বাআ॥ যে কোনো নির্বাচন এলেই দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞ চালানো, আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর-অগ্রিসংযোগ, আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে হামলা করা বিএনপি-জামায়াতের পুরনো অপকৌশল। ভোটের আগে বিভিন্ন স্থানে নারকীয় নাশকতা চালিয়ে জনগণকে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে তারা। কারণ, জনগণের ভোটের নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে সবসময় সন্দিহান থাকে এই দুর্বৃত্তের দল। তাই ভোটের আগে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ব্যালটবাক্র দখল ও ছাপ্পা ভোট মেরে ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা করে এই বিএনপি-জাাময়াতের চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা।
২০০১ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকা থেকে জানা যায়, অক্টোবরের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি। ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের ১০টি নির্বাচনি অফিস ভেঙে দেয় বিএপির সন্ত্রাসীরা। কয়েকটি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয় আগুন দিয়ে। স্থানীয়রা জানান, বিএনপির কর্মীদের বর্বর হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।
৭ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপরেও হামলা চালায় বিএনপির ক্যাডাররা। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফরিদুল হাসান ওদুদকে বিএনপির সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে আহত করে। এরপর দুই দিন ধরে পুরো জেলাজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও নির্যাতন চালাতে থাকে তারা।
অন্যদিকে, জামায়াত-বিএনপি জোট হরেও শেরপুর থেকে রাজাকার কামারুজ্জামানকে মনোনয়ন দেন খালেদা জিয়া। ফলে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত মুক্তিযোদ্ধারা এর প্রতিবাদ জানান। তবে সব প্রতিবাদ উপেক্ষা করে খালেদা জিয়া জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের পক্ষ নেন। এরপর থেকে মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আল বদর কমান্ডার কামারুজ্জামান অঢেল টাকা ঢেলে টালমাতাল করে দেয় নির্বাচনের পরিবেশ। স্থানীয়রা জানান, বদর কমান্ডার থাকার সময় শেরপুরেও ব্যাপক নাশকতা চালিয়েছিল এই রাজাকার কামারুজ্জামান। ১৯৭১ সালে তার বর্বরতার ভয়াবহ স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি মানুষ।
এদিকে কামারুজ্জামানের কোটি কোটি অবৈধ টাকা বিতরণের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যেও দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তরুণ প্রজন্মের হাতে টাকার বান্ডিল তুলে দিয়ে এলাকার পরিবেশ অস্থির করে তোলে কুখ্যাত রাজাকার খুনি কামারুজ্জামান। এমনকি আওয়ামী বিরোধী অপপ্রচার চালাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও মাঠে নামায় তারা।
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে ৮টি বেসরকারি সংস্থাকেও ব্যবহার করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। এর মধ্যে ২টি এনজিওর প্রদানকে মনোনয়ন দেন খালেদা জিয়া। ২টি এনজিও বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার ঘাতকদের ঘনিষ্ঠ স্বজনদের দ্বারা পরিচালিত। এসব এনজিও তাদের মদতপুষ্ট গার্মেন্টস শ্রমিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠিয়ে কেন্দ্র দখলের পরিকল্পনা করে। অধিকার, ডেমোক্রেটিক ওয়াচ, ফেমা, খান ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার, লিবার্টি মুভমেন্ট, মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ- প্রভৃতি নামে বিএনপি নেতারা এনজিও খুলে তাদের নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নামে ভোট লুটের পরিকল্পনা করেছিল। এমনকি নির্বাচনে পেশী শক্তি নিয়ে বিএনপির পাশে থাকার জন্য দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে চুক্তি করা হয় খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় হাওয়া ভবন থেকে। ক্ষমতায় গেলে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিরাপদে থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করে তারেক রহমান। রাজধানীর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের সাথেও চুক্তি করে বিএনপি নেতারা। পরবর্তীতে ঢাকা শহরকে চারভাগে ভাগ করে সন্ত্রাসীদের মধ্যে বণ্ট করে দেয় সে, আর এই চার অঞ্চলকে দেখভালের দায়িত্ব দেয় বিএনপির এমপি নাসিরুদ্দিন পিন্টু, মির্জা আব্বাস, এস এ খালেক ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে।