প্রশান্তি ডেক্স॥ প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বরিশালের আগৈলঝাড়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পরে গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে সালিশ বৈঠকে বিষয়টি ধামচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সালিশে অভিযুক্ত রনি মোল্লাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ না করার মুচলেকা দেয় সে। অভিযুক্ত রনি রাংতা গ্রামের ইউনুস মোল্লার ছেলে এবং সরকারি গৌরনদী কলেজের শিক্ষার্থী।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রী বলে, গত ছয় মাস ধরে রনি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে সে আমাকে উত্ত্যক্ত করতো। পথরোধ করে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে গালাগালি ও খারাপ আচরণ করতো। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চালায়। এ সময় কথা বলতে অসম্মতি জানালে আমাকে মারধর করে ও নির্যাতন করে। পরে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে রনি পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দিনমজুর বাবা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, সহকারী শিক্ষক বাবুল বালা ও হেমায়েত উদ্দিন বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য মেয়েকে শাসিয়েছে। তারা বলেছে যে আপস মীমাংসা করে দেবেন তা যেন মেনে নেই। সালিশ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে সালিশে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাংতা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, বৈঠকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। মেয়ের বাবা স্থানীয় পর্যায়ে আপস মীমাংসায় রাজি হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে জন্য অভিযুক্ত রনি মোল্লাকে শাসিয়ে তার ও অভিভাবকের মুচলেকা আদায় করেছেন।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিুকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সর্বসন্মতিক্রমে অভিযুক্ত বখাটেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যা ছাত্রীর পরিবারকে দেওয়া হবে। এছাড়া অভিযুক্ত রনি ও তার অভিভাবকের মুচলেকা রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য বিদ্যালয়ে বহিরাগত কেউ ঢুকলে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানারও সিদ্ধান্ত হয়।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজারুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।