ভজন শংকর আচার্য্য কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সবুজ স্বর্ণখ্যাত মাল্টা চাষ। সাইট্রাস জাতীয় এই ফল চাষ কয়েক বছর আগেও সংখ্যায় ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা কৃষকরা।
এখন সেই সংখ্যা কাটিয়ে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন তারা। কম জাগায় এবং অল্প পুঁজিতে লাভ বেশি হওয়ায় মাল্টার বাণিজ্যিক আবাদের দিকে ঝুঁকছে বেকার যুবকরা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে উপজেলায় এ বছর ২২ এক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ হয়েছে। আগামীতে মালটা চাষের পরিধি বাড়াতে তারা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পাচ্ছেন উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে, শুরু হয়েছে মাল্টার চাষ। সবুজ স্বর্ণখ্যাত মাল্টা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করছেন চাষীরা। ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় প্রথম মাল্টার চাষ শুরু হয়। বর্তমানে দিন দিন বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। নিজের দেশের উৎপাদিত মাল্টা খাব বিদেশেও রপ্তানি করব এমন ভাবনায় উজ্জীবিত হয়ে সামনে এগিয়ে চলছেন কসবার সীমান্তবর্তী গ্রাম রামপুরের কৃষক তাজুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে। বেকারত্ব গোছানোর পাশাপাশি উপার্জন করছেন তারা।
বাগানের মালিক তাজুল ইসলাম ও তার ছেলে এরশাদ মিয়া বলেন, অন্য এলাকার মালটার বাগান দেখে উৎসাহিত হয়ে ২০১৭ সালে নিজ জমিতে প্রায় ৫০ শতাংশ জায়গায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাল্টার চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথমে তারা বাগানে মাল্টা এবং কমলার ১০০টি চারা রোপন করেন। পরবর্তীতে নিজের চারা কিনে আরও ১৫০ শতাংশ জায়গায় তিনশ’ মাল্টার চারা রোপন করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ টাকার মাল্টা
বিক্রি ও করেছেন। বাগান করতে খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা তার হিসাবে ওই বাগান করে লাভবান তিনি। প্রতি কেজি মালটা ১৪০ টাকা দরে বাগান থেকে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। কিন্তু সবুজ হওয়ায় পাইকারি ক্রেতারা কিনতে কিছুটা অনিহা প্রকাশ করছেন।
নিজের বাগান ছাড়াও অন্যদের মাল্টার চাষে উৎসাহ দিচ্ছেন বাগানের মালিক এরশাদ মিয়া। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম বলেন এই এলাকা মাল্টা চাষের জন্য উপযুক্ত বিধায় সরকারি সহযোগিতায় ব্যাপকভাবে সবুজ স্বর্ণখ্যাত মাল্টা চাষ করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব।
পাশাপাশি মাল্টার চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণে ও এলাকার বেকারত্ব দূরীকরণে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি প্রচুর আয়বর্ধক এই ফল চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।