বাআ॥ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ৫ বছরে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের নামে কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। যথাসময়ে দুদকের পক্ষ থেকে এসব দুর্নীতি দমনের সুপারিশ করা হলেও তা আমলে নেয়নি খালেদা জিয়ার সরকার। ২০০৭ সালের ১৩ নভেম্বর যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদনে দুদকের বরাতে এসব তথ্য উঠে আসে।
জানা যায়, বিএনপির মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী নেতারা নিজেদের স্বজনদের নামে ঠিকাদারি নিয়ে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। এরমধ্যে শুধু পাকসী সেতুতেই খরচ করেছে অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকা। এমনকি ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ আমলে শুরু করা বৈরব সেতুর কাজ শেষ হয় ২০০৩ সালে, এরপর খালেদা জিয়া উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মাণের ২ বছর পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে অতিরিক্ত এই টাকা নেয় ঠিকাদার। পরে তা নেতাদের মধ্যে ভাগ হয়।
এছাড়াও শুধু হাস স্লিপে লেনদেনের মাধ্যমে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের নামে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা লুট করেছে বিএনপি নেতাকর্মী ও তাদের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা। বিএনপির স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন নিজের এলাকার মৎস্যখামারে যাওয়ার জন্য সরকারের ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করে, যা জনগণের কোনো কাজেই ব্যবহার হয়নি। ২০০৩ সালে ঢাকায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কংক্রিটের ফুটওভার ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু করলেও তা পরে বাতিল করার মাধ্যমে, ৯ কোটি টাকা নষ্ট করে বিএনপি-জামায়াত সরকার।
খুলনার বাটিয়াঘাটায় ব্রিজের ৬০ শতাংশ নির্মাণের পর তা স্থগিত করে রাখার ফলে সরকারের প্রায় ৯ কোটি টাকা অপচয় হয়। রায়পুরে আড়িয়লখাতে ১৫০ মিটার ব্রিজ নির্মাণের পর তা ভেঙে গেছে। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার পাশখালি সেতু নির্মাণের পর ছয় মাস পর তাও ভেঙে যায়। দুর্নীতির কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এভাবেই কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ-কার্লভার্টগুলো ধসে গেছে বা ভেঙে গেছে; কোথাও আবার হরিলুটের কারণে ৫০০ কোটি বাজেটের সেতু নির্মাণে ১০০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
বিএনপির মন্ত্রী, এমপি, প্রভাবশালী নেতারা ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে রাতারাতি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়। দেশের অর্থ পাচার করে বিদেশে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলে। আর দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়।