রাশিয়া ন্যাটোর সকল সীমান্তে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সীমান্তের কাছে বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া। মিনস্কে গত রবিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বরিস গ্রিজলভ এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতের অংশ হিসেবে অস্ত্রগুলো বেলারুশের পশ্চিম সীমান্তে মোতায়েন করা হবে।’

বেলারুশিয়ান রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে গ্রিজলভ বলেন, ‘ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও এটি করা হবে।’ অস্ত্রগুলো ঠিক কোথায় রাখা হবে তা উল্লেখ না করে গ্রিজলভ বলেন, ‘অস্ত্র মোতায়েনের কাজটি ১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হবে।’ গত মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর রাষ্ট্রদূত এই বক্তব্য দেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সংলগ্ন নেটুভুক্ত দেশগুলোর সকল সিমান্তেই রাশিয়া পারমানবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে।

লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া এবং পোল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত আছে বেলারুশের। এ দেশগুলো ন্যাটোর সদস্য। সামরিক জোটটি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সোভিয়েত আধিপত্য রুখতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

রাশিয়া গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের শুরুর পর থেকে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ডে ন্যাটো তাদের সেনার সংখ্যা প্রায় দশগুণ বাড়িয়েছে। বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের একজন। গত শুক্রবার তিনি জানান, প্রয়োজন হলে তারা তাদের দেশে রাশিয়াকে আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র রাখারও অনুমতি দেবে।

কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র কী? যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুসেনা ও অস্ত্র ধ্বংস করার জন্য কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর পাল্লা কম এবং পারমাণবিক ওয়ারহেডের তুলনায় কম শক্তিশালী। পারমাণবিক ওয়ারহেডযুক্ত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পুরো একটি শহর ধ্বংস করতে সক্ষম।

স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র ওয়াশিংটন ও মস্কোর পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ আইনের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র এমন কোনও চুক্তির আওতায় নেই। রাশিয়া এখন পর্যন্ত নিজেদের এমন অস্ত্রের সংখ্যা প্রকাশ করেনি।

মার্কিন সরকারের ধারণা, রাশিয়ার কাছে প্রায় ২ হাজার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে উড়োজাহাজে বহন করার মতো বোমা, স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড ও কামানোর গোলা। স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্রে স্থল ও সাবমেরিনভিত্তিক আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রে যুক্ত করা থাকে। এগুলো যেকোনও সময় উৎক্ষেপণে প্রস্তুত রাখা হয়। কিন্তু কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র অল্প কয়েকটি সুরক্ষিত গুদামে মজুত রাখে রাশিয়া।

লড়াইয়ের ইউনিটের কাছে এগুলো পাঠাতে সময় লাগে। কয়েকজন রুশ যুদ্ধবাজ ক্রেমলিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কয়েকটি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্রের কাছাকাছি রাখার জন্য। যাতে করে পশ্চিমাদের প্রতি সতর্কবার্তা পাঠানো যায়। সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published.