প্রশান্তি ডেক্স॥ গরু ও মুরগির মাংসের দাম বাড়ায় এখন নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন মাছের বাজারে। এক সময় ছুটির দিনে আয়োজন করে মাংস রান্না করা হলেও এখন সেই ভালো খাবারের জায়গা করে নিয়েছে মাছের নানা পদের তরকারি। মাছের বাজারে আসা ক্রেতারা জানান, ‘এখন মাংস কেনা হয় খুবই কম, মাছ দিয়েই আনন্দ নিয়ে খেতে হচ্ছে।’
গত শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী মিরপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পছন্দের মাছ কিনতে ক্রেতাদের ব্যয় করতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া শীতের সঙ্গে সঙ্গে সবজির বাজারের স্বস্তিও চলে যাচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। এলাকাভেদে দামের সামান্য তারতম্য থাকতে পারে।
বর্তমানে কেজিপ্রতি শোল ৫০০ টাকা, বাইম ৫২০, টেংরা ৩২০ টাকা, বোয়াল ৩৫০, শিং মাছ আকারভেদে ২৪০ থেকে ৩২০, মাঝারি চিংড়ি ৬৪০, ছোট চিংড়ি ৪২০ থেকে ৪৬০, পাবদা ৩২০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৫০০, টাকি ৩০০, পুঁটি ৩২০, রুই ২৪০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কেজিপ্রতি সিলভার কার্প ২০০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, বাইলা ২৪০ টাকা, কাচকি ২৪০ টাকা, সুরমা ২০০ টাকা, পোয়া দেশি ১৬০, লাল পোয়া ১২০ টাকা, নলা মিলকা ১৪০ টাকা, টাটকিনি ১২০ টাকা, ফলি ২০০, তেলাপিয়া আকারভেদে ১৬০ টাকা থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির মধ্যে ঢেঁড়স প্রতিকেজি ১০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, লাউ পিস ৬০ টাকা, ফুলকপি পিস ৩০ টাকা, বাঁধাকপি পিস ৩০ টাকা, লেবুর হালি ২০ টাকা ও কাঁচা মরিচের কেজি ১২০ টাকা।
তবে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগির। ব্রয়লার সাদা এখন বিক্রি হচ্ছে কেজি ২১০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২৪০ টাকা ছিল। এছাড়া ডিম ২০ টাকা কমে ডজন এখন ১২০ টাকা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় এখন দৈনন্দিন খাদ্য তালিকাও বদলে ফেলেছেন বলে জানান বাজার করতে আসা ক্রেতারা। মিরপুর বাউনিয়াবাঁধ বউবাজারে আসা সুলতানা আক্তার বলেন, ‘গরুর গোশত তো এখন চিন্তাই করা যায় না। আগে শুক্রবার এলেই বাসার সবার জন্য আয়োজন করে মুরগির গোশত রান্না করা হতো, এখন গোশতেরও দাম বাড়ছে। ছোট একটা মুরগি নিয়ে সবার প্লেটে এখন এক পিস করে দিতে হয়। বাকিটা মাছের তরকারি দিয়ে চালিয়ে নিই। এই হলো সপ্তাহের একদিনের আয়োজন।’
মাছ নিলে যে টাকা বাঁচে তা দিয়ে অতিরিক্ত আরও একদিনের তরকারি কেনা যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মাছে সুবিধা আছে। একটা মাছ দুই পোটলা করে ফ্রিজে রাখা যায়। তাতে একই মাছ দুই দিন আলাদা করে তরকারিতে দেওয়া যায়।
মিরপুর-১১-এর বড় বাজারে বেনারসি কারিগর মো. আরমান বলেন, ‘এখন তো ভাই আর আগের মতো কামাই-রুজি নাই। যা পাই তা দিয়াই চলি। মাংস কিনা বন্ধ কইরা দিছি, মাছের বাজারে আহি। একটা মাছ কিনলে কয়েক দিন চালান যায়।’