ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ গত সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে কসবা উপজেলার মেহারী বাজারে বর্ণী আলহাজ্ব আঙ্গুরা-বাশার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার (১২) কে নির্মমভাবে হত্যা করার প্রতিবাদে এবং ঘাতক সৎমায়ের ফাঁসির দাবিতে আঙ্গুরা-বাশার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ এলাকার ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বর্ণী আলহাজ্ব আঙ্গুরা-বাশার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবুল খায়ের, সহকারী শিক্ষক আবুল হোসেন, মোজাম্মেল হক, আরজ মিয়া, শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, তৈয়্যবা আক্তার ও সুমাইয়ার পিতা শামিম মিয়া।
বক্তাগন ঘটনার সাথে জড়িত সৎ মা শারমিন আক্তারকে গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডে এনে মেয়ে হত্যার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী গ্রহন করায় পুলিশ প্রশাসন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তারা সুমাইয়া হত্যার খুনী সৎ মায়ের ফাঁসির দাবী করেন।
উল্লেখ্য, ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সহপাঠিদের সংগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ফুল কিনতে সৎমায়ের কাছে টাকা চেয়েছিলো সুমাইয়া। টাকা না দিয়ে মা সৎ কন্যার সংগে খারাপ আচরন করেন। পরে ওইদিনগত রাতে নির্মমভাবে সৎ মায়ের হাতে খুন হন সুমাইয়া। সুমাইয়া আক্তার আলহাজ্ব আঙ্গুরা বাশার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলো। এদিকে স্কুলের সহপাঠিরা ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাত ফেরী অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সুমাইয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ সৎ মা শারমিন আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সুরতহাল রিপোর্টে সুমাইয়ার গলায় আঙ্গুলের ছাপ নিশ্চিত হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শারমিন আক্তার পুলিশের নিকট হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় সুমাইয়ার আপন বড় ভাই আরমিন ভ’ইয়া বাদি হয়ে শারমিন আক্তাকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। শারমিন আক্তার বিজ্ঞ আদালতেও খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেন।
কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে এ নির্মম হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য সহসাই চার্জসিট প্রদান করা হবে। এ ব্যাপারে খুনী শারমিন আক্তার কোনো প্রকার ছাড় পাবেনা।