ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ প্রকাশ্যে দিবালোকে কমান্ডোস্টাইলে কসবা পৌর এলাকার পানাইয়ারপাড় গ্রামে দুই সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে, দরজা, জানালা ভেংগে নগদ ৩ লাখ টাকা ৮ ভরি স্বর্ণালংকার ১টি আইফোনসহ ৪টি মোবাইল সেট নিয়ে যায় এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা বাড়ির মহিলাদেরকেও মারধোর করে।
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গত শনিবার ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তরকৃতরা হলেন; মহসিন মিয়া (২৬) পিতা জয়নাল আবেদীন গ্রাম– কাঞ্চনমুড়ি, শরিফ মিয়া (২৬) পিতা– দেওয়ান মিয়া, গ্রাম– কৃষ্ণপুর, আকরাম মিয়া (২৪) পিতা– মাক্ক মিয়া, গ্রাম– কাঞ্চনমুড়ি, সিয়াম মিয়া (২৩) পিতা– বাবুল মিয়া, গ্রাম– কাঞ্চনমুড়ি, জাকির মিয়া (২৫) পিতা– ইদন মিয়া, গ্রাম– কাঞ্চনমুড়ি।
থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে প্রকাশ গত বৃহস্পতিবার সৌদী প্রবাসী আল আমিন ও আবু কাউছারদের বাড়িতে সকাল ১০ টায় এলাকার একদল চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী দেশিয় অস্র্র নিয়ে প্রবাসীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এরা ঘরের দরজা ও জানালা ভেংগে মহিলাদের মারধোর ও জিম্মী করে ঘরের নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, মোবাইল সেট ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়। আল আমিনের মা আয়েশা খাতুন (৬০) বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাঁর মুখে দা দিয়ে আঘাত করে। এতে তাঁর তিনটি দাঁত তাৎক্ষণিক ভেংগে পড়ে যায়। তিনি এখন ডাক্তারের চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রবাসী আল আমিনের বাবা আবুল কাশেম (৭০) জানান; তাদের বাড়িটি গ্রামের খালের অন্য প্রান্তে হওয়ায় তাদের আর্ত চিৎকার বাহিরে পৌছায়নি। এছাড়া সন্ত্রাসীরা একথা কাউকে এমনকি পুলিশকে না জানাতে হুমকী দিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ খালের পাড়ে বসে থেকে পর্যবেক্ষণ করে বাড়ি থেকে যাতে কেউ বাহিরে না যেতে পারে। দুর্বৃত্তরা যাওয়ার পথে বাড়ির ৩টি সিসি ক্যামেরা নিয়ে যায়। তবে সিপিউ রেকর্ড থেকে উদ্ধার করা তাদের ছবি পরিস্কার চেনা যায়। কারণ আগের রাতেও তাঁরা বাড়িতে এসে ঘুরাঘুরি করেছে বলে সিপিউর রেকর্ড করা ছবিতে দেখা যায়।
দুর্বৃত্তরা চলে গেলে আল আমিন ও কাউছারের বাবা আবুল কাশেম পাশবর্তি গ্রাম কৃষ্ণপুরের বাসীন্দা কসবা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনির হোসেন, ওয়ার্ড কমিশনার আলাল মিয়ার কাছে এ ঘটনা জানায়। পরে গ্রামের লোকজনও এই নারকীয় ঘটনা এসে দেখে যায়। পরে বাড়ির গৃহকর্তী আলামিন ও কাওসারের মা আয়েশা খাতুন (৬০) ১৪ জনকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ গত শনিবার ৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। কসবা থানা ও.সি মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ভুইয়া জানান; ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকলকেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। খোজ নিয়ে জানা যায় এসকল যুবকদের অধিকাংশই নানারকম অপরাধের সংগে জড়িত।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনির হোসেন জানান; প্রকাশ্য দিবালোকে এ ধরণের ডাকাতি মেনে নেয়া যায় না। তিনি বিষয়টি উদ্ধেগজনক বলে মন্তব্য করেন।