এই অগ্নিঝড়া মার্চের আহবান হলো; ঘোষনা অর্জন ও বাস্তবায়নের পথে সকল নেতিবাচক ও ইতিবাচক অন্তরায়গুলোকে ইতিবাচক মনোভাবে অতিক্রম করে সামনের দিকে ছন্দময় গতিময়তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এই মার্চেই জন্মগ্রহণ করে সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে বয়োবৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন; হয়েছিলেন জাতির ত্রাতা ও অবিসংবাদিত নেতা। নি:লোভ ও নি:স্বার্থ ব্যাক্তি যিনি বাঙ্গালীর জন্য – স্বাধীকার ও অধিকারের কর্ণধার, ন্যায়-নীতির স্তম্ভ, সাম্যের ভিত্তি, পরিশেষে বাংলাদেশের স্থপতি সর্বজন শ্রদ্ধেয় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এই মার্চেই স্বাধিনতা এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের দ্বার উন্মোচন করে বাংলা ও বাঙ্গালীর মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সকল কর্মসম্পাদন করেছিলেন। বাঙ্গালী জাতি সেই ঘোষনার অর্জন ও বাস্তবায়নে ঝাপিড়ে পড়েছিল এবং ৯মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করে ছিনিয়ে এনেছিল যা আজ আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে উপভোগ করছি। ইতিহাস ঐতিহ্য এবং এর ধারক ও বাহকগণ আজও আমাদেরকে সেই সুতিকাঘারে আবদ্ধ করে রেখেছেন। আমরা যারা যুদ্ধপরবর্তীতে এই স্বাধীন বাংলায় বয়োবৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছি এবং নেতিবাচক সকল মিথ্যার বেসাতিতে প্রলোভিত হয়ে; আশান্বিত হয়ে অথবা মিথ্যাকে সত্য ভেবে ঐ মিথ্যায় জীবন সাজিয়েছি সেই তাদের উদ্দেশ্যে বলছি ইতিহাস ও ঐতিহ্য শুধু পাঠ্যপুস্তকেই সিমাবদ্ধ নয়; বরং বয়স্ক ও মুরুব্বিদের কাছ থেকে আহরণই হলো প্রকৃত ও সত্যের সুদৃঢ় বৃত্তি। সৃষ্টিকর্তার কালামেও উল্লেখ আছে পূর্ববর্তীদের কাছে যেতে, মুরুব্বীদের কাছে যেতে। সত্য এমন একটি বৃত্তি যে, যার কোন কলঙ্ক নেই তবে শত্রু আছে। আজ সত্যের মুখোমুখি হতে দ্বিধাহীনভাবে এগিয়ে আসুন এবং নিজেকে সম্বৃদ্ধ করুন। মিথ্যার আবরণে সত্যকে আর কলুষিত করবেন না। স্বার্থের খোলসে সত্যকে আর কলংকিত করবেন না বরং সত্যকে সত্য হিসেবে মেনে নিয়ে আগামীর কল্যাণ ও নিজের কল্যাণ সাধনে মনোনিবেশ করুন। এই বিষয়গুলো অন্য কারো জন্য নয় বরং নিজের জন্যই আজ বরই প্রয়োজন। সত্য এবং ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা তবে এই সুত্রের ধারক ও বাহকগণ এখনও বেঁচে আছেন তাই বিনষ্টের শত চেষ্টার পরও সত্য টিকে আছে এবং থাকবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাখ্যাত সম্মানীতরা এবং সেই সময়ের সচেতন জিবীত ব্যক্তিরা ঐ সত্যকে সত্যায়িত করে ইতিহাসে সত্যকে সত্য হিসেবে পরিপূর্ণতা দান করে যাচ্ছেন এবং যাবেন। তবে মিথ্যা ইতিহাসও সাথে সাথে গলা ফাটিয়ে আওয়াজ দিয়ে যাচ্ছে যা সত্যের স্বতস্ফুর্ত স্পর্শে নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে। সত্যের ধর্ম হলো প্রকাশিত হওয়া আর মিথ্যাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়া।
বর্তমানের অনেক অর্জনও আজ মিথ্যার কবলে চাপা পড়ে যাচ্চে তবে ঐ চাপা পড়া অবস্থায় থেকে উত্তরণের জন্য সত্যারোহীরা সত্যানুসন্ধানে আরো মনোযোগী হয়ে অব্যাহতভাবে কাজ করতে হবে এবং মিথ্যার সকল পসড়া যুক্তি ও বুদ্ধি এবং স্থান ও কাল-পাত্র ভেদে উচ্ছেদ বা নির্মূল করতে হবে। আর এই কাজে সকলের অংশগ্রহন সুনিশ্চিতকরণে কাজ করতে হবে। ১৯৭১পরবর্তী সকল অর্জন আজ আরো সম্বৃদ্ধি লাভ করতো যদিনা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর অনুসারীরা বেঁচে থেকে ইতিবাচক কল্যাণে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতো। সবই নেতিবাচক নিয়তির খেলা আর পরিশেষে রচিত হলো আরেকটি নতুন অধ্যায় এবং নতুন ইতিহাস। যার জন্ম ঐ ১৯৭১ এর গর্ব এবং অহৎকার সেই স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঔরসজাত সন্তান তাঁরই তনয়া শেখ হাসিনা কর্তৃক। দেশবাসীর সমর্থন ও আকুন্ঠ সহযোগীতায় সিক্ত হয়েই তিনি আজ এই অবস্থানে এসেছেন এবং জাতিকে দিয়েছেন হারানো দিশা ফিরে পাওয়ার গতি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মের ইতিহাস এর যোগসূত্র হলো সেই ১ম প্রজন্মেরই ধারাবাহিকতায়। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা এবং তৎপরবর্তী প্রজন্মের ইতিহাস যোগসূত্রীতা প্রোথীত হউক একই স্রোতে ও ধারাবাহিকতায়। এই কল্যাণকামীতায় এগিয়ে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করি এবং আজকের দিনে আরেক শপথ বাক্য পাঠের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আগামীর কল্যাণে এবং বর্তমানের চলমান ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য আরো একটি ধারাবাহিক শপথ গ্রহণ জরুরী এবং এই শপথে পুর্বের সকল অর্জনকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নতুনত্ব দিয়ে সাজিয়ে আগামীর এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জাতি আরেকটিবার ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে সম্মুখ-সমরে সুপ্রতিষ্ঠিত করুক এই কামনাই মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রতিপাদ্যে যুক্ত হউক।
বাংগালী এবং বাংলার নানাবিধ সাফল্যে সমুজ্জ্বল বাংলাদেশ আজ অগ্রজে। তাই আমাদেরকে এই অগ্রজে থাকার অবস্থানকে পাকাপোক্তকরণে কার্যকরী ভুমিকা রাখতে হবে। জয় বাংলা শ্লোগানের অমীয় বানীকে আরো সুদৃঢ় করে আগামী প্রজন্মের শিরায় শিরায় প্রবাহিত করতে হবে। স্বাধীনতা ঘোষনার পূর্বে ঘটে যাওয়া গণহত্যাকে স্মরণে রেখে আগামী প্রজন্মকে প্রস্তুত হতে হবে। নতুন কোন ষড়যন্ত্রে পা না দিতে সকল সঠিক ইতিহাস জানার অবিরাম আকাঙ্খাকে পুনজাগরণে এগিয়ে নিতে হবে। ভুল এবং সঠিক অবস্থানকে পরিস্কার করে নতুনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হয়ে আগামীর উদীয়মান সূর্য্যকে বরণ করে স্ব স্ব আবস্থানের জানান দিতে হবে। জাতি হিসেসে এক, ভাষার দিকদিয়ে এক এবং বর্ণ, গোত্র, বংশীয় ভেদাভেদের উর্দ্ধে উঠে বাংলা এবং বাংগালী আর সর্বোপরী বাংলাদেশী পরিচয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। ত্রিশ লক্ষ্য শহীদ আর দুই লক্ষ সম্ভম হারানো মা বোনের স্মৃতিকে পবিত্রতায় শ্রদ্ধা ভালবাসায় স্মরণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ১৫ আগষ্টের সেই কালো রাত্রীর যাত্রীদের (শহীদদের) স্মরণে রেখে এবং তৎপরবর্তী হত্যাযজ্ঞের স্বীকার জাতীয় চার নেতাসহ সকল শহীদানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা ও ভক্তিসহকারে স্মরণে রেখে আগামীর করণীয় ঠিক করে সামনে এগুতে হবে; তাহলেই জাতি সঠিক পথে, সঠিক মতে এবং সঠিক গতিতে, সঠিক স্থানে অবস্থান করতে ও স্বীকৃতি অর্জনে সফলকাম হবে। জাতি হিসেবে আজ গর্বিত এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্ত্রীতে আর মুজিব শতবর্ষের সকল অর্জণের ভূয়সী প্রশসংসার বেড়াজালে আবদ্ধ না থেকে বরং আরো গতিময়তা নিয়ে অবশিষ্ট উন্নয়ন তরান্বিত করে সফলতার চুড়ান্ত চূড়ায় অবস্থান পাকাপোক্ত করতে নিরলস কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় বাংলাদেশকে অলোকিত করতে হবে বহিবিশ্বে চলমান প্রতিযোগীতার সকল স্তরে প্রথম স্থান অবস্থান এবং ঘোষণা ও বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে হবে। কেউ আমাদেরকে ধাবায়ে রাখতে পারেনি ও পারবেনা এই মুলমন্ত্রে বিশ্বাস ও নির্ভরতা নিয়ে নিরলস পরিশ্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য এবং তাঁর মহান মহানুভবতার সকল গুনাগুণ চর্চায় অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তি, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা, প্রয়োজনীয় যোগান এর যাবতীয় ব্যবস্থার একমাত্র মালিককে সব সময়ের জন্য নিজেদের হৃদয়ের সিংহাসনে অবস্থান করাতে হবে এবং সেই সিংহাসন থেকে পরিচালনার সকল কাজ সম্পন্নে কাজ করে যেতে হবে। তাহলেই আগামীর কল্যাণের তরে সকল কিছুই সফলতার শীর্ষে থেকে নতুন দৃষ্টান্তের ইতিবাচক বাস্তবতার স্বাক্ষর বহন করবে। স্বাধীনতা দিবসে সকলকে সাধুবাদ, শুভেচ্ছা এবং আমার ভালবাসা ও দোয়া মোনাজাত অফুরন্ত। সৃষ্টিকর্তা সকলকেই তাঁর ইচ্ছায় পরিচালিত করে তাঁর কাজের সমাপ্তি টানেন এই মিনতি জানিয়ে আগামীর নতুন আশার আলোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।