এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবং একই সঙ্গে স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই অমূল্য বানীটির প্রবক্তা এবং রচয়ীতা বাঙালীর গর্ব ও অহংকার জোলিও কোরী উপাদী পাওয়া বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভুষিত এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী হিসেবে বিশ্বস্বীকৃতি পাওয়া সেই মহামানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সেইদিনের অমিয় বাণীটি আজও অম্লান এবং যুগের দাবি পুরণে কার্যকর। এই দুটি শব্দ আজ হা হা-কার করা বিশ্বের জন্য উপযুক্ত। তবে এই বাণিটি আজ এবং আগামীকাল একই গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে যাচ্ছে এবং যাবে। এটি সার্বজনীন এবং সমগ্র সৃষ্টির পক্ষে কথা বলে, অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে মানদন্ড হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে এবং যাবে। তাই বঙ্গবন্ধু শুধু যে বাংলা এবং বাঙ্গালীর তা কিন্তু নয় তিনি বিশ্বব্রক্ষান্ডের। বঙ্গবন্ধুর মালিকানা আজ সারা পৃথিবীময় বিরাজমান। আর ঐ বিরাজমান অবস্থানকে পাকাপোক্ত করতে আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে; প্রমান করতে হবে যে; বঙ্গবন্ধু যথার্থই বলেছিলেন এবং আজও ঐ বলার উপরই দাড়িয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং যাব। নতুন করে আর যুক্ত করার অবশিষ্ট কিছুই নেই; বরং সবই তিনি বলে ব্যক্ত করে গেছেন। তাই সাধুবাদ, সম্মান, ভালবাসা ও কুর্নিশ করে একজন স্বজাতীয় হিসেবে তোমাকে বহন করাই এখন বিশ্বময় দাবী উঠেছে এবং সেই দাবির অগ্রজে থেকে কাজ করে যাওয়ার সমস্ত প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেই এগিয়ে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত এও দেখছি যে, পরিক্ষীতভাবে প্রমানিত কেউ আমাদেরকে দাবায়ে রাখতে পারেনি এবং পারবেও না। হ্যাঁ সেই ভাষনের সকল লক্ষ্য পুরণের পথে অগ্রজে থাকার অভিলাষ নিয়েই সবাইকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে এবং হবে। সামনের দিনগুলো আমাদেরকে এই শিক্ষাই দিয়ে যাচ্ছে।
রমজানের আগমনের পুর্বলক্ষণ যাই-ই হউক না কেন বরং রমজান আসন্ন এবং আজ লাইলাতুল বরাত (শবে বরাত)। আজকের রজনীতে মানুষের ভাগ্য লিপিবদ্ধ হয় বা নবায়ন করা হয়। যা শৈশবেই শুণে এসেছি আর মাওলানাদের মাধ্যমে শুনে যাচ্ছি। তবে সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ এই সৃষ্টির জন্য সৃষ্টির পূর্বেই সকল কিছু নিরূপিত করে রেখেছিলেন যা দিনে দিনে পুরন হচ্ছে এবং আমরা ভোগ করে যাচ্ছি ও যাব এবং লোকে সবই দেখে খোদার গুণগান করবে। ব্যাবসায়ীদের লোভী মনোভাব পরিহার করে রমজানের তাৎপয্য ও ফজিলত ভোগ করার মানুষিকতায় নিয়োজিত হতে হবে। উদ্ধগতির লাগাম টেনে ধরতে একযোগে ধর্মীয় মূল্যবোধে জাগ্রত থেকে কাজ করতে হবে এবং স্বাধীনতা প্রকাশ ও ভোগে সহযোগীতা দৃশ্যমান রাখতে হবে। সাম্য বা সমতা বিধানের যে মাস আসছে সেই মাসকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং মুক্তির সংগ্রামে সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে এগুতে হবে। সরকার-জনগণ, ধনী-গরীব, উচু-নীচু ভেদাভেদ ভুলেগিয়ে সাম্য এবং ঐক্যকে সুসংগঠিত করে এগিয়ে যেতে হবে। আহলান-সাহলান; মাহে রামাদান এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য বুঝতে আর বুঝাতে কার্যকরি পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে। লোভবিহীন ন্যায়ের এক ও অভীন্ন মত ও