বাংলাদেশের কয়েটি জেলায় বন্যার ছোবলে পরাভুত। প্রকৃতির অবলিলায় আজ সবই ভেসে যাচ্ছে। ভাসমান দৃশ্যমানতা এবং সৃষ্টির সেরাজীবের অসহায়ত্য এক অনন্য নজির এবং আগামীর জন্য শিক্ষা। আমরা বন্যা দেখেছি এবং শুনেছি আর মোকাবেলাও করে যাচ্ছি। তবে বেশীরভাগ বন্যা-ই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ভাগ্যাকাশে উদিত হয়েছিল। আজ আমাদের যে বন্যার ছোবল তাওকি ঐ অভিজাত শ্রেণীর অভিলাস থেকেই কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট ফাঁদে পা দিয়েছি এবং মোকাবেলা করে এগিয়েও যাচ্ছি কিন্তু এতে যে ক্ষতি সাধিত হচ্ছে তার থেকে বেড় হয়ে আসা জরুরী। নিরীহ ও নিরপরাধ প্রাণের বিয়োগে এমনকি প্রকৃতির সৃষ্টির নিয়মতান্ত্রিক গতিময়তায় বাধার সম্মুখিন হওয়া অবস্থার অবসানে এই সৃষ্টির সেরা জীবকেই কাজ করতে হবে। তবে এতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টির মূলেও কিন্তু আজ সৃষ্টির সেরা জীবরাই জড়িত। তবে তাদের যোগানদাতা, প্রেরণাদাতা এবং উৎসাহ ও উদ্দিপনায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ত্রাতা হলো ইবলিশ (শয়তান)। এখানেই সৃষ্টির সেরাজীবের পরাজিত রূপ প্রকাশিত হয়েছে। ঐ ইবলিশ নবী রাসুলদেরকেও প্রলোভিত করতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু কোন কোন সময় সফলও হয়েছে। তবে ইবলিশের প্রলোভনে আজ মানবকুল দিশেহারা। এখনও সঠিক অবস্থানটুকু ঠিক করতে পারেনি আশরাফুল মাকলুকাতদ্বয়। তাই ঐ ইবলিশ তার প্রতিজ্ঞা এবং প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে মরিয়া। এই ক্ষেত্রে খোদার সান্নিধ্যের লোকরাও আজ বিব্রত। খোদার সান্নিধ্যবিহীন লোকদের কৃতকর্মের রেশ টেনে ধরতে ক্ষমা, ভালবাসা, সংশোধন করনে ও মোনাজাত অব্যাহত রেখে একবুক আশা ও ভরসা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে দিনের শেষে ও যুগের শেষে এর ইতিবাচক সুফল সুনিশ্চিত।
একবুক অনিশ্চয়তা ও হতাশার মাঝেই জন্ম হয়েছিল আজকের এই উদীয়মান বাংলাদেশের। এই দেশের জন্মদাতা এবং জন্মদাতাকে সহযোগীতাকারীরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং কেউ কেউ আজও জীবিতবস্থায় সহযোগীতা করে যাচ্ছেন। সেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধর হাতে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ আজ যৌবনে পা দিয়ে পরিপক্কতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁরই ঔরসজাত কণ্যা বঙ্গতনয়া শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বের হয়ে উন্নত দেশ এর তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে এবং সুসমামন্ডিত সোনার বাংলার প্রকৃত রূপ, রস ও গন্ধে ভরপূর করে পৃথিবীর বুকে সৌরভ ছড়াচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ উদ্ভোধন হচ্ছে স্বপ্নের পদ্দা সেতু। জমুনা সেতু, পদ্মা সেতু এবং শতভাগ বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন আর সার্বিক অবকাঠানোগত উন্নয়নই যেন আজ নতুন করে চেনাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর হাতে জন্ম নেয়া এই নতুন বাংলাদেশকে। মেট্টো রেল, পাতাল রেল, উড়াল পথে গাড়ি চলাচল এবং নতুন পরিকল্পনায় পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিজ্ঞানের নব ছোয়াই এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গতিময়তা যেন বুলেট ট্রেনকে হার মানিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই গতিময়তায় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে আমাদের নেতিবাচক রাজনীতি এবং দেশ ও উন্নয়ন বিরোধীদের চক্রান্ত আজ দৃশ্যমান, পাশাপাশি উন্নত দেশের হিংসার ছোবলেও আক্রান্ত, আরো দৃশ্যমানতা দেখা যায় প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগের ছড়াছড়িতে। তারপরও বলতে পারি ঐসকল প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ঠেলে সঠিক পথে এবং সঠিক গতিময়তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ ও সরকার। সফলতার শতভাগই সরকারের এবং সরকার প্রধানের; তার সাথে যুক্ত হচ্ছে ইতিবাচক মনোভাবের কান্ডারীদের; যারা সরকারকে সমর্থন ও সহযোগীতা অব্যাহত রেখে নিজেরা কষ্ট করে আগামীর ভীতকে মজবুত করছেন।
এই উন্নয়নে পদ্মা সেতু নতুনত্ব এনেছেন যে, আমার টাকায় আমার সেতু এরই নাম পদ্মা সেতু। এই শ্লোগানের যোগানদাতা বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণ এবং এই উৎসে ও প্রেরণায় আর সাহসী ভুমিকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করার দৃঢ় মানুসিকতা এবং এর বাস্তবায়নের দৃশ্যমান রূপকার বাংলার প্রধানমন্ত্রী মানবতার মা এবং নের্তৃত্বের বিশ্ব অহংকার বঙ্গজননী ও বিশ্ব বিভেক বঙ্গতনয়া শেখ হাসিনা। উন্নয়ন অংশীদ্বার সকলেই প্রশংসা ও ধন্যবাদের প্রাপ্তী ঘরে তোলার সময় এখন। তবে পদ্মার বুকে জেগে উঠা সেতু বাংলাদেশকে দিয়েছে আগামীর নিশানা। কেউ থাকুক আর নাই থাকুক বাঙ্গালী পেরেছে এবং পাড়বে সেই সাহস ও সক্ষমতার বাস্তব উদাহরণ। তাই আগামীতে এই জাতিকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এই এগিয়ে যাওয়ায় কারো বাধাই যেন কোন কাজে লাগবে না বরং সকলেই এগিয়ে যাওয়াতে অংশিদ্বার হওয়ার আগ্রহে জড়িয়ে যাওয়ার মুহ: মুহ সুযোগ কাজে লাগাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই সাফল্যের স্বৃকৃতী দিয়ে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছে এবং পাঠাবে। এই নর্ব দিগন্তের উন্মোচনে শরিক হতে পেড়ে গর্বিত হচ্ছে এবং হওয়ার আশা পোষণ করছে। তাই এখনও যারা পিছপা হটছেন তাদেরকে বলছি আর নয় মিথ্যা বুলি এবং নেতিবাচকতার গালমন্দ বা বুলি। আসুন সত্যকে সত্য বলে মেনে নিয়ে আগামীর উন্নয়নে অংশীদ্বার হই। কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর সাহায্য ও ক্ষমা প্রার্থনায় মনোনিবেশ করি। তিনি আপনার ও আমার জন্য মনযোগ সহকারে অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছেন যেন আমরা তাঁর কাছে ফিরে যাওয়ার সাথে সাথেই আমাদেরকে ক্ষমা করে তাঁর সান্নিধ্যে এবং অভিপ্রায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। তিনি চান আমরা সুখে ও শান্তিতে এবং নিশ্চিত নিশ্চয়তায় আর নিরাপত্তায় থেকে জীবন ও কর্মকে উপভোগ করতে পারি। সুতরাং সেই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় এবং পরিকল্পনায় আর পরিচালনায় থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের চাওয়া-পাওয়া হউক।
চারিদিকে থৈ থৈ করা বন্যার পানি যেন প্রমত্তা ও বিশ্বের ১ম শ্রেণীর খরশ্রোতা নদীর বুকে জেগে উঠা পদ্মা সেতুকে স্বাগত জানাচ্ছে। জাতি আজ গর্বীত এবং সেই সাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ট নদীর ঢেউ এবং ঢেউ এ সৃষ্ট সুর যেন পদ্মা সেতুকে স্বাগত জানিয়ে জয়ধ্বনী করছে। পদ্মা সেতু উদ্ভোধন শেষেই যেন বন্যার পানি পুর্বের জায়গায় ফিরে গিয়ে প্রমান করবে আমরা শুধু উদ্ভোধনের ক্ষণ রাঙ্গিয়ে তুলতেই এই অল্প সময়ের প্রতিবদ্ধকতা ও কষ্ট দিয়েছি; ক্ষমা করো আমায়। অপরদিকে এও ভাবা যায় যে, এই অসম্ভবকে সম্ববে পরিণত করার নিন্দুকের মত ঐ বন্যাও আনন্দ উপভোগে বাধা দিতে আরেকটি প্রতিবন্ধকতা দেখিয়েছে। কারণ নদীর ক্ষমতাকে রহিত করণের অসন্তুষ্টিই হলো উদ্ভোধনের আগে বন্যার ছোবল। যাই হউক নেতিবাচকতা পরিহার করে ইতিবাচকতা আকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে যাবো এবং সকল প্রতিবন্ধকতায় সফলতার অর্জন ঘরে তুলব এই প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হয়ে আগামীর কল্যাণকার দায়িত্ব সুসম্পন্ন করব।
ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে। ধন্যবাদ জানাই বাংলার সকল জনগণকে। ধন্যবাদ জানাই যারা এর বিরোধীতা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন তাদেরকে কারণ তারাই আজ পদ্মাকে জাগ্রত করে রেখেছেন এবং বাঙ্গালীকে দেখিয়েছেন সত্য, সততা, সাহস এবং সক্ষমতা। তাই এই অর্জনকে গাথুনী হিসেবে পুজি করে আগামীর আরো বড় পদক্ষেপ নেয়া এবং সফলতার পথ প্রসস্তকরণে এই পদ্মা সেতু আমাদের জীবনে মাইলফলক হয়ে থাকবে। ইতিহাস হয়ে থাকবে সকলে যারা নিরলস পরিশ্রম করে এই বাস্তব দৃশ্যমানতা প্রত্যক্ষ করিয়েছেন। আজ গর্বভরে এই অর্জনকে উৎসর্গ করতে চাই সেই জীবন বাজী রেখে দেশ স্বাধীনে নিয়োজিত বীর সেনানিদের ও যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই ইতিহাস রচনায় ভুমিকা রেখেছেন। আল্লাহ আমাদের সহায় হউন… আমীন॥