বর্তমান নির্বাচন ও আগামীর ভাবনা

বর্তমান নির্বাচন ও আগামীর ভাবনায় কতকিইনা দৃশ্যমান হচ্ছে এবং বাতাসে ভাসছে কল্পনাপ্রসুথ কাহিনী এবং বাস্তবতার নিরীহে নানান জল্পনা এবং কল্পনা। সদ্য হওয়া নির্বাচনগুলোকে যদি মডেল নির্বাচন ধরে নিয়ে অগ্রসর হই তাহলে আগামীর ভাবনায় কালো ছাপ থাকতে পারে এমনকি এই সদ্য বা গত হওয়াকে কোন ভাবেই আস্তায় নেয়া যাবে না। এরচেয়েও ভাল নির্বাচন যাকে কোন কলঙ্কের এমনকি বিন্দুমাত্র ভুল-ত্রুটি ধরার সুযোগ ছিল না ; সেই ধরণের নির্বাচন এই সরকারই করিয়েছে, দেখিয়েছে এমনকি নির্ভেজাল প্রমানও এমনকি দৃষ্টান্তের স্বাক্ষরও রেখেছে। সেই নির্বাচন হলো গত একবছর আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সকল ইউনিয়ন’র নির্বাচনগুলো। তবে ঐ নির্বাচনে প্রার্থীগণ তাদের মতামত এবং প্রচার প্রচারণা এমনকি ভোটারগন তাদের ইচ্ছা -অনিচ্ছা এমনকি পছন্দ ও অপছন্দ স্বচ্ছ ও সাবলিলভাবে বেছে নিয়েছিল। ইতিহাসের স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় সৃষ্টিকারী এমনকি বাংলাদেশ সৃষ্টির পর একমাত্র এবং দৃষ্টান্তের নির্ভরযোগ্য ও অনিবার্য একমাত্র নির্বাচন হিসেবে গ্রহণযোগ্য। ঐ নির্বাচনগুলোকে মডেল নির্বাচন ধরে নিয়ে আগামীর তরে এগিয়ে গেলে গণতন্ত্র এবং গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন হিসেবে পৃথিবীর ইতিহাসে স্থান করে নিবে এমনকি পৃথিবীর সকল দেশেই এই নির্বাচনের মডেল এবং আদলে নির্বাচনী ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হবে। দল-মত নির্বিশেষে ঐ নির্বাচনগুলোকে গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ হিসেবে স্বীকৃতিও দিয়েছিল যা আগামীর জন্য সমস্যা সমাধানের নির্ণায়ক ভুমিকা রাখবে।

চলমান নির্বাচনগুলো ত্রুটিযুক্ত এবং জনগণের স্বতস্ফুত অংশগ্রহনের অনিচ্ছাস্বর্ত্তের বহিপ্রকাশও বটে। বর্তমানে ভোটারগণ নির্বাচনের প্রতি অনিহা প্রকাশ করেছে এবং ভোট দেয়ার অধিকার বিসর্জন দিয়ে ভোটবিমুখ হচ্ছে। এটি একদিনের ফল নয় বরং দীর্ঘদিনের চর্চার এবং ভোট অবমূল্যায়নের একটি দৃষ্টান্ত মাত্র। তবে বর্তমানের নির্বাচন সুষ্টকরণার্থে যেসকল পদক্ষেপ নিয়েছে এবং দৃশ্যমান হয়েছে তা কিন্তু ভাল তবে গরীবের আবার তলবিছনার সামিল। অথবা ফকিরের ছেলের আকাশের চাঁদে হাত বাড়ানোর সামিল। একটি বা দুটি অথবা ৫০টি আসনে ঐ ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর নির্বাচন করাই যেখানে দুস্কর সেখানে কিনা ৩০০ আসনে সম্পূর্ণ একটি প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচন করার দু:সাহস দেখানো ছারা আর কি? তবে সম্মানীত নির্বাচন কমিশনার বিভিন্নভাবে অভিজ্ঞতা অর্জনে এমনকি আগামীর জন্য কার্যকরী এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে আগামীর প্রস্তুতি সারছেন বলে মনে হয়। আর এই জন্যই ওনাকে ওনার কাজে সহযোগীতা করণের লক্ষ্যে এই নির্বাচনগুলো মুখ্য ভুমিকা পালন করছে। সদ্য হওয়া নির্বাচন এবং এর আয়োজনে নেয়া সকল ব্যবস্থাই যথেষ্ট ছিল এবং পরাজিত প্রার্থীরাও একবাক্যে স্বীকার করছে যে, ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থায় ভোট সম্পন্ন হয়েছে এবং নির্বাচনী প্রচার ও