বাঙ্গালী জাতীর জীবনে অর্জন অনেক এবং বিসর্জনও অনেক। অর্জন ও বিসর্জনের হিসেব নিকেশ কষতে কষতে আগামীর ভাবনায় নতুন কোন বিসর্জনের ছাপ বা হতাশার অথবা অন্ধকারের ছাপ ফেলতে এখন আর চাই না। তবে সবাইকে সতর্ক থাকার উদাত্ব আহবান এবং আগামীর কল্যাণের জন্য করজোরে মিনতি করছি যেন আর কোন নেতিবাচক খেলার উপকরণ তৈরী না করি। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ক্ষমতা আল্লাহর কাছ থেকে আসে আর আল্লাহও ক্ষমতা দিয়ে তাঁর প্রীয় সৃষ্টিকে সেবা করানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। একটি বিষয় স্পষ্ট যে, কোন ক্ষমতাই চীরস্থায়ী নয় বরং ক্ষমতা এবং জীবন এই দুটিই অস্থায়ী; যা প্রমানীত সত্য। জোর করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতে কেউ পারেনি এবং পারবেও না যা ইতিহাস আমাদেরকে প্রমানসহ বুঝতে সাহায্য করে। তবে এই ক্ষমতা ততক্ষণই থাকে যতক্ষণ আল্লাহ তায়ালা চান এবং তাঁর ইচ্ছায়-ই ক্ষমতার পরিবর্তন হয়ে থাকে। ক্ষমতা পেয়ে বা নিয়ে অন্যের ক্ষতি বা নিজের লাভ করা এই দুটোই ক্ষমতা প্রাপ্তীর পরিপন্থি। তবে এই ক্ষমতা শুধু সেবার মানোন্নয়ন এবং পরিধি বৃদ্ধিকল্পেই দীর্ঘায়ীত হয় এবং সৃষ্টির কল্যাণ এমনকি সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় সাধিত হয়। তাই ক্ষমতার জন্য পাগলের প্রলাপ বকা বা কুট কৌশল আটা অথবা নেতিবাচক কর্মকান্ডের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা একটি অভিশপ্ত ও গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচ্য এমনকি ক্ষমতাহীন থাকার পথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি ক্ষমতায় যেতে চাই তাহলে অন্তর আর মন এবং মুখসৃত বাক্যের সমন্বয় সাধন এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে এগুতো হবে। সকল পাপ স্বীকার এবং নতুন করে আর ঐ পাপে না জড়ানোর অঙ্গিকার করে কার্যকরী পদক্ষেপে এগুলো সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ অভিশম্ভাবী। তবে ক্ষমতা যাওয়া বা পাওয়ার জন্য চলমান ক্ষমতার সকল কার্যবিধি এবং কাজের সঙ্গে একমত বা একাত্ম পোষন এমনকি ইতিবাচক কাজের সহযোগীতা অব্যাহত রেখে নেতিবাচক কাজের ইতিবাচক সমালোচনা ও যুক্তি এবং গঠনমূলক পরামর্শ চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
বাংগালীর অর্জন অনেক যা প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। প্রথমে মার্তৃভাষা প্রতিষ্ঠিত করা, স্বাধীনতা অর্জন করা, স্বাধীন দেশের স্বীকৃত অর্জন করা, বাংগালীর অবিসংবাধিত নেতাকে স্বদেশে স্ব সম্মানে ফিরিয়ে আনা, দেশ গঠনো মনোনিবেশ করা; সংবিধান রচনা, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় যোগদান করা, বিভিন্ন ফোরামো নিজেদেরকে অধিষ্ঠিত করা, নিজেদের উন্নতিকল্পে নিজেরাই স্ব উদ্যোগে পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন এবং সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার এমনকি ভাবনার ছাপ এটে অগ্রসর হওয়া। ধ্বংসস্তুপ ও বিধ্বস্ত দেশকে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের রূপদানের প্রচেষ্টায় অব্যাহত যাত্রায় এগিয়ে যাওয়া। শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচার এবং