মিথ্যা লিখে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা কি অপরাধ নয়: তর্থমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অনলাইন ও ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রশ্ন রেখে বলেছেন, বাসন্তীকে জাল পরিয়ে বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের মতো একটি শিশুকে ১০ টাকা দিয়ে তার নাম ব্যবহার করে অসত্য লিখে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা কি অপরাধ নয়?  গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সাংবাদিকরা ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে হাজারো মানুষ নিহত হয়, সেদিন প্রথম আলো-মেরিল পুরস্কার অনুষ্ঠানে নাচগান করা, প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ছাত্রকে কাছের হাসপাতালে না নিয়ে দূরের হাসপাতালে ভর্তি করা ও তার মৃত্যু ঘটা এবং স্বাধীনতা দিবসে শিশুর নাম দিয়ে মিথ্যা লিখে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা, এসবের কী বিচার, এমন প্রশ্ন করেন। জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে এভাবে কটাক্ষ করে যে সংবাদ প্রচার করা এবং একটা শিশুকে ১০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে যেটি বলানোর চেষ্টা করা, সে না বললেও সেটিকে ছাপানো, এটি কি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থি নয়? সে জন্যই এটার প্রচন্ড সমালোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এটি আপলোড হওয়ার পর সেটি তারা (প্রথম আলো) সরিয়েও ফেলেছিল। কিন্তু সেটির ‘স্ক্রিনশট’ তো বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার হয়েছে, সেগুলো রয়েও গেছে। সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। এ জন্য সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা মামলা করেছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে এবং আইনের গতিতে আইন চলবে।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার আগে বাসন্তীর গায়ে জাল পরিয়ে ছবি তুলে সেটি প্রকাশ করা হয়েছিল। তখন জালের দাম কাপড়ের দামের চেয়ে বেশি ছিল, এখনও জালের অনেক দাম। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বাসন্তীর গায়ে জাল পরিয়ে ছবি তুলে প্রকাশ করা হয়েছিল। অনেকে বলছে, ২৬ মার্চ প্রথম আলোর এ ঘটনাটি বাসন্তীকে জাল পরানোর মতোই। রাষ্ট্র, সমাজ, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অসত্য পরিবেশন সব মহলের মতে একটি অপরাধ, ডিজিটাল অপরাধ।

এ বিষয়ে বিএনপির বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, কোনও কিছু পেলেই বিএনপির বিবৃতি দেওয়ার অপচেষ্টা ছাড়া সেটি অন্য কিছু নয়। বাংলাদেশে মত প্রকাশের যে স্বাধীনতা, সেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশে নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হচ্ছে সমগ্র দেশের সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য, সাংবাদিকদেরও ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে অনেক সাংবাদিকও মামলা করেছে। কদিন আগে একজন নারী সাংবাদিক বিদেশ থেকে চরিত্র হননের দায়ে আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ, পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, গ্রন্থকার ও গবেষক পপি দেবী থাপা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.