পথের ব্যবস্থা দৃশ্যমান রাখতে হবে। সরকারের আন্তরিকতা এবং বিরাজমান পদক্ষেপগুলোকে বাস্তবে রূপদান করার নিমিত্তে স্ব স্ব জায়গা থেকে ভুমিকা রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সেবার মানদন্ডকে আরো উদারীকরণ করে সহজ থেকে আরো সহজলভ্যে পরিণত করতে হবে। অর্থনৈতিক, শারিরিক, মানুষিক, সামাজিক, কর্মক্ষেত্রের এমনকি পারিবারিক লোভ থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে হবে। তবে দৃশ্যমান লোভসকল যা প্রকাশিত হচ্ছে তার শিকড়ে কাজ করতে হবে; আর তা করতে পারলেই আগামীতে ভুলের আর নতুন দু:খজনক প্রকাশ ঘটবে না। আমরা এই ক্ষেত্রে ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাবের কথাই বলতে চাই; তবে এই মূল্যবোধ চর্চায় মনযোগ বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। যদি স্ব স্ব ধর্মের ধর্মীয় মূল্যবোধগুলো চর্চায় জাগ্রত থাকে তাহলে নতুন করে আর পুরাতন বা নতুন কোন অবক্ষয়ের বাস্তবরূপ প্রত্যক্ষ করতে হবে না।
১০২তম জন্মদিনে উৎসবমুখর পরিবেশে এমনকি হৃদয় থেকে শ্রদ্ধা জানাতে অথবা ঐ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিব্যস্ত সকল স্তরের মানুষ। আমি মনে করি যে, ঐ দিনটি স্পেশাল কারণ ঐদিনেই তিনি আগমন করেছিলেন; আর ঐ দিনেই তিনি আমাদের জন্য স্বাধীনতা, মুক্তি, স্বাম্য, উন্নয়ন, ও উন্নতির শ্রুতিমধুর বিধানাবলী নিয়ে এসেছিলেন। তাই ঐ দিনটিতে স্বতস্ফুত প্রতিজ্ঞার বন্ধনে আবদ্ধ হয় যে, তাঁর (মহামানবের) মুখনিসৃত বাণীগুলোকে এমনকি দেখানো ও শেখানো আর লিখিত নির্দেশনাগুলোকে অক্ষরে অক্ষরে এমনকি জীবনের সকল ক্ষেত্রে বা প্রতিটি স্তরে যত্নশীল হয়ে ব্যবহারের মাধ্যমে গেঁথে তুলি যাতে স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবে রূপ, রস, গন্ধে বিরাজমান থাকে। উন্মুক্ত থাকে সকলের জন্য; মুক্তি ও স্বাধীনতা; উপভোগে সকলেই সাম্যের বন্ধনে অটুট থাকে। ১৭৭৫’র ১৫ই আগষ্ট যা বিনষ্টের লক্ষে স্বপরিবারে এমনকি আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ হত্যা করা হয়েছিল; স্বাধীনতা, মুক্তি, উন্নয়ন, সাম্য; গীতি কবিতা, রম্য রচনা, উপন্যাস ও গদ্যের উপাখ্যানে রচিত ; মুখনি:সৃত সকল কিছু। কিন্তু তা কায্যে পরিণত হয়নি বা ভুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মাঝপথে সময় ক্ষেপন হয়েছে মাত্র। আর সৃষ্টিকর্তার বলা বাণিতে এও পাওয়া যায় যে, রাখে আল্লা মারে কে? হা সৃষ্টিকর্তা যা করেন এবং করান তা কেউ খন্ডাতে পারেন না বা বুঝতে পারেন না। তাই সৃষ্টিকর্তার খেলা এবং এর ফল উভয়ই এখন দৃশ্যমান। যার থেকে জাতিদেরও শিক্ষা নেয়ার যথেষ্ট উদাপান বিরাজমান। বিভিন্ন নবীদের মাধ্যমেও আল্লাহ তাঁর জাতিদের রক্ষা করেছিলেন, আর বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমেও করেছিলেন; কিছু কিছু নবীদের করুন পরিণতির মত শেখ মুজিবুর রহমানেরও হয়েছিল কিন্তু তাঁরই ঔরষজাত সন্তান দ্বারা সেই গতিময়তা ফিরিয়ে এনে দৃশ্যমান কার্যক্রম অব্যাহত রেখে যাচ্ছেন। যা সৃষ্টিকর্তার কাছে একটি স্থীরকৃত ব্যাপার মাত্র।
পৃথিবীর বর্তমান অবস্থায় মুক্তি এবং স্বাধীনতা এই দুটি শব্দের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে তবে এর যথার্থ প্রয়োগের ক্ষেত্রে লোক দেখানো আয়োজনের সাজ সাজ রব উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতায় পৃথিবীর গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণে মুক্তি ও স্বাধীনতার পরিপন্থি কাজ হচ্ছে। এর দায় কার! কিসের জন্য এমন হচ্ছে বা কাদের জন্য এমন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে বা পরখ করতে বাকি নেই কিন্তু প্রকাশ করতে কোন ভাষা বা সুযোগ নেই কারো সামনে? হ্যাঁ এখানেই কবি নিরব কিন্তু সৃষ্টিকর্তা-কি নিরব! না তিনি নিরব নয় বরং নিরব আমরা যারা সৃষ্টিকর্তার পক্ষে কাজ করব। সৃষ্টিকর্তা যাদেরকে বেঁছে নিয়েছেন এমনকি যাদেরকে ব্যবহার করে পৃথিবীতে মুক্তি এবং স্বাধীনতা পুরোপুরি উপভোগ্য করে তুলবেন তারাই আজ নিরব। সময়ের প্রয়োজনে ও যুগের দাবি আর চাহিদার যোগানে; হ্যা এখন দরকার শেখ মুজিবের। আসুন আমরা আজকের পৃথিবীর প্রয়োজয়ে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি তবে এই ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের দেখানো, শিখানো এবং লিখনিতে উল্লেখিত শিক্ষাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করে প্রত্যোকে এক একজন শেখ মুজিব হয়ে উঠি। যুগে যুগে বিভিন্ন নবি ও রাসুল প্রেরণ করে আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা ও অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করেছেন এবং পরিশেষে হযরত ঈসা আল মসিহকে পাঠিয়ে তিনি তার কূল (ওয়াদা) পূর্ণ করেছেন। পৃথিবীকে নিস্পাত করেছেন এবং পৃথিবীর জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্ত ও নিশ্চয়তার বিধান এর পূর্ণাঙ্গতা দিয়ে পরিপূর্ণ করেছেন। দু:ভাগ্য আমাদের যে, আমরা ঐ সকল মানছি না বিশ্বাস করছি না এমনকি দেখছিও না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছিলেন যে, ঈসার প্রতি শান্তি ছিল যেদিন তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, শান্তি ছিল যতদিন তিনি পৃথিবীতে বেঁচেছিলেন আর শান্তি আছে যেদিন তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে আরসে মহল্লায় অধিষ্ঠিত আছেন। তবে পবিত্র ইঞ্জিল শরীফে এও লেখা রয়েছে; আমার প্রতি শান্তি ছিল, আছে এবং থাকবে; তবে আমারই শান্তি আমি তোমাদেরকে দিয়ে গেলাম। হ্যাঁ পৃথিবীতে আজ শান্তির বড়ই অভাব। কারণ শান্তি বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও কেউ সেই শান্তি নিতে চাই না বরং যুদ্ধ-বিগ্রহ করে শান্তি অর্জন করতে চাই। এইক্ষেত্রে আল্লাহর বানীর সঙ্গেও মিলানো যায় যে, “হে আসমান এ দেখে হতভম্ব হও, আমার বান্দারা দুটো গুনাহ করেছে, একটি জীবন দায়ী ঝড়না বা শান্তির মালিক আমাকেই তারা ত্যাগ করেছে আর নিজেদের জন্য বা প্রয়োজনে শান্তি অথবা পানি জমা করে রাখছে যা ফুটো; অল্পক্ষণ পরেই শেষ হয়ে যায়।” যাক সেকথা, যে যাই বলুক না কেন; তবে আজ বঙ্গবন্ধুর সেই দুটি শব্দের সঙ্গে আরো একটি শব্দ যুক্ত করে তাঁর অমীয় বানীর পরিপূর্ণতা টানতে চাই। তা হলো: মুক্তি + স্বাধীনতা+ শান্তি। এই তিনের সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ ব্যবহার আসন্ন। তাই বঙ্গবন্ধুর দুটি শব্দের পূর্ণতা পেতে শান্তির দরকার আর সেই শান্তির অন্বেষনে ঈসার কাছে যাই। তাহলেই তাঁর দেয়া শান্তি গ্রহণ করে স্বাধীন ও মুক্তি নিয়ে নিশ্চিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো। আসুন আমরা আমাদের জীবনে মুক্তি লাভ করি এবং স্বাধীনতা উপভোগ করে শান্তিকে চির প্রতিষ্ঠিত করি। জয় আমাদের হবেই এবং কেউ আমাদেরকে দাবায়ে রাখতে পারবে না। পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক, সকল বৈষম্য ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাক সৃষ্টি এবং স্ব স্ব স্বাধীনতা ভোগ করে নিশ্চিত গন্তব্যে পৌঁছার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।