স্বপ্নের যাত্রায় প্রতিবন্ধকতা একটি উছিলা বা বাহানা তবে এই যুগে ঐ প্রতিবন্ধকতায় নাকাল মানবকুল। নানা রকম প্রতিবন্ধকতার শিকলে বন্ধি সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত। আমার দেখা এইসকল প্রতিবন্ধকতাগুলো সুখ, শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তায় প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। ঐ প্রতিরোধ মোকাবিলা বা কাটিয়ে উঠার জন্য আমরা হন্য হয়ে ছুটাছুটি করি বিভিন্ন মহলে বা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের কাছে। কিন্তু কখনোওকি ভেবে দেখেছি ঐ সকল প্রতিবন্ধকতায় আমরা ছুটে যাচ্ছি স্ব স্ব ধর্মের আবরণে স্ব স্ব সৃষ্টিকর্তার কাছে। না তা নেহায়েত খুবই কম দেখা যায় বা অনুভব করা যায়। কারণ জাগতিকতায় অন্ধ হয়ে আমরা জাগতিকদের কাছেই ধন্যা দিচ্ছি। কিন্তু এই জাগতিকদেরও একজন আছেন যিনি তাদেরকেও বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবেন তা পরখ করছি না।
আমাদের প্রতিবন্ধকতাসকল কাটিয়ে উঠতে এখন দিশেহারা সরকার ও জাতি। কারণ একটির পর একটি প্রতিবন্ধকতার ছোবল জোড়ালো আকার ধারণ করছে। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় শতভাগ সক্ষমতার ছাপ রেখে সফলতার শীর্ষে এখন দেশ, সরকার ও জনগণ। কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতার বেড়াজাল ছিন্ন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার চেতনার মুলে নতুন চক্রান্ত এবং নতুন ষড়যন্ত্র হানা দিয়ে স্থবির করে দিতে মরিয়া আর ঐ মরিয়া অবস্থার উন্নয়ন ঘঠিয়ে দেশ, সরকার ও জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে সফলতার ছাপ রেখে যাচ্ছে কিন্তু ঐ প্রতিবন্ধকতা থেমে নেই বরং নতুন কৌশলে এগুচ্ছে। প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতাও নতুন করে হানা দিচ্ছে আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রসরতাকে। এই প্রাকৃতিক প্রতিবন্দকতাকে মোকাবিলা করে অনেকদূর এগিয়ে যাওয়ার পরই আবার নতুন প্রতিবন্ধকতার আক্রমণ হানা দিচ্ছে, যেমন বন্যা, মহামারি, যুদ্ধ এবং অন্তরের গহিনের ষড়যন্ত্র। এই সকল মোকাবিলায় আমরা আজ দিশেহারা।
স্বপ্নের যাত্রায় বা ভবিষ্যতের আশা পূরণের যুদ্ধে দিশেহারা হয়ে গতিপথ হারিয়ে দিশাহীন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার আগে বা পরে আমাদের জন্য আশার আলো ছড়াচ্ছে আমাদের সৃষ্টিকর্তা। কারণ তিনি আমাদের ছেড়ে যাননি বরং আমরাই তাঁকে ছেড়ে গিয়েছি। তারপরও তিনি তাঁর অসীম ও অপার ক্ষমা এবং ভালবাসার বন্ধনের গভীরতা দিয়ে আমাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকছেন যেন আমরা তাঁর কাছে ফিরে আসি এবং তাঁর পরিকলল্পনার মধ্যে দিয়েই জীবনের সফলতায় পরিপূর্ণতা আনয়ন করি। তিনি আমাদেরকে সৃষ্টির পুর্বেই আমাদের জন্য পরিকল্পনা করে রেখেছেন আর সেই পরিকল্পনা আমাদের স্বপ্নের যাত্রায় সফলতার পরিপূর্ণতার জন্য। আমি সৃষ্টিকর্তার সেই অমীয় বানীটি এখানে উল্লেখ করছি – “তোমাদের জন্য আমার পরিকল্পনার কথা আমিই জানি, আর সেই পরিকল্পনা তোমাদের মঙ্গলের জন্য; উপকারের জন্য, অপকারের জন্য নয়; বরং সেই পরিকল্পনার মধ্যেদিয়েই তোমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ হবে”। হ্যাঁ আমরা আর হন্য হয়ে ছোটাছুটি না করে বরং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে ফিরে আসি এবং তাঁর সেই সৃষ্টিপূর্ব পরিকল্পনার সন্ধান করে সামনে অগ্রসর হই। নিশ্চিত জিবনের জন্য, শান্তির জন্য, নিরাপত্তার জন্য, নিশ্চয়তার জন্য, জীবনের পরিপূর্ণতার জন্য এমনকি সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির অভিপ্রায় পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য আমরা আমাদের এই দৈন্যদশায় ভগ্ন হৃদয়ে পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে ফিরে যায় আর তাঁর অফুরন্ত, রহমত, বরকত, এবং দয়া-মায়ায় নিজেদেরকে পরিপূর্ণ করি। এই সময় সৃষ্টিকর্তার আরো একটি শক্তিশালী আয়াত আমি বলতে চাই-“তোমরা যারা ভাড়াক্লান্ত, পরিশ্রান্ত তোমরা সবাই আমার কাছে এসে, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব, তোমাদের সমস্ত কিছু আমার উপর ছেড়ে দাও; আমার কাছ থেকে শেখ, আমার জোয়াল তোমাদের কাঁধে তুলে নাও, যা হালকা ও বয়ে বেড়ানো সহজ; কারণ আমার স্বভাব নম্র।”
স্বপ্ন পুরণের শেষ নেই তাই সীমিত সময়ের জীন্দেগীতে স্বপ্নের লাগামও টানা দরকার। নতুবা ঐ সূদুরপ্রসারী স্বপ্নই আমাদেরকে বিনাশ করার হাতিয়ারে পরিণত করবে। তাই স্বপ্ন এবং চিন্তা ও পরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন যেন হয় মানবতার কল্যাণে, সৃষ্টির কল্যাণে এককথায় অপরের প্রয়োজন পুরণের হাতিয়ারে। তাহলেই স্বপ্ন পুরন এবং নতুন স্বপ্নের দ্বার উন্মোচনে সকল প্রতিবন্ধকতা জয় করা সহজ ও সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপে সুসম্পন্ন হবে। আজ পৃথিবীর এই করুন দশার জন্য দায়ী আমরাই এবং আমরাই পারি পৃথিবীর করুন দশার অবশান করে শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা আর আগামীর জন্য অনিন্দ সুন্দর পাপহীন, স্বার্থ্যহীন এবং লোভ-লালসাবিহীন পৃথিবীর দ্বার উন্মোচন করতে। ক্ষমা ও ভালবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে একে অপরের কল্যাণে নিয়োজিত থাকতে বদ্দপরিকর। এই ব্যাপারেও সৃষ্টিকর্তা তাঁর বাক্যদ্বারা স্বরূপ উন্মোচন করেছেন-“তোমরা তোমার মাবুদ আল্লাহকে মহব্বত করবে (সমস্ত দিল, সমস্ত প্রাণ, মত ও অন্তর দিয়ে), তারপরের দরকারী হুকুম হলো তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে”। হ্যা তাই যদি হয় তাহলে এই পৃথিবী আর নয় পাপের অধিন বরং এই পৃথিবীই হতে পারে বেহেস্তের শুরুর পদক্ষেপের প্রথম স্থান।
আজ আমাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য নতুন বাজেট পাস হয়েছে এবং এই বাজেট স্বপ্ন পূরণের প্রাথমিক দিকনির্দেশনা মাত্র। কিন্তু স্ব স্ব অবস্থান থেকে এই বাজেট বা গাইডলাইন অনুসরণ এবং অনুকরণ করে অগ্রসর হলেই স্বপ্ন পুরণ হবে তবে এরই সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার সংশ্লিষ্টতা জড়িয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। পদ্মা সেতু এবং বঙ্গবন্ধু টানেল কিন্তু স্বপ্ন পুরণের দৃষ্টান্ত যা সম্পূর্ণই সৃষ্টির কল্যাণে সর্বদা এবং সার্বক্ষণিক নিয়োজিত। তাই মানবতা, মানবিকতা এবং নি:স্বার্থ ও নি:শর্ত জীবন পদ্ধতি এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় কার্যে পরিণত করে দৃশ্যমান রাখাই আমাদের আজন্ম লালিত স্বপ্নের ঠিকানা হউক। অল্পদিনের দুনিয়াদারিতে যুক্ত হউক স্বপ্নের যাত্রায় প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলার নতুন দ্বার। উন্মোচিত হওক চিরস্থায়ী শান্তির দরজা এবং প্রসারিত হউক সকল সৃষ্টীর গন্তর্ব্যের প্রবেশ পথ। আশা, ভরসা, বিশ্বাস এবং নির্ভরতা একমাত্র সৃষ্টিকতায়; তারপরে সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে অগ্রসর হওয়াই আমাদের সফলতার স্বাধ আস্বাধনে পরিপূর্ণতা দিবে। জয় আমাদের নিশ্চিত যদি আমরা সৃষ্টিকর্তায় নিমজি¦ত থেকে সকল কর্মকান্ডের শুভ সুচনা এবং সমাপ্তকরণে লিপ্ত থাকি। আসছে ঈদে আমাদের সঙ্গে আনন্দ এবং শান্তি ও নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা আর ভালবাসা ও ক্ষমা উৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকুক এই কামনা করেই অগ্রীম ঈদ মোকারক জানিয়ে এখানেই সমাপ্তি টানছি।