ঈদ, বাস্তবতা ও জীবন এই তিনের একত্রে অগ্রসরমান আনন্দ যেন আজ পরিপূর্ণ হয় সেই দিকে দৃষ্টি দিতে সকলের প্রতি সবিনয় মিনতি। চলমান উষ্ণ সময়ে আমরা সকলের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখার পরিবেশ তৈরীতে মনযোগী হবো। সকল পরিবেশে সকলের সঙ্গে নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাব। কোন বাধাকেই আর বাধা মনে করব না এমনকি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে আসব না। কারন কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কাংখিত লক্ষে পৌছতেই হবে। প্রত্যেককে গড়ে তুলতে হবে এমনকি একে অপরকে যত্ন করে এগিয়ে দিতে হবে, উৎসাহ দিতে হবে। সমান্তরালভাবে সুযোগ করে দিতে হবে যাতে করে সকলকে নিয়ে একযোগে আনন্দ করতে পারি। আসছে ঈদ; এই ঈদের আনন্দ হউক সাম্যের, ভ্রাতৃত্বের, ন্যায়ের, ভারসাম্য এবং সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টিতে সকল মানুষই সমান এই মূল্যবোধ জাগ্রতকরণের।
ঈদকে সুন্দর আনন্দঘন করতে এমনকি রাঙ্গিয়ে তুলতে সরকার নানারকম কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ঘরহীনদের ঘর দিয়েছে, তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতির পাশাপাশি তাদেরকে ঘর ও জায়গা দিয়েছে। নতুনভাবে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়ার নির্দেশনাসহ তৃতীয় লিঙ্গের সন্তানদের পরিবারের সঙ্গেই বেড়ে উঠার এমনকি সমাজের সঙ্গে বসবাসের ও কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন। জান-মালের নিরাপত্তায় অতিগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের এই পদক্ষেপগুলোকে কার্যকর করতে জনগণেরও সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার এবং জনগণ একযোগে যেকোন প্রচেষ্টা বা চেষ্টাকে সফল করার শতভাগ নিশ্চয়তা থাকে। তাই আসুন সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল এবং জনগন ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ইতিবাচক ও মানবকল্যাণকর কর্মসূচীকে সফল করে তুলি।
সারাদেশের মানুষ যার যার কর্মস্থল থেকে ছুটি পেয়ে পরিবারের কাছে স্বস্থির আশায় বা শান্তির আশায় ছুটে যাচ্ছে। এই স্বস্থি বা শান্তি যেন পরিপূর্ণ হয়। কোন অশনিসংকেত যেন আর কারো জীবনের স্বস্থি এবং শান্তিকে বিঘ্নিত করতে না পারে সেইদিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করতে হবে; সরকার, জনগন, প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলসহ সকল গোষ্টিরই। কোনভাবে একক ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠিকে দোষারূপের দায়ভার দিয়ে নিজে বাচার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। রাস্তাঘাটসহ যাবতীয় ব্যবসায়ই এই বিরাজমান অবস্থার উন্নতিকল্পে ঈদ, বাস্তবতা এবং জীবনকে শান্তিতে ভরিয়ে আনন্দপূর্ণ করতে হবে।
সোনার বাংলায় সোনার ফুলেরা ভরপুর করে তুলেছে। বাংলাকে রাঙ্গিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন রঙ্গের আভায়। তাই ঐ নিস্পাপ ফুলের স্বার্থকতায় বাংলাকে চীরস্থায়ী রূপদিয়ে সকল সময়ের জন্য দৃশ্যমানতা প্রদর্শন সচল রাখতে হবে। কাজ, চিন্তা ও কর্মের সমন্বয়ে ঐ সতেজতা এবং নির্মলতা অব্যাহত রাখতে হবে। কারো উপর দায়িত্ব না চাপিয়ে নিজের উপর দায়িত্বের ভার তুলে নেয়ার চর্চা এই ঈদানন্দ থেকে দৃশ্যমান রাখতে হবে। উপহার, অর্থ, সম্পদ, বাড়ি, গাড়ি, নারী, জ্ঞান এবং কর্মসংস্থান সবই ক্ষণস্থায়ী কিন্তু জীবনের ভালগুণগুলোর চর্চার ফল চিরস্থায়ী। তাই চিরস্থায়ী জীবন এবং ফল এর দুটোই আহরণ করুন। আসমান ও জমিনে শুধু জীবনই স্থায়ী তবে এর দুটো রূপ এযাবতকাল পর্যন্ত প্রকাশীত সত্য। এক হলো ইহকালীন জীবন আর দ্বীতিয়টি হলো পরকালীন জীবন। যা মানুষের দৃষ্টিসীমার বাইরে, ধরা-ছোয়ার বাইরে। শুধু অন্দাজ করা বা অনুমান করা অথবা প্রকাশিত কালামের