নওরিন আক্তার ॥ আমরা অনেকেই মনে করি পানি যত পান করা যায় ততই ভালো। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। প্রয়োজনের চাইতে কম পানি পান করা যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি অতিরিক্ত পানি পান করলেও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অ্যান্ড নিউট্রিশানিস্ট জান্নাতুন নূর নাঈমা।
প্রতিদিন কী পরিমাণ পানি পান করতে হবে?
একজন মানুষ কী পরিমাণ পানি পান করবে সেটা নির্ভর করে তার বয়স, ওজন, আবহাওয়া কিংবা সে কতটুকু শারীরিক পরিশ্রম করছে তার ওপরে। একজন সুস্থ, স্বাভাবিক ও প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে সাধারণত ৮ থেকে ৯ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলে, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালে কিংবা জ্বর বা ডায়রিয়া হলে পানি ও তরল খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। আবার অনেক সময় শারীরিক কিছু জটিলতার কারণে পানি পানের পরিমাণ কমিয়ে দিতে বলেন চিকিৎসকরা। যেমন, ডায়ালাইসিসের রোগী বা নির্দিষ্ট ধরনের কিডনি রোগীদের দিনে ১ লিটার কিংবা আরও কম পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হয়।
পানি বেশি বা কম পান করলে কী হয়?
পানি কম পান করলে ইউরিন ইনফেকশন, ডিহাইড্রেশন, চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি শরীরের হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক রাখে। পানি কম পান করলে হরমোনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া পানি কম পান করলে হজমের গণ্ডগোলও দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি পান করলে চাপ পরে কিডনির ওপর। এতে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। আমাদের শরীরের একটি প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট হচ্ছে সোডিয়াম। পানি বেশি পান করলে সোডিয়াম কমে যায়, একে বলা হয় হাইপোনাট্রেমিয়া। এতে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া কিংবা মস্তিষ্কের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিয়ে পারে।
জানা জরুরি
- সারা দিন অল্প অল্প করে পানি পান করবেন। লম্বা সময় ধরে পানি পান না করা কিংবা একবারে বেশি পানি পান করা- দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস পানি পান করা খুব জরুরি। এতে শরীরের বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি হয়।
- খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি পান করবেন না। এতে অ্যাসিডিটি হয়। খাবার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেও পানি পান করা উচিত নয়। এতে মেদ বেড়ে যাওয়া ও হজমের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। খাবার খাওয়ার আধাঘণ্টা বা ৪০ মিনিট পর পানি পান করুন।