নতুন নিয়মে চিকিৎসার হালচাল

প্রশান্তি ডেক্স ॥ সারাদেশের মতো ময়মনসিংহের গফরগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু তেমন প্রচার না থাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেম্বারে বসলেও রোগীর দেখা মিলছে না। গত রবিবার (২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে দেখা গেছে, আউটডোরের গাইনি বিভাগের কনসালট্যান্টের কক্ষে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক উম্মেল ওয়ারা খান চৌধুরী একজন সিনিয়র স্টাফ নার্সকে নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু একজন রোগীও চিকিৎসা সেবা নিতে আসেনি।

ডা. উম্মেল ওয়ারা খান চৌধুরী বলেন, ‘গত ৩০ মার্চ বৈকালিক চিকিৎসাসেবা উদ্বোধন করা হয়। ওই দিন তিন জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সপ্তাহের শনি ও রবিবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত শনিবার মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসেছিলেন। ছয় জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। গত  রবিবার বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেম্বারে বসে থাকলেও একজন রোগীও চিকিৎসাসেবা নিতে আসেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রমজান মাসের কারণে বিকেলের দিকে রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে আসছে না। পাশাপাশি সবেমাত্র প্রচার শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ঈদের পরে বৈকালিক চিকিৎসাসেবায় রোগীর সংখ্যা বাড়বে।’

গফরগাঁও পৌর এলাকার বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ব্যাপক প্রচার না থাকায় সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে কিছুই জানে না। এই কার্যক্রমকে সফল করতে হলে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে প্রচার চালাতে হবে। মানুষকে বিষয়টি জানাতে হবে।’

স্থানীয় গৃহবধূ সালমা আক্তার বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আউটডোরে চিকিৎসক বিনামূল্যে সেবা দিয়ে থাকেন। বিকেলে কোনও চিকিৎসক থাকে না। সরকারের এমন উদ্যোগে এখন থেকে বিকালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া যাবে। অল্প টাকায় চিকিৎসাসেবা নেওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষ বেশি টাকা ফ্রি দিয়ে ময়মনসিংহ শহরের বড় বড় চিকিৎসকের কাছে যেতে পারে না। এ ধরনের উদ্যোগে অল্প টাকায় ঘরের কাছেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পাওয়া যাবে। তবে এ বিষয়টি মানুষকে জানাতে হবে।’

গফরগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন বলেন, ‘বৈকালিক চিকিৎসাসেবার বিষয়টি মানুষকে জানাতে প্রচার শুরু করা হয়েছে। এখনো মানুষের কাছে তেমন ভাবে এই বিষয়ে জানানো সম্ভব হয়নি। আর রোগীর না আসার পিছনে কারণ রমজান মাস। এ সময় মানুষ ব্যস্ত থাকে। বাড়ি থেকে বের হতে চায় না। ঈদের পরে আশা করা যাচ্ছে এই সেবা পেতে মানুষের আগ্রহ বাড়বে। রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে।’ ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সবেমাত্র বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ বিষয়টি মানুষকে জানানোর জন্য প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে সরকারের এমন উদ্যোগকে সফল করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.