প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে ১৫ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত গানের অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছিলো আয়োজক প্রতিষ্ঠান পিপহোলের কর্মকর্তারা। এতে ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পী কবির সুমনের গান গাওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী অনুষ্ঠানের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি কাছে।
গত বৃহস্পতিবার কবির সুমনের গানের অনুষ্ঠানের অনুমতি মিলছে না; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে ইভেন্ট পেজের হোস্টদের একজন ইশতিয়াক ইসলাম খানের সঙ্গে কথা হয়; তিনি বলেন, অনুষ্ঠান হবেই। বড়জোর স্থান পরিবর্তন হবে।
তিনি বলেন, আমরা এখনই স্থগিত বলছি না। অপেক্ষা করেন, অফিসিয়াল বক্তব্য পাবেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে, শাহবাগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এছাড়া জাদুঘরের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার কারণে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কবীর সুমনের অ্যাকাউন্ট থেকে ছবি পোস্ট করে বাংলাদেশে আশার খবর জানানো হয়।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ১৫ অক্টোবর কবীর সুমন গাওয়ার কথা ছিলো আধুনিক বাংলা গান, ১৮ অক্টোবর আধুনিক বাংলা খেয়াল এবং ২১ অক্টোবর অনুষ্ঠানটি শেষ হবে আধুনিক বাংলা গান দিয়ে।
তিন দিনের এই অনুষ্ঠানের টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে আগেই। এখন ভক্তরা প্রশ্ন করছেন, তবে কি আয়োজকরা অনুমতি না নিয়েই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেন? যদিও গত বুধবার ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান , তাদের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এই আয়োজনের সব অনুমতিই নেওয়া আছে বলেও সাংবাদিকদের জানান তারা।
কবীর সুমন শেষবার ঢাকায় এসেছিলেন ২০০৯ সালের অক্টোবরে। তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গান পরিবেশনে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়
জাদুঘরে গাইতে পারবেন না সুমন; এই খবর ছড়িয়ে পড়লে মধ্যরাতে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠে। তাদের সবার দাবি, কবীর সুমন যেহেতু মেহমান হিসেবে বাংলাদেশে এসেছেন, তাকে যেন গান গাইতে দেওয়া হয়।
লেখক পাপড়ি রহমান লিখেছেন, সুমনকে গান গাওয়ার অনুমতি এখনও নাকি দেওয়া হয়নি? কারণ কী? শ্রোতারা সব টিকিট কেটে বসে আছেন, তাদের উপায় কী? আর বারবার একজন শিল্পীকে অপমানের মানে কী?
তাহমিদা জামি নামের একজনের পোস্ট রিপোস্ট হতে দেখা গেছে। তিনি লিখেছেন, ‘গত কয়েক বছরে জাতীয় জাদুঘরে যেসকল শিল্পীর একক সংগীতানুষ্ঠান হইছে তাঁরা হইলেন শায়লা রহমান, সমির বাউল, ভজন কুমার ব্যাধ, কিরণ চন্দ্র রায়, ও অণিমা রায়। গুগলে খোঁজ দিয়ে দেখতে পারেন আর কথা ভুল হলে বইলেন। কবীর সুমনের বেলা কে পি আইয়ের দোহাই দিয়ে অনুমতি মিলল না। সুমন হেভি মেটাল বা রকন রোল গান করেন না। ওনার অনুষ্ঠানে শ্রোতারা বইসা বইসা গান শোনেন। ফলে অনুমতিপ্রাপ্তদের সাথে সুমনের কি তফাৎ যে অনুমতি মিলল না?’
এরমধ্যে সুমনের গানের আলোকে গানও বেধে ফেলেছে কেউ কেউ। বাপ্পী ইমাম লিখেছেন, ‘আমি চাই কবীর সুমন গীটার হাতে, আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে এই ঢাকা তে।’
বেলায়েত হোসেন মামুন লিখেছেন, ‘কবীর সুমনকে অপমান করবেন না। তিনি বাংলাভাষার একজন কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি এখন সত্তরোর্ধ্ব এবং বিবিধ শারীরিক অসুবিধায় আক্রান্ত। এই গুণী মানুষটাকে তাঁর প্রিয় এই বাংলাদেশে গাইতে দিন। হয়ত আর একবার তিনি গাইতে আসবেন না অথবা তাঁর আর আসা হবে না। অপমান করবেন না প্লিজ, আমাদের বিব্রত করবেন না।’