প্রশান্তি ডেক্স॥ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনকালে শিলা প্রামানিক (৩০) নামের এক সিনিয়র স্টাফ নার্সকে হাতুড়িপেটার ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটায় মেহেদী হাসান (২১) নামের এক ব্যক্তি।
মোহনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই নার্সকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আট নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তার মাথায় ছয়টি সেলাই লেগেছে।
আহত শিলার বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার সাবাইহাট। তার স্বামীর নাম বিধান পন্ডিত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছেন। আর হামলাকারী মোহনপুর সইপাড়া এলাকার বাসিন্দা রিয়াজের ছেলে মেহেদী (২১)।
ভিকটিমের সহকর্মীদের দাবি, হাতুড়িপেটার পাশাপাশি ওই নার্সকে গলাটিকে হত্যারও চেষ্টা চালানো হয়েছে। তার গলায় এখনও আঙ্গুলের চিহ্ন রয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, নার্স শিলা প্রামাণিক নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের দ্বিতীয় তলায় গাইনি পরীক্ষার জন্য কাজ করছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে মাস্ক পরা এক যুবক তাকে উপর্যুপরি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং তার গলা চেপে ধরে। এ সময় তিনি চিৎকার করে সহযোগীদের ডাকতে থাকেন। হাসপাতালে কর্মরত অন্যরা এগিয়ে এলে ওই ব্যক্তি হাতুড়ি ফেলে পালিয়ে যায়।
মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরিফুল কবির বলেন, ওই লোককে তারা কেউই চেনেন না। এমনকি শিলাও চেনেন না। কী কারণে সে এমনটা করেছে, এটাও তারা জানেন না। শিলা এখানে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কারও বিরুদ্ধে কারও অভিযোগ থাকলে জানাতে পারতেন। কিন্তু এ ধরনের হামলা কেন? এখানে অনেকে সেবা দিতেই তো ভয় পাবেন।
হামলার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ওই নার্স কাজ করছিলেন। এ সময় পেছন থেকে তাকে হাতুড়িপেটা করে এক পর্যায়ে ওই লোক পালিয়ে যায়। পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামির নাম পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তাকে গ্রেফতারে তৎপরতা চলছে।
তিনি আরও জানান, হামলার শিকার ওই নার্স আসামিকে এর আগে কখনো দেখেননি বলে জানিয়েছেন। কেন এমন অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে তা আসামিকে গ্রেফতারের পরই জানা যাবে।
মেহেদী হাসানের বাবা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, তার ছেলে নেশা করে। তার মাথা ঠিক নেই। সে মাঝেমধ্যেই এমন করে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ওখানে যিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যও আসেননি। একেবারে হাসপাতালের বাইরের একজন মানুষ। যেভাবে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। ওই নার্সকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।