ভজন শংকর আচার্য্য কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ চলতি মৌসুমের বর্ষায় মেলেনি কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। ভাদ্রেও বইছে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ। পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে জমি। আমনের বীজতলা তৈরি থাকলেও জমিতে রোপন করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা উপজেলার কৃষকেরা।
এদিকে দেশ কিছু এলাকায় ঢলের পানি থাকা অবস্থায় কর্দমাক্ত জমিতে আমনের চারা রোপন করলেও অতিরিক্ত তাপমাত্রা মাঠে থাকে চৌচির হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় তথ্য মতে, এবার ১৩ হাজার এক্টর জমিতে রুপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চলতি বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় দেখা দিয়েছে পানি সংকট। এর মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সেচ দিতে পারছেন না কৃষকেরা। পাশাপাশি ন্যায্যমূল্যে মিলছে না সার। ফলে রুপা আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামের কৃষক আবু কাওসার বলেন, ‘ বীচতলা তৈরি করেছি অনেক আগেই। জমিতে পানি না থাকায় বীচতলা রোপন করা যাচ্ছে না।বৃষ্টি নেই।সেচ দিতেও বেশি টাকা লাগে আমরা এখন অসহায়।’ডিপ টিউবওয়েল (গভীর নলকূপ) দিয়ে জমিতে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করলে স্বস্তিতে রোপা আমন চাষ করা সম্ভব; কিন্তু ঘন ঘন লোডসেডিং হওয়ায় তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছে।
আমন চাষাবাদ ব্যাহত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হব আমরা’- বলেন, হাজীপুর গ্রামের কৃষক ফরিদ মিয়া।
গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘বৃষ্টি তো হয় না। ঘন্টায় ৩০০ টাকায় সেচ দিয়ে জমির রোপন করলে ক্ষতি ছাড়া লাভ দেখছি না।’
আলমগীর মিয়া, জানে আলম, জাকের মিয়া সহ স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, আমন চাষ না করতে পারলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
বাজারের সব জিনিসের দাম অনেক বেশি। চাল কিনে খেয়ে জীবন বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। ট্রাক্টর থেকে শুরু করে সেচ দিতে গিয়ে দ্বিগুণ খরচ ছেচেপে মাথার ওপর এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
শ্যালো মেশিন চালক সুমন মিয়া বলেন আগে এক বিঘা জমি পানি দিয়ে ভেজাতে খরচ হতো সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা নিতে হচ্ছে। এতে আমার কিছুটা লাভ হলেও কৃষকের কোন লাভ নেই।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরও একই পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছিল। এবছর পানি এবং বৃষ্টির অভাবে কিছু কিছু এলাকায় এখনো কৃষক চারা রোপণ করতে পারছেন না।তবে অনেক এলাকায় রোপন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে।