কসবায় সৎ মায়ের হাতেই মেয়ে খুন

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি \ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সৎমায়ের হাতেই খুন হয় উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের বর্ণী আঙ্গুরা-বাশার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার (১২)। গত বুধবার রাতে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন হত্যকারী সৎমা সুফিয়া বেগম। এ ঘটনায় সুমাইয়ার বড় ভাই আরমিন ভ’ইয়া বাদি হয়ে সৎমা শারমিন আক্তারসহ অজ্ঞাত আরো দুজনকে আসামী করে কসবা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল দুপুরে সৎমা শারমিন আক্তার (৩৫) কে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, তিন সন্তান বাড়িতে রেখে প্রথম স্ত্রী সুফিয়া বেগম প্রবাসে গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সুমাইয়ার বাবা উপজেলার মেহারী গ্রামের শামীম মিয়া। বিয়ের পর থেকে সৎমায়ের বিমাতাসুলত আচরনে দুই ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যান শামিম মিয়া। ছোট হওয়ায় মেয়ে সুমাইয়াকে সৎমায়ের কাছে রেখে যান। ছোট থেকেই সৎমায়ের অত্যাচার সহ্য করেই বেঁচে ছিলেন সুমাইয়া। কয়েকবার সৎ বড় ছেলে আরমিন ভ’ইয়া ছোট বোনকে সুমাইয়াকে নিজেদের কাছে ঢাকায় নিয়ে যেতে চান। কিন্তু সৎ মা প্রতিবারই বাধ সাধেন।

২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপানে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সৎমায়ের নিকট টাকা চায় সুমাইয়া আক্তার। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তার উপর নির্যাতন শুরু করে সৎ মা শারমিন আক্তার। ওই দিন রাতেই কোনো এক সময় সৎমা শারমিন আক্তার এবং অজ্ঞাত আসামীরা গলাটিপে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে কিশোরী সুমাইয়াকে। ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ মিনারে যাওয়ার জন্য সুমাইয়াকে ডেকে আনতে গেলে সহপাঠিরা ঘরে সুমাইয়ার নিথর দেহ দেখে চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন এসে সুমাইয়াকে মৃত দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাপাতালে পাঠালে শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত মিলে। পুলিশ সৎমা শারমিন আক্তারকে জিজ্ঞাসা করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে।

মামলার বাদী সুমাইয়ার বড় ভাই আরমিন জানান, তার ছোট বোনকে নির্মমভাবে গলাটিপে হত্যা করেছে সৎমা শারমিন আক্তার। তিনি হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন। কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সুমাইয়াকে হত্যার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন সৎ মা শারমিন আক্তার। আসামীকে গতকাল বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত উৎঘাটনে আসামীর বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কারনসহ প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন হবে বলে আমরা আশাবাদী।

Leave a Reply

Your email address will not be published.