প্রশান্তি ডেক্স॥ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) আর নেই। গত শুক্রবার দিবাগত রাত (২৩ জুলাই) আনুমানিক ২টায় (বাংলাদেশ সময়) তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। প্রায় ৯ মাস ধরে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন তার ভাতিজা ফাহাদ রাব্বী সৈকত।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আজ ২৩/০৭/২০২২ ইং বাংলাদেশ সময় আনুমানিক রাত ২টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ইন্তেকাল করেছেন। বিষয়টি আমি ফাহাদ রাব্বী সৈকত আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করছি।’
এদিকে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ডেপুটি স্পিকার যুক্তরাষ্ট্রের এক হাসপাতালে মারা গেছেন। উনার বড় মেয়ের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
ফজলে রাব্বী মিয়া গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০২১ সালের জুন মাসে পেটে টিউমার অপারেশন করা হলে তিনি পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় নানা জটিলতা দেখা দেয়। পরে ওই বছরের আগস্ট মাসে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারত নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে আমেরিকার মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ফয়জার রহমান এবং মাতার নাম হামিদুন নেছা। তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ডেপুটি স্পিকার মৃত্যুকালে তিন মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন। তবে ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পেশায় আইনজীবী ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হন। ১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। দশম সংসদ থেকে তিনি ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া ১৯৭১ সালে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন।