বাআ॥ ২০০১ সালের ২০ অক্টোবর সরকার গঠনের পর, এক মাসের মধ্যেই, দেশজুড়ে হত্যা-ধর্ষণ-দখল-চাঁদতাবাজি-লুটতরাজের রাজত্ব কায়েম করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অস্ত্র প্রশিক্ষণের মহড়া দিতে থাকে ছাত্রদল-শিবির। ছাত্রদল নেতাদের হাতে খুন হতে থাকে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সাধারণ মানুষ। এমনকি স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথে মেয়েদের সাথে অশালীন আচরণ, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নারীদের ধর্ষণ শুরু করে ছাত্রদলের ক্যাডাররা। এমনকি চাঁদা না দিলে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সর্বোস্তরের ব্যবসায়ীদের ওপরও নির্মম নির্যাতন শুরু করে তারা।
২০০১ সালের ১৯ নভেম্বর দৈনিক জনকন্ঠের সংবাদ থেকে জানা যায়, নির্বাচনের পর ছাত্রদলের নৈরাজ্যে দেশজুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ছাত্রদলের সঙ্গে তারেক রহমানের সরাসরি সম্পর্ক থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ছাত্রদলকে বাধা দিতে ভয় পেতো। সরকারের মধ্যেই এনিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফলে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কিন্তু তারেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মাধ্যমে দেশজুড়ে সন্ত্রাস অব্যাহত রাখে ছাত্রদল সভাপতি নাসিরুদ্দিন পিন্টু।
এদিকে ঢাকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ফুটপাত, টেন্ডার এবং আন্ডারগ্রাউন্ড নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য ছাত্রদল সভাপতি নাসিরুদ্দিন পিন্টুকেই নিয়োজিত করে তারেক রহমান। ফলে ছাত্রদলের কার্যক্রম অফিসিয়ালি স্থগিত ঘোষণা করলেও, তা মূলত আইওয়াশ বলে মন্তব্য করে ওই সরকারেরই একটি অংশ। কারণ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণার পরেই ‘গ্যাং কালচার’-এর মাধ্যমে আরো বেপরোয়া হয়ে খুন-ধর্ষণ-দখল-চাঁদাবাজি শুরু করে ছাত্রদল।
তৎকালীন সরকারেরই একটা অংশ মনে করতো- নির্বাচনের পরেই পিন্টুর নেতৃত্বে ছাত্রদল সংসদ ভবন দখল, শিক্ষা ভবনের টেন্ডার ছিনতাই, নগর ভবনে সশস্ত্র মহড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ, দেশজুড়ে হত্যা-ধর্ষণের ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে ইমেজ সংকটে পড়েছে বিএনপি-জামায়াত সরকার। তাই ছাত্রদলের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে খালেদা জিয়া। কিন্তু স্থগিত নাটকের পরে এরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়েচে। বিশেষ করে তারেকের ডান হাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে দেশজুড়ে নাশকতা শুরু করেছে ছাত্রদল সভাপতি নাসিরুদ্দিন পিন্টু। তাই পিন্টুকে সামলাতে না পারলে দেশে সন্ত্রাস থামানো যাবে না। কিন্তু তারেক রহমানের পিন্টুর ওপর খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের সরাসরি আশীর্বাদ থাকায়, ছাত্রদলের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হতো না।