আলোকে বলা এখন পর্যন্ত প্রমানিত সত্য হিসেবে প্রকাশিত ও প্রতিষ্ঠিত। তবে কেউ ঐ দ্বীতিয় জীবনের স্বাধ আস্বাধন করে ফিরে এসে গল্পকারে এখনও বলে নাই বা এর কোন সুযোগও সৃষ্টিকর্তা রাখে নাই। প্রথম জীবনের ভাল ফলগুলোই দ্বীতিয় জীবনের নিশ্চয়তার ধারক ও বাহক। তাই প্রথম জীবনের সকল ভাল কাজ সম্পন করে সৃষ্টিকর্তাভিমূখী হতে হবে। প্রথম জীবনের ইতিবাচক সফলতাই দ্বিতীয় জীবনের নিশ্চয়তা। প্রথম জীবনের নেতিবাচকতা ও নেতিবাচক সফলতাই দ্বিতীয় জীবনের ব্যর্থতা। আমরা সবাই প্রথম জীবন থেকে দ্বিতীয় জীবনের নিশ্চয়তাটুকু নিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করি। কোন অনিশ্চয়তাই যেন প্রথম জীবনের বিদায় বা জীবনাসন না ঘটে। তবে আল্লাহ মঙ্গলময় ও ক্ষমাশীল তিনি আমাদের সকলে বেহেস্তে নেবেন এবং নেয়ার জন্য বিনামূল্যের ব্যবস্থাও করেছেন। তাই আসুন আমরা আনন্দ করতে করতে বিনামূল্যের ব্যবস্থার দিকে ফিরে যাই। পাক কালামে লিখা আছে তোমরা আনন্দ কর; আবারও বলি আনন্দ কর। আনন্দের সহিত তোমাদের সকল চাওয়া ও পাওয়ার বিষয় আমার কাছে নিয়ে আস। আমি সকল অবস্থায়ই তোমাদের আনন্দিত দেখতে চাই। তোমাদের সকল কিছুই দেয়া হবে। নিশ্চিত দেয়া হবে। কোন সন্দেহ ও দু:খ নয় বরং আনন্দ কর আমাকে নিয়ে আনন্দ কর। আমার সকল আনন্দই তোমাদেরকে দেয়া হবে। আবার এও লেখা আছে যেন আমরা সকলের জন্য মনযোগী হই। আসমান আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করছে, আর আকাশ তুলে ধরছে তাঁর হাতের কাজ। আমরাও তার গুণগান, প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করছি; করব এবং প্রতিনিয়তই করব।
পৃথিবী থেকে অনেকেই বিদায় নিয়েছেন এবং আবার অনেকেরই বিদায় নেয়ার সময় হয়েছে তাই যারা নিয়েছেন এবং আর যারা নিবেন তাদের জীবনের দিকে তাকান এবং তাদের জীবনের ভাল ও মন্দগুলোকে দেখেন তারপর চিন্তা করে নিজের জীবনের দিকে মনযোগী হয়ে আগামীর কর্তব্য স্থির করেন। সকল অবস্থায়ই আনন্দ করার মত রসদ যুগিয়ে যান এবং সকল অবস্থায়ই আনন্দিত থাকার ব্যবস্থার ব্যপ্তি বৃদ্ধি করুন। বিশ্ব পরিস্থিতি একেক সময় একেক দিকে মোড় নেয় কিন্তু আমাদের জীবনের পরিস্থিতি শুধু একদিকেই মোড় নেয় আর তা হলো শেষ গন্তর্বের দিকে বা মৃত্যুর দিকে। তাই দোষহীন এই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাধনে নিজেকে নিয়োজিত করুন। শান্তির মৃত্যু এবং আনন্দের মৃত্যু হিসেবে মৃত্যুকে গ্রহণ এমনকি বরণ করার সকল মানুষিকতা অর্জন করুন। পৃথিবীর চাকায় শয়তানের একক আধিপত্যে এখন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং শয়তানের আধিপত্যের অবসানে নতুন বহুধা বিভক্ত শয়তানের বিভক্তি পরিলক্ষিত হচ্চে। তাই এই বহুধাবিভক্তিতেই শয়তানের ক্ষমতার সমাপ্তি ঘটবে আর আল্লাহর চীরস্থায়ী ক্ষমতার জয়জয়াকার হবে। আসুন ধৈয্য ধরে সকল অবস্থায় স্থির থাকি এবং শয়তানের বহুধাবিভক্তিকে স্বাগত জানাই। আল্লাহর সান্নিধ্যে থেকে সকল অবস্থাকেই ইতিবাচকভাবে মোকাবেলায় মনোনিবেশ করি। আল্লাহর শান্তি, নিশ্চয়তা, নিরপত্তা এবং কল্যাণকর দিকগুলোকে নিয়ে অগ্রসর হই এবং সৃষ্টির কল্যাণে মানবের তরে বিলিয়ে দিয়ে আল্লাহর কাজের সমাপ্তিতে ভুমিকা রাখি। আনন্দের পরিপূর্ণতা আনয়নে কাজ করি। আনন্দের নিশ্চিত নিশ্চয়তায় কাজ করি, সকলকে নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে নিয়োজিত থাকি। আনন্দ হউক সকলের। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, উঁচু-নিচু ভেদাভেদ যেন আনন্দে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরী করতে না পারে সেইদিকে মনযোগী হই। নির্মল আনন্দ সকলের; সকলের তরে সকলে আমরা; প্রত্যেকেই আমরা পরের তরে এই বানীর শক্তিমত্তায় বলিয়ান হয়ে আনন্দের সহিত শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা নিয়ে অগ্রসর হই। জয় আমাদের নিশ্চিত; জয় বাংলা।