ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বোরো ধানে ব্লাস্টার রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাওড় এলাকার কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। তাদের জীবিকার অন্যতম অবলম্বন বোরো ধানের খেতে দুঃস্বপ্ন হয়ে এসেছে এ রোগ। এ রোগে ধানের শিষ বের হওয়ার পর শুকিয়ে চিটা হয়ে যায়। আগাম জাতের ধান ব্রি-২৮ ব্রি ৮১ ধান এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এ বছর উপজেলায় ১৩ হাজার ৭৭২হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের ধান হিসাবে তিন হাজার হেক্টর জমিতে ব্রি ধান-২৮ ব্রি ধান ৮১ রোপণ করেন চাষিরা।
সরজমিনে দেখা যায়, হাওড়ে এখন মাঠে মাঠে বাতাসের সঙ্গে দুলছে বোরো ধানের শিষ, দুলছে চাষির স্বপ্ন। স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে নেক ব্লাস্টার। এ রোগে সংক্রমিত জমির ধান কোনোভাবেই রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন চাষি।
শিমরাইল গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক নাজির আহমেদ; বাদৈর গ্রামের কৃষক আলী মিয়াসহ অনেকেই বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ব্রি ধান ২৮ এর জমি সুন্দর হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ ধানের শীষ নষ্ট হয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরই সোনালি ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন ছিল কৃষকদের। কিন্তু ১০ হেক্টর জমির ব্রি ধান-২৮ ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ নিয়ে দিশেহারা কৃষক পরিবার।
কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারনে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে সারা দেশে বোরোধানে রোগ বালাই এর আক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কসবা উপজেলায় প্রায় ১৩৭৭২ হে. জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১০হেক্টর জমিতে ব্লাস্ট এর আক্রমণ রয়েছে। মাঠ পরিদর্শন এর মাধ্যমে এটা পরীক্ষীত যে বিল এলাকাগুলোতে এ রোগের প্রাদূর্ভাব বেশি। এবং পুরাতন ধানের জাতিগুলোর মধ্যে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ বেশি। এ অবস্থায় যেহেতু একটা বিরাট অংশ এখনো স্বাভাবিক এবং সুস্থ রয়েছে সেগুলো যেনো কৃষক নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে পারে সেজন্য কৃষককে সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বৃন্দ। এ সময়ে কৃষক কে ছত্রাকনাশক ট্রুপার/নাটিভো/ ফিলিয়া/ স্ট্রমিন/ ব্লাস্ট/ বীর যেকোনোটি স্প্রে করতে হবে। আর পুরাতন ধানের জাত যেমন ব্রিধান ২৮, ব্রিধান ২৯, ব্রিধান ৮১ চাষ করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এ বিষয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।