প্রশান্তি ডেক্স॥ জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা। এক কর্মকর্তা দিয়েই চলছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ফলে চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ।
এলাকাবাসী বলছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না। ফলে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য ১৫ কিলোমিটার দূরে দিঘীনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিংবা ৩৫ কিলোমিটার দূরে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এতে ভোগান্তি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ দিয়ে সরকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী উপকৃত হবেন।
বাবুছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দিঘীনালা উপজেলার দুর্গম ও জনবহুল ৫ নম্বর ইউনিয়ন বাবুছড়ার ৪৩ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এটি বাবুছড়া বাজারের পাশে অবস্থিত। এখন জনবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রায় ৩৫ বছরের পুরনো এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিন জন মেডিক্যাল অফিসার, একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ও একজন ফার্মাসিস্ট থাকার কথা থাকলেও আছেন এক মেডিক্যাল অফিসার। তিনি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না। ফলে দীঘিনালা না হয় খাগড়াছড়ি শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয় স্থানীয়দের। এক্ষেত্রে প্রসূতি, ডায়রিয়া ও কলেরাসহ জরুরিভাবে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ইউনিয়নের নারাইছড়ি এলাকার ভাগ্য চাকমা, সোনালী চাকমা, বাবুছড়া গুচ্ছ গ্রাম এলাকার শরীফুল ইসলাম জানান, কৃষিকাজ ও বনে কাঠ সংগ্রহ করে তাদের জীবন-জীবিকা চলে। আয়-রোজগার বেশি হয় না। বাড়ির পাশে চিকিৎসা না পেলে উপজেলা কিংবা জেলা হাসপাতালে গিয়ে সেবা নিতে হয়। এতে ভোগান্তি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করলে তাদের উপকার হবে।
৫ নম্বর বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তোষ জীবন চাকমা বলেন, ‘বাবুছড়া ইউনিয়নে ৩০ হাজার লোকজনের বসবাস। তারা সঠিক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। বিশেষ করে গরিব-অসহায় মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। শিশু ও প্রসূতিদের উপজেলা কিংবা জেলা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় একাধিকবার আলোচনা করলেও কোনও সমাধান হয়নি। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে জনবল নিয়োগ দেওয়া জরুরি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার বলেন, ‘জনবল সংকট সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও সমাধান হয়নি। যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি যেন ঠিকমতো স্বাস্থ্যসেবা দেন তা নিশ্চিত করবো।’