ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ওসি ঢাকায় আছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন তাই এক সপ্তাহেও মামলা হয়নি। মামলার বাদী সেন্টু চন্দ্র দাশ ,ভাই কসবা মহিলা কলেজের প্রভাষক শংকর চন্দ্র দাশ ও পিন্টু চন্দ্র দাশকে মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে প্রতিপক্ষ ভূমি দস্যু হামলা কারীরা। ফলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকান্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠছে কসবায়।
কসবা উপজেলা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে বুড়িনদীর তীরে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী মন্দভাগ বাজার । বাজারে ভূমিদস্যু দাঙ্গাবাজদের দ্বারা পর পর দুইবার মারাতœক জখম হওয়া পরও থানায় অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার পায়নি ভূক্তভোগী সেন্টু দাশের পরিবার। থানায় বার বার ধন্যা দিয়েও নানা অজুহাতে কাল ক্ষেপন করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা । অন্যদিকে আসামীরা ঘুরেন দাপটের সংঙ্গে। আবার হুমকীও দিচ্ছেন।
থানার দায়েরকৃত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সংগে কথা বলে জানা যায় গত ৩ জুন শুক্রবার মন্দভাগ বাজারে চারুয়া মৌজার ২৭৭নং বর্তমান দাগে সেন্টু দাশের ১৫ শতক দোকান ভিটার পাশে পুরানো গাছ–গাছালি অবৈধভাবে কাটতে থাকে পাশ্ববর্তী খোকন দাশ,নান্টু দাশ, সুকুমার দাশ,হেমন্ত দাশ,সমিরচন্দ্র দাশসহ ৮/৯ জন ব্যক্তি। সেন্টু দাশ ও তার ভাই কসবা মহিলা কলেজের প্রভাষক শংকর চন্দ্র দাশ,পিন্টু দাশ,সুধির দাশ, বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে সকলকে রক্তাক্ত জখম করে। দায়ের কুপে প্রভাষক শংকর দাশের মাথায় ৭টি সিলি লেগেছে। জখমি হওয়ার ফলে কলেজেও যোগ দিতে পারছেন না ।তাদের তিন ভাই কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
গ্রামের প্রবীন ব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলাম ও আব্দুস সোবহান বলেন– সেন্টু দাশের বাবা মৃত মনমোহন দাশ অনেক সহায় সম্পদের মালিক। নব্বই দশকের শেষ দিকে খোকন চন্দ্র দাসরা ১৫ শতক ভিটি জায়গা ভাড়া নেয় কৃত্রিম মৎস্য হেচারী ও প্রজনন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য। বর্তমানে ওই হেচারিতে প্রজনন করা হয় না। সেন্টু দাশের বাবা ও দাদুর নামে সকল কাগজপত্র হওয়া সত্বেও ওই জারগাসহ আরো ৫৪ শতক জায়গা দখল করার পায়তারা করছে খোকন দাশ গংরা।
ইতোপূর্বে এ বছরের ১১ এপ্রিল ও সেন্টু দাসের ভাই মন্টু দাসকে বাজার থেকেবাড়ি যাওয়ার পথে পথরোধ করে কুপিয়ে মারাতœক জখম করে। সেন্টু দাস ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ প্রতিপক্ষের লোকদ্বারা প্রভাবিত হয়ে মামলায় নেয় নি। পরে সেন্টু দাস আদালতে মামলা করেন। আদালত থানাকে মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তত্বের নিদের্শ দিলে এস আই রওশন ওই মামলা তদন্ত করে মাত্র ১ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জসিট প্রদান করেন। সেন্টু দাসের ভাই মন্টু দাস বলেন,পুলিশ যদি সঠিক দায়িত্ব পালন করতো তা হলে আমার তিন ভাই এমন রক্তাক্ত জখম হতো না । গ্রামের একটি প্রভাবশালী মহল চায় আমাদের সম্পদ ফেলে চলে যাই। বায়েক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কসবা মহিলা কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম বলেন– খোকন চন্দ্র দাসের সঙ্গে একটি প্রভাবশালী মহল রয়েছে। তারা নৈপথ্য থেকে কাজ করছে। তাদের উদ্দেশ্য এদের নির্যাতন করলে এ সকল সম্পদ ফেলে ওরা ভারত বা অন্যত্র চলে যাবে। এক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকাও দুষ্টের দমন নয়।
গত বুধবার রাতে কথা হল কসবা থানা অফির্সাস ইনচার্জ আলমগীর ভূইয়ার সংগে। ওইদিনই ঢাকা থেকে এসেছেন তিনি।
সেন্টু দাসের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করতেই বললেন, মামলাটি আগামীকালই রেকর্ড করা হবে। ভিকটিমরা ৩ জুন থানায় এসেছিল। আমিই দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়েছি । মামলা রেকর্ড হলনা কেন ? প্রশ্ন করতেই জানালেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমরান ছুটিতে আছে। তিনি তাকে ফোন করে জানলেন কখন আসবেন থানায়। ওপ্রান্ত থেকে জবাব এল স্যার কালকে আসছি স্যার। ওই অভিযোগের বিষয়ে কথা বললেন ওসি আলমগীর ভ্ইুয়া। এসেই মামলা রেকর্ড করবেন জানালেন দারোগা ইমরান। আজ শনিবার সকালে সেন্টু দাসকে ফোন করলে তিনি আমার সংবাদকে জানান মামলার আসামী হেমন্ত দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত খোকন চন্দ্র দাসকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে বাড়িতে নেই।