প্রশান্তি ডেক্স॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনে জড়িত ছয় জন বলে জানিয়েছে র্যাব। তাদের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শুক্রবার (২২ জুলাই) রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারি ও রাউজান উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতার চার জন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
গ্রেফতার চার জন হলেন– চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং নোয়াখালী জেলার চর ভারতসেন এলাকার আমির হোসেনের ছেলে আজিম (২৩); হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং ফতেহপুর ইউনিয়নের জাবেদ হোসেনের ছেলে নুর হোসেন শাওন (২২); চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ফেনী জেলার পরশুরাম থানার বেড়াবাড়ি এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে নুরুল আবছার বাবু (২২); হাটহাজারী কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ঝালকাঠি থানার আশিয়ার এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে মাসুদ রানা মাসুদ (২২)। পলাতক দুজনের একজনের নাম সাইফুল।
চার জনকে গ্রেফতারের পর বেলা ১১টায় বহদ্দাহাট চান্দগাঁও ক্যাম্পে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ।
রবিবার (১৭ জুলাই) বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হন চবির ওই ছাত্রী। ওই সময় তার বন্ধুকেও মারধর করা হয়। রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাওয়ার রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গত বুধবার বিকালে হাটহাজারী মডেল থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারায় এ মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ইস্যুতে নানা আলোচনার মধ্যে গত ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসিক হলে রাত ১০টার মধ্যে প্রবেশের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর ছাত্রীদের রাত ১০টার মধ্যে হলে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা বাতিল এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনের সামনে বুধবার (২০ জুলাই) অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাত্রীরা। রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। সেখানে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ‘চার কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তারা আশ্বস্ত হয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করে হলে ফিরে গেছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে। শিক্ষার্থীদের বলেছি, শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবো।’