বাঙ্গালীর আনন্দ এবং গ্লানি বিদুরীত হয় এই মাহিন্দ্রহনে। সার্বজনীন সাম্যের আরেকটি বন্ধনের জোয়ারে আবদ্ধ জাতি, ধর্ম ও গোত্র বর্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ সমাগত হয় বাঙ্গালী ও বাংলা ভাষা-ভাষির সামনে। এই দিনটি নানারঙ্গে রাঙ্গিয়ে উদযাপিত হয়; হয়েছে এবং হবে। দিন যতই যাচ্ছে ততই এর রঙ্গের ও জোয়ারের এমনকি বন্ধনের সৃমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সকল রঙ্গের আবরণে বিতারিত হউক আমাদের মাঝ থেকে লোভ, ক্রোধ, হিংসা-বিদ্দেশ এবং হানা-হানি ও মারামারি আর অসাম্প্রদায়িক সকল নেতিবাচকতা।
বাঙ্গালীর ঐক্য বুঝেনা জাত-পাত এবং ধর্ম ও বর্ণ আর গোত্র। বাঙ্গালীর ঐক্য ছিল সার্বজনীন ভালবাসা আর ক্ষমা এবং বিশ্বাস ও ভরসার। বাঙ্গালী এই মুলমন্ত্র থেকেই উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ছিনিয়ে এনেছিল আজকের উন্নয়নকামী স্বাধীনতা এবং উন্নয়ননের জোয়ার। এই বাঙ্গালী আবারো জেগে উঠবে এই পহেলা বৈশাখের ঐক্যতানে এবং সেই ৭১এর ঐক্যবদ্ধ আগ্রগতির সম্মুখনী শক্তিতে। ৭১ নাজাত পেয়েছিল বাঙ্গালী আর এখন নাজাতের সময় হয়েছে বাকী সকল থেকে এমনি মুসলিম জাতির এখন চলছে নাজাতের সময়। তাই এই নাজাত অর্জনকারীর দলের সদস্য সকলেই আজ ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান থেকেই আগামীর সমুহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
শৈষবে দেখেছি ১লা বৈশাখে গ্রামে গ্রামে মেলা বসত, দোকানো বা ব্যবসায়ে বসত শুখ হালখাতা, জোয়ার আসর, বিভিন্নরকমের খেলাধুলা, মিষ্টি, পিঠা আর বাহারি খেলনার সমারোহ। যেখানে ছিল মনুষ্য যানজট আর আনন্দের আনন্দ হিল্লোল। ঐ মেলায় বা ঐ সময়ে ছিলনা ধনী ও গরিবের বৈষম্য বরং ছিল মিলবন্ধন। গ্রামে বড় মাছ, মাংস, তেতো তরকারী বা শাক, বাহারি ভর্তা, পান্তা, টক ডালসহ নানান খাবার ছিল ঐ পহেলা বৈশাখে আর এখন যুক্ত হয়েছে আরো বর্ণীল বাহারী খাবার, ইলিশ থেকে শুরু করে সিজনাল ভর্তা টক মিষ্টি এবং কাপড়ের বাহারী সৌন্দর্য এবং গান-বাজনা আর নাচ সঙ্গে চলছে বিভিন্ন সংস্কৃতির একঝকল দৃষ্টিনন্দন উপভোগ্য সোনালী অতীতের বর্তমানমিশ্রীত ভবিষ্যৎ।
বর্তমানে আবার ধর্মীয় আবরণেও এই বৈশাখকে রাঙ্গানো হয়েছে। দোয়া, মোনাজাত, প্রার্থনা এবং শান্তি কামনা আর অশুভ শক্তির বিনাশের বিদায়সহ সবই হচ্ছে যা আরো নতুনন্ব নিয়ে আগামীর বর্ষবরণ এসে হাজির হবে আমাদের মননে।
আগামীর পৃথিবী হউক জঞ্জালমুক্ত, শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তায় শতভাগ পরিপূর্ণ। এই বৈশাখের হাওয়ায় পবিত্র হউক সকল সৃষ্টির আত্মা আর পবিত্রতার সকল কর্মকান্ড পরিস্ফুটিত হউক পরিবারে, সমাজে, রাষ্টের সকল ক্ষেত্রে। কর্ম এবং সেবা এই দুইয়েই ফুটে উঠুক পবিত্রতা আর এই পবিত্রতার মঙ্গলালুকে ