প্রশান্তি ডেক্স॥ নাটোরের সিংড়া উপজেলা ও পৌর যুব মহিলালীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে গোল-ই আফরোজ সরকারী কলেজ মাঠে সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সম্মেলনে উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি হিসেবে খাদিজা খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক পদে জ্যোতি সরকার, পৌর সভাপতি হিসেবে সাবানা খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাজনিন সাথীর নাম ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এড. জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি এডভোকেট মানসী ভট্টাচার্য এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, সংসদ সদস্য খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ওহিদুর রহমান শেখ, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি শাহানা আফরোজ শিল্পী, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা জাহান মীম, উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শামিমা হক রোজি প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৈষম্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কন্যা শিশুদের পড়াশোনা অবৈতনিক করে দেন। বঙ্গবন্ধুর পদাংক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারীদের ৬০ শতাংশ কোটা প্রবর্তন করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ তৈরীর ফলে কন্যা সন্তান এখন আর বাবা-মায়ের বোঝা নয়। এখন আর কন্যা সন্তানকে পড়াশোনা না করিয়ে ঘরে বসে রেখে বিয়ের প্রস্তুতির জন্যে যৌতুকের ব্যবস্থা করতে হয়না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ফলে কন্যা সন্তান এখন স্কুলে যায় এবং এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সমাজের দুষ্টু ক্ষত যৌতুক দূর হয়েছে। তিনি নারীদের সম্মান, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। এই প্লাটফর্ম নারীদের কর্মসংস্থান এবং তাদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা তৈরী করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের স্বাবলম্বী হবার সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে। সারাদেশে সাড়ে ৮ হাজার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার তৈরী করে ১ কোটি মানুষকে স্বল্প মূল্যে অনায়াসে দূর্নীতিমুক্ত নাগরিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে একজন করে নারী উদ্যোক্তা কাজ করে যাচ্ছেন। ই-কমার্সে ৩ লাখ নারী উদ্যোক্তা কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে নারীদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সারাদেশে ২ হাজার নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তাকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হবে অচিরেই। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ‘হার পাওয়ার’ নামে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরীর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে নারী উদ্যোক্তারা তাদের শক্তি, মেধা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সার, ই-কমার্স উদ্যোক্তা, কল-সেন্টার এজেন্ট এবং মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হবে।
বিগত ১৩ বছরে সাড়ে তিনশ’ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের বর্ণনা দিয়ে পলক বলেন, অভূতপূর্ব এই উন্নয়ন ৫০ বছরের উন্নয়নকে ছাড়িয়ে গেছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিংড়াতে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্ক, শেখ কামাল ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার এবং টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ২০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।