খালেদা জিয়ার অপশাসন: পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রদল-শিবির নেতাদের গণনিয়োগ, বাদ যায়নি বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের স্ত্রী-পুত্ররাও

বাআ॥ গত ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারে থাকার সময় পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস এবং বিসিএস পরীক্ষাকে পর্যন্ত কলুষিত করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা ছাড়াই তালিকা ধরে গণনিয়োগ দিয়ে দিত তারা। ফলে কোনো রকমের যোগ্যতা ছাড়াই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে ছাত্রদল-শিবিরের শত শত চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের কারণে স্থবির হয়ে পড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রম।

পদ না থাকার পরও শুধু বিএনপি ও জামায়াতের দলীয় লোকদের পুনর্বাসনের জন্য ২০০৪ সালে ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতিসহ ৫৪৪ জন ব্যক্তিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই ভয়াবহ অনিয়মের প্রতিবাদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে ছাত্রদল, যুবদল, শিবির, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মামলার আসামি, এমনকি কারাগারে থাকা ব্যক্তিও ছিল। এছাড়াও স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের স্বজনদেরও।

২০০৪ সালের ১৮ ও ২০ এপ্রিল প্রথম আলো পত্রিকার সংবাদ থেকে আরো জানা যায়, ২৫৫ টি পদে নিয়োগের কথা থাকলেও ৫৪৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগকৃতরা সবাই রাজশাহী মহানগর বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। তাদের বাড়িও রাজশাহী অঞ্চলে।

কোনোপ্রকার বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে এবং যোগ্যতা নির্ধারণ না করে এভাবে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। সিনেট সদস্য আবুল কাশেম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। এটি পুরোপুরি দলীয় নিয়োগ।

ছাত্রশিবিরের চিহ্নিত যে সন্ত্রাসীরা নিয়োগ পেয়েছে, তারা হলো- বিনোদপুরের রবি, বোমারু তোফা, মনির, সালাম, কামাল, বাবুল, লিয়াকতসহ অন্তত ৩০ জন। সন্ত্রাসের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান ছিল সেসময়।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সভাপতি মতিয়ার রহমান মতির স্ত্রীও নিয়োগ পায় তৃতীয় শ্রেণির একটি পদে। এমনকি মহানগর ছাত্রদল নেতারাদের পাশাপাশি কয়েকটি উপজেলার ছাত্রদল নেতা এবং মহানগরের ওয়ার্ড যুবদল নেতাদেরও নিয়োগ দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.