিকভাবে পালনে সাহায্য এবং সুরক্ষা ও মনোবল সৃষ্টিকর্তার কাছে যাচনা করি। আমাদেরকে ব্যবহার করে এই নৈরাজ্যের অবসান করুন। আপনার (সৃষ্টিকর্তার) ইচ্ছায় সকলকিছু হয় এবং বেহেস্তের আবরণে এই পৃথিবী থেকেই বেহেস্তি যাত্রা শুরু হউক। লোভ চারিতার্থে ক্ষমতার মহড়া বন্ধ করুন এবং ক্ষমা ও ভালবাসায় পুর্ণ হউন; মানুষের কল্যাণে নিজের নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে কাজ শুরু করুন। সৃষ্টিকর্তার মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হউন এবং পৃথিবীকে দেখাশুনার জন্য, পরিচর্যার জন্য, সেবার জন্য সেবকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হউন। এই উত্তাল অবস্থায় নিজেদেরকে সজাগ থাকার ব্যবস্থায় নিয়োজিত হউন এবং অন্যকে সজাগ করণের কাজে নিয়োজিত হয়ে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে দৃষ্টিনিবন্ধন করুন। আগামীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা সুপ্রতিষ্ঠীত করুন এবং অনৈতিক ও নৈতিবাচক সকল কর্মকান্ড পরিহার করে নতুন সাজে পৃথিবীকে সাজাতে নিজ নিজ ভুমিকা রাখুন।