আমলনামা দেখে আ.লীগের মনোনয়ন

বাট্রি॥ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমলনামা দেখে  আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জনগণের সঙ্গে যাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, জনগণের পাশে দাঁড়ান, তারা নির্বাচনে নমিশনের পাবেন। আর  যারা জনবিচ্ছিন্ন,এলাকার মানুষের সঙ্গে যাদের সুসম্পর্ক নেই, তাদেরকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

গত বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সংসদ সদস‌্যদের হুঁশিয়ার করে এসব কথা বলেন তিনি। সংসদীয় দলের সভা সূত্রে এ তথ‌্য জানা গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকক্ষে সরকারি দলের প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টায় শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা সভা চলে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিরোধী দলের আন্দোলনসহ সাম্প্রতিক নানা ইস্যু নিয়ে কথা বলেন। সভায় বেশ কয়েকজন সংসদ সদস‌্যও বক্তব‌্য রাখেন।

বৈঠক সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের জন‌্য সার্ভে করেছেন উল্লেখ করে বলেন, তার কাছে সার্ভে রিপোর্ট রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী যারা ভালো কাজ করেছেন, যারা জনগণের কাছে যান, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথা বলেন, ভোট চান, জনগণের সুযোগ-সুবিধা দেখেন এবং জনগণ যাদেরকে চায়, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আর যারা জনবিচ্ছিন্ন এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে যাদের সুম্পর্ক নেই, এলাকায় যান না— তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’

জানা গেছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদসদের এলাকায় যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। বিরোধী দলের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে বলেছেন।

বৈঠকে তিনি বিরোধী দলের আন্দোলন নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করলে কোনও বাধা দেওয়া হবে না। তবে আন্দোলনের নামে ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালের মতো সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ করলে আইনানুগ ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’

বৈঠকে সরকারি দলের এমপিদের মধ‌্যে শাহজাহান খান, আবুল কালাম আজাদ, আ স ম ফিরোজ, সাদেক খান, আতিউর রহমান আতিক, মেহের আফরোজ চুমকি, মেরিনা জাহান প্রমুখ বক্তব‌্য রাখেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে দলের এমপিরা প্রধানমন্ত্রীকে জেলা সফরের জন‌্য অনুরোধ করেন। জেলা সফরে গেলে সেখানকার অভ‌্যন্তরীণ সমস‌্যাগুলো কেটে যাবে। তিনি সরাসরি নির্দেশনা দিতে পারবেন। এতে নেতা-কর্মীরা ‍উৎফুল্ল হবেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সফর শুরু করেছেন। আগামীতেও যতদূর সম্ভব সেটা অব‌্যাহত রাখবেন। আর যেখানে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে অবশ‌্যই যাবেন।

বৈঠকে একাধিক এমপি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে উন্নয়ন কাজের অসমবণ্টনের অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, মন্ত্রীরা অন‌্য এলাকার দিকে না দেখে কেবল নিজের এলাকার দিকে গুরুত্ব দেন। মন্ত্রণালয়ের কাজ যেন সব এলাকায় সমানভাবে হয়। মন্ত্রীরা যেন স্বজনপ্রীতি করে নিজের এলাকার ওপর বেশি গুরুত্ব না দেন।

এছাড়া কয়েকজন এমপি নতুন করে বড় কোনও প্রকল্প গ্রহণ না করার পক্ষে অভিমত দিয়ে চলমান প্রকল্পগুলো নির্বাচনের আগে শেষ করার অনুরোধ করেন। পাশাপাশি ভাঙ্গাচুরা সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের অনুরোধ করেন। এমপিরা জানান, প্রধানমন্ত্রী এমপিদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। কিছুক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক জবাব দিয়েছেন। আবার কিছু বিষয়ে তিনি নোট নিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.