প্রচারণা শেষ হয়েছে। এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে ভোটারের উপস্থিতি অতি নগন্য সংখ্যক আর এর জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থা ও আয়োজনের কোন ত্রুটি নয় এবং দায়ীও নয় বরং আমরা জনগণই এখন আর নির্বাচনে মনযোগ দিতে আগ্রহী নই এমনকি সরকার পরিবর্তনে চিন্তিত নয়। জনগণ এযাবতকাল বিভিন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে সকলকেই পরীক্ষা করে দেখেছেন আর শেষ পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ সরকার পেয়েছেন বটে তবে তারা এখন জনগণের প্রয়োজনে যা যা দরকার সেই তা তা করে যাচ্ছেন আর জনগণ (তারা) তা তা পেয়ে যাচ্ছেন সেই কারণেই সরকার পরিবর্তনের মত কোন কাজে জনগণ আর আগ্রহী নয়। বরং এই সরকারকেই লাইফ গ্যারান্টির নিশ্চয়তা দিয়ে আগামীর গণউন্নয়ন এবং সমতাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে যাচ্ছে। সরকার এবং জনগণ এর মধ্যে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই । তাই সদ্য প্রয়াত হওয়া ৬টি উপনির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণের শতকতা হার খুবই কম এবং আগামীতে আরো কম হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

জনাব হিরো আলম মত একজন পরাজিত প্রার্থীর কথার সাথে তালমিলিয়ে আমিও বলতে চাই নির্বাচন সুষ্ঠ্য হয়েছে তবে ফলাফল গননায় কোন কিছু গঠলেও গঠতে পারে তবে আমি এতে শতভাগ বিশ^াসী বা নিশ্চিত নই। কারণ পরাজিত প্রার্থীগণ পরাজয়ের শান্তি উপভোগ করতে অপারগ তাই বলতে হয় পরাজয়ের গ্লানি বহনে অক্ষম আর ঐ অক্ষমতার আলোকেই নানান বক্তব্য এবং মুখরোচক আলোচনা ও সমালোচনা করে থাকেন। তবে এই অবস্থারও অবসান আসন্ন। তবে জ্ঞানী এবং উচ্চশিক্ষীত মানুষজন তাদের আলোচনায় জ্ঞান এবং উচ্চশিক্ষার ব্যবহারে পারঙ্গম নয় বরং অশিক্ষা এবং জ্ঞানহীন আলোচনা এবং আচরণে বিভোর। আমি একটি টেলিভিশন টকশোর আলোচক শ্রদ্দেয় এবং সম্মানীত মুরুব্বীর বক্তব্যের উদৃত্তি দিয়ে বলতে চাই বাংলাদেশ এবং এই দেশের সংবিধান সকলকে সমঅধিকার এবং সমসুযোগ দিয়েছে তাই ঐ হিরো আলমের মত মানুষরা বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন আর জয় এবং পরাজয় এটি সম্পূর্ণই জনতার মতামত এবং সময়ের চাহিদার উপর নির্ভরশীল। তবে এখানে আরো একটি বিষয় বলতে চাই যে, দেশ স্বাধীনের সময় বেশীরভাগ হিরো আলমরাই জিবন বিলিয়ে দিয়েছেন এবং বর্তমানের স্বাধীন সোনার বাংলাকে ছিনিয়ে এনেছেন। শুধু কি তাই বর্তমানের রেমিটেন্স যোদ্দারা কিন্তু ঐ হিরো আলমেরই প্রতিচ্ছবি আর আগামীর নির্বাচনী ভোটে ঝাপিয়ে পড়ে শতকরা হারের উদ্ধগতি বৃদ্ধি করবে তারাই; তাই ঐ শ্রেণী-পেশার মানুষদের নিয়ে আর সমালোচনা এবং নিম্নমানের আলোচনা করবেন না বরং তাদেরকে উৎসাহিত করে আগামীর জন্য প্রস্তুত করুন। ওদের নিয়ে কথা বলতে রুচি বাদে বা বিব্রত হন অথবা আলোচনা করতে চান না এমন চোনাপোড়া ঢেকুর তোলা বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকুন এবং তাদেরকে সম্মান করতে শিখুন। বঙ্গুবন্ধুর জিবনাদর্শ এবং জীবনী পড়ুন ও জানুন। এই ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃষ্টান্ত হতে পারে। তাই তাঁর একটি সম্মানীত এবং শিক্ষনীয় দৃষ্টান্ত তুলে ধরছি-“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বড়িতে কাজ করা রাজমিস্ত্রী একদিন তার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে অসহায়ের দৃষ্টিতে দাড়িয়ে আছেন। তার স্ত্রী মৃত্যুপথযাত্রী। নেই টাকা এবং নেই বাচার আশা; এই উভয় সংকটে একটি মানুষ সীড়িতে দাঁড়িয়ে মলিন চেহারায় হতাশাগ্রস্থ। সেই সময়ে কোন একজনকে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর হাসপাতালে গমন করেন আর অনেক দুর থেকে প্রধানমন্ত্রী ঐ রাজমিস্ত্রীকে দেখেছেন এবং ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন এবং খোজখবরও নিয়েছেন। অনেক দিন পরে দেখা ঐ রাজমিস্ত্রির স্ত্রীর উন্নত চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে ঐ রাজমিস্ত্রির স্ত্রী সুস্থ্য হয়েছেন এবং আবহমান বাংলার মানুষের কাছে ঐ রাজমিস্ত্রি মানবতার, সততার, ন্যায়পরায়নতার এবং সাম্যের ও আদর্শের স্বাক্ষ্যমর হিসেবে ঐ মানবিকতার কথা বলে যাচ্ছেন।” এখানেও আমাদের জন্য গভীর এবং নিঘুর সত্যনির্ভর সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত শিক্ষা নিহীত রয়েছে। আসুন আমরাও ঐ মমতাময়ী নিরহংকার প্রধানমন্ত্রীর মত হই।

পরিশেষে বলতে চাই নির্বাচন নির্বাচন এবং ক্ষমতা ক্ষমতা নিয়ে আর জল গোলা নয় বরং সকলের ভাগ্যউন্নয়নের তরে নেয়া সকল পদক্ষেপে নিজেদেরকে নিয়োজিত করার মানুষিকতায় লিপ্ত হই। অন্যের দোষ না ধরে বরং নিজের দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করার কাজে নিয়োজিত থাকি। জনগণের প্রয়োজনীতা নিয়ে নিজের ভাগ্যের চাকা গোরাতে চেষ্টা না করি বরং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করি। যে যার অবস্থান থেকে দেশ গঠনে এবং সোনার বাংলার স্বাধ আস্বাধনে লিপ্ত থাকি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে একসঙ্গে তাঁর সৃষ্টিকর্ম এবং চলমান পৃথিবীর গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণে এমনকি পৃথিবীকে দেখাশুনার দায়িত্ব সুচারুরূপে পালনে ব্যবহার করুক এই মোনাজাত অব্যাহত রাখি। যারা এখন তামাসাচ্ছলে বা তাচ্ছিল্যনির্ভর কথাবার্তায় অন্যের সমালোচনা এমনকি অন্যকে ছোট করতে অথবা অন্যের দোষ-ত্রুটি জনসম্মুখে আনতে চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ; ফিরে আসুন নিজ নিজ কর্মে। যে দায়িত্ব পেয়েছেন সেই দায়িত্ব পালনে আরো আন্তরিক হউন এবং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য অন্বেষণে কাজ করুন আর সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ ও সহযোগীতা নিয়ে চলমান দায়িত্ব আরো গতিশীল করে আগামীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। অন্যের কাছ থেকে যেরকম ব্যবহার আশা করেন ঠিক সেইরকম ব্যবহার আগে নিজে করে দেখানোর কাজে লিপ্ত থাকুন। আগামীর নির্বাচন ও ভাবনায় আপনি ও আপনার কর্মকান্ডকে সব্রাঘ্র্যে রাখার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে থাকুন; আর অন্যকেও জড়ানোর সুযোগ করে দিয়ে বিশ^কে তাক লাগিয়ে শিক্ষীত হতে সহায়তা করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.