প্রশান্তি ডেক্স॥ ভাগ্য বদলের আশা নিয়ে দুবাই গিয়েছিলেন হবিগঞ্জের খাইরুল হাসান। কিন্তু এখন তিনি হতাশ। অনিশ্চয়তায় কাটছে প্রতিটি দিন। কোনও রকমে থাকার জায়গা জোগাড় করতে পারলেও, খাবারের খরচ জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ৫ তারকা হোটেলে ৬৪ হাজার টাকা বেতনের চাকরির ভরসায় দুবাই যান খাইরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘টাকার অভাবে গত এক মাস ভাত চোখে দেখিনি, একটা রুটি খেয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছি।’
কয়েক দফা বাঁধা পেরিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুবাই পৌঁছান খাইরুল। তিনি বলেন, ‘মুহিদ নামে এক বন্ধুর কথায় দুবাই আসি। সে আমাদের গ্রামের লোক। সে নিজেও তিন-চার বছর ধরে এখানে আছে। মুহিদ বলেছিল, ৬৪ হাজার টাকা বেতনে ৫ তারকা হোটেলে কাজ পাবো। আসার পর দিন থেকেই কাজে যোগ দিতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমবার বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন আমাকে দুবাই আসতে না দিয়ে অফলোড করে দেয়। তারপর মুহিদ সম্ভবত এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্ট করে ৩০ হাজার টাকায়। এরপর করোনার কারণে ফ্লাইট বন্ধ ছিল। পরে জানুয়ারি মাসে এখানে আসি। তিন লাখ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে এ পর্যন্ত আসতে।’
দুবাই এসেই খাইরুল বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে কাজের সন্ধানে দিন কাটছে তার। ধার-দেনা করে আসায় বাড়ি ফিরে যাওয়ার চিন্তাও করতে পারছেন না। খাইরুল বলেন, ‘প্রতিদিনই কাজের সন্ধানে বের হচ্ছি, কিন্তু কাজ পাচ্ছি না। ১০-১৫ দিন ঘুরে ঘুরে বুঝলাম, আমি প্রতারণার শিকার। পরে একটা জায়গায় বাসা ঠিক করি। দেশ থেকে টাকা এনে চলতে হয়।’
শুধু খাইরুল নয় শত শত মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত গিয়ে। আকাশছোঁয়া ভবন ও বিলাসবহুল আরব আমিরাতের বিভিন্ন পার্কে, স্টেশনে, খোলা আকাশের নিচে কাঁথা মুড়ি দিয়ে রাত কাটান অনেক বাংলাদেশি। ভ্রমণ ভিসা নিয়ে এখানে কাজের সন্ধানে এসে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। ভিজিট ভিসা নিয়ে প্রতারণার ফাঁদে পা না দিতে বিদেশগামীদের অনুরোধ জানিয়েছেন দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।