আন্তর্জাতিক মানোন্নয়নে কার্যকরী ভুমিকা রাখার জন্য বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারের গভেষণাগার, অফিস, দপ্তর এবং অধিদপ্তরের শুভ সুচনা মোটকথা একটি শক্তিশালী ষ্টাকচার তৈরীর কাজ সম্পন্ন করেন। যা আজ আমরা ঐ ষ্টাকচারের (গাথুনির) উপর দাঁড়িয়ে গতিময়তা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। ১৯৭৫সালের ১৫ই আগষ্টের কালো অধ্যায়ের ফলে সব অর্জনের গতিময়তা হারিয়ে বিসর্জনে পরিণত হয়েছিল। বাংগালী নির্যাতিত, নিষ্পেষিত, অধিকার বঞ্চিত, বাক স্বাধীনতাহীন অবস্থায় দিনগুজারে জর্জরিত ছিল। সেই থেকে বের হয়ে সকল হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেয়ে এগুচ্ছিল। কিন্তু সেই ৩০লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ আর ২লক্ষ মা বোনের সম্ভম হারানোর সকল বেদনাময় সৃষ্টিকে ভুলুন্ঠিত করে আবারো ঐ কালো রাত্রির অধ্যায় পুনরায় শুরু হয়েছিল। যার থেকে আবার মুক্তি পেতে ৩০টি বছর লেগেছিল বাংগালী জাতির । দুই মুক্তির স্বাদ আস্বাধনে এখন জাতি তবে এই স্বাধেরও তিক্ততা বিরাজমান রয়েছে। শুন্যতা রয়েছে, পাওয়া – না পওয়ার হিসেব নিকেশ গড়মিল বিরাজমান রয়েছে। আমাদের চলমান অর্জন অনেক, উন্নয়নশীল দেশে স্থায়ীভাবে পদার্পন, শতভাগ বিদ্যুৎ, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, রপ্তানী বাণিজ্যে অনন্য সফলতার দৃষ্টান্ত, মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ এই শব্দ দুটিকে কার্যকরী অর্থে বিদায় এবং সরকারী সেবা সহজীকরণ এমনকি ঘুষ ও দূর্ণীতি দুরকরণে কার্যকরী পদক্ষেপ, স্বচ্ছতা আনয়ন এবং ডিজিটাইজেশন শতভাগ সফলতার স্বীকৃতি, শিক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধনে দৃশ্যমান কার্যরত, দয়া-দাক্ষিণ্যে, মানবিকতায় শতভাগ সফলতা অর্জিত, রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তি পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্বীকৃতি অর্জন, খেলা-ধুলায় মর্যাদা বৃদ্ধি এবং করোনা মোকাবেলায় সাফল্য ও রেমিটেন্স এবং তথ্য প্রযুক্তিতে শতভাগ এগিয়ে এখন বাংলাদেশ উন্নয়ন এবং স্থায়ীত্বে আর দুর্যোগ মোকাবেলার রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত। আরো কতো কি-ই না রয়েছে তবে এই সকলের মাঝেও বিসর্জন বিদ্যমান রয়েছে। এই বিসর্জনগুলো হলো আইন-আদালত, বিচার ব্যবস্থা, অনাকাংখিত মৃত্যু, সম্ভাবনাময় প্রাণের বিয়োগ, ষড়যন্ত্রের স্বীকারে জীবনাবসান, নিজের স্বার্থের প্রয়োজনে দেশের ক্ষতি, মান-সম্মানে আঘাত, জাতিয় এবং আন্তর্জাতিক অর্জনে বাধা, নৈরাজ্য সৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনার লক্ষ্যে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্ত অব্যাহত রাখা, সত্যকে অস্বিকার করে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে দ্বার করাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা যেনো একটি অভ্যাসের চর্চা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জোর প্রতিযোগীতা চালিয়ে যাচ্ছে। আরো যুক্ত করা যায় সরকারী বাহিনীর সমন্বয় সাধন এবং দায়িত্ব সহনশীল ও উদার হয়ে সম্পন্নকরণে অনিহা অথবা উপরি আয়ের বা প্রকাশ্যে ও গোপনে বলা ঘোষের অংশ না পেয়ে আপত্তির খেলায় মেতে দেশের বদনাম সুপ্রতিষ্ঠিত করার খেলা বন্ধে এখন কার্যকর ভুমিকা রাখা। বিশেষ করে এনএসআই ও এসবি কর্তৃক দুর্নাম এবং ঘুষের প্রমান বিশ্বায়নে সুপ্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ বন্ধ করার কাজে মনযোগী হওয়া। সবাই মিলে এই সকলকে রুখে দিতে হবে। “যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।” এই বাক্যের কার্যকরী রূপ ও দৃশ্যমান বাস্তবায়ন চলমার রাখতে হবে।
অর্জন এবং বিসর্জন নিয়ে আর গলাবাজি না করে বরং আগামীর কল্যাণে আরো মনোযোগী হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেবকদের নম্রতা আর সেবার মানদন্ডের অগ্রসরতার মানুষিকতা আগামীর সেবার সুযোগ বৃদ্ধি এবং সেই সুযোগ কাজে লাগাতে জনপ্রেরণা কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে আমি একজন মানুষের নামোল্লেখ করে বলতে চাই যে, দেশ এগিয়েছে এবং এগিয়ে যাবে তবে ভুমিকা ও কার্যকরে এবং নিবেদিত প্রাণ হয়ে কোনকিছুতে কান না দিয়ে বা তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যেতে হবে। যেমনি করে জনাব সজিব ওয়াজেদ জয় এগিয়ে গেছেন এবং যাচ্ছেন। তিনি কোন সমালোচনা বা বাতাসে ভাষা এমনকি খবরে প্রকাশিত বাক্যের অথবা মুখনিসৃত বানির কর্ণপাত না করে বর্তমান বাংলাদেশের ডিজিটাল উন্নয়ন শতভাগ সফল করেছেন এবং আগামীর তরে করে যাচ্ছেন। তাই তাঁর মত একনিষ্ট হয়ে লক্ষ্যে পৌঁছার কাজে শতভাগ মনোনিবেশ করুন এবং কাজের গতিময়তা আনুন। জনাব সজিব ওয়াজেদ জয়ের দৃষ্টান্তকে কাজে লাগান। কথা বলার বা তর্ক করার এমনকি যুক্তি-তর্কের জন্য এমনিতেই লোক নিয়োজিত আছে আর তারাই আপন গতিতেই তা করে যাবে। তবে যদি মনে হয় এইক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে তাহলে সুস্পষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করুন যাতে ঐ সকল গুরুত্ব বিবেচনায় দৃশ্যমান রাখতে পারে। যে যার দায়িত্ব একনিষ্টভাবে সুসম্পন্ন করুন। কারো নেতিবাচক কথায় বা সমালোচনা এমনকি উষ্কানিতে কান দিবেন না বরং নিজের কাজটুকু যত্নশীল হয়ে সু সম্পন্ন করুন। তাহলেই সফলতার শতভাগ দৃশ্যমান এবং সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে। দৃষ্টী এবং মনযোগ বিনষ্টের কাজে নিজেদেরকে জড়াবেন না। আপনার কাজের মুল্যায়ন সময় এবং জাতি করবেই করবে। কোন সমালোচনাই আপনার কাজের সফলতাকে অমূল্যায়নে পর্যবসীত করতে পারবে না বরং নেতিবাচক সমালোচনা আপনার কাজকে স্বীকৃতি এমনকি প্রতিষ্ঠত হতে সহায়তা করবে। আসছে রমজান মাসে আমরা নিজেদেরকে পুরিয়ে সহিহ করি এবং সকল ভাল কাজের চর্চা অব্যাহত রাখার কাজে মনোনিবেশ করি। যার যার অবস্থান থেকে নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করি এমনকি সকল কাজে নিজেদের নয় বরং অন্যের মঙ্গল কামনায় ব্যতিব্যস্ত থাকি। মহান সৃষ্টিকর্তার সান্নিদ্ধ্য এবং নৈকট্য লাভে তাঁর আদেশ-নিষেধ ও হুকুম-আহকাম পালনে সচেষ্ট থাকি। অর্জন বিসর্জন নয় বরং সকল বিসর্জনকে অর্জনে পরিণত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। মাবুদ আল্লাহ আমাদের সকলের মঙ্গল এবং সুস্বাস্থ্য ও ইহকাল আর পরকালের নিশ্চয়তায় নিশ্চিত করুক এই কামনা করে রমজানের শুভেচ্ছা ও স্বাগতম:- আহলান-সাহলান-মাহে রামাদান।