তপন কুমার ত্রিপুরা॥ বাংলাদেশের সরকারী দলের অনেক মন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময়ে দূর্নীতির বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স বলে উল্লেখ করলেও খাগড়াছড়ির পাসপোর্ট অফিসে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও ভোগান্তি এবং ভুক্তভোগীদের অভিযোগের শেষ নেই।
ভুক্তভোগীদের অনেকে অভিযোগ করেন, খাগড়াছড়ির পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের ঘুষ না দিলে অনেক তালবাহানা করতে থাকেন এবং উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। এমনকি তারা ঘুষের পরিমাণও বলে দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ছদ্মনাম জ্যোতিময় ত্রিপুরা নামের এক ব্যক্তি অনলাইনে ফরম পূরণ এবং অনলাইনে পাসপোর্টের নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করে খাগড়াছড়ি পাসপোর্ট অফিসে গেলে ফরম দেখার পর দুপুর ১২ টার ফরম জমা নেওয়ার নিয়ম নাই বলে পরের দিন আসতে বলে। পরেরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি পুনরায় পাসপোর্ট অফিসে আবেদন ফরম জমা দিতে গেলে, প্রথমে একজন কর্মকর্তা রাগান্বিত সুরে বলতে থাকেন কেন অনলাইনে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করেছেন। যদিও ই-পাসপোর্টর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা আছে এবং অনলাইনে ফরম পূরণ ও ফি পরিশোধ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। পরে ওই ভুক্তভোগী আরো অভিযোগ করেন যে, ফরমে বাবার নামের আগে মৃত লেখার কারণে পুনরায় অফলাইনে ফরম পূরণ এবং ফি পরিশোধ করে আবেদন করতে বলেন। পরবর্তিতে ভুক্তভোগী ওই কর্মকর্তাকে অনুরোধ করলে ১৬০০ টাকা ঘুষ হিসাবে দাবি করেন তা না হলে তাদের পক্ষে সাহায্য করা সম্ভব না। সে ১০০০ টাকা দিয়ে সাহায্য নিতে চাইলে ১৫০০ টাকার ১ টাকাও কম হবে বলে উল্লেখ করেন। পরে কোন উপায় না পেয়ে ১৫০০ টাকা ঘুষ দিয়ে আবেদন পত্র জমা দিয়ে আসেন। ভুক্তভোগী আরো উল্লেখ করেন যে, ওইদিন বেশীরভাগ লোক এরকম ঘুষ দিয়ে পাসপোর্ট সেবা নিতে হয়েছিল।
জনি নামের আরেকজন ভুক্তভোগী জানান ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে পাসপোর্ট আবেদন করতে গেলে তার কাছেও ২০০০ টাকা ঘুষ হিসাবে দাবি করেন। কারণ হিসাবে বলে যে, সে পেমেন্ট স্লিপ ডকুমেন্টটি সাথে নিয়ে আসেন নি। সেদিন রাত্রে ঢাকা যাওয়ার পরিকল্পনা থাকায় কোন উপায় না পেয়ে ২০০০ টাকা ঘুষ দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন ফরম জমা দিয়ে আসেন।
আরো কয়েকজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জানা যায় যে, ঘুষ না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকেন। এরকম দু’জনের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, তাদেরও পাসপোর্ট করার সময় ঘুষ দিয়ে করতে হয়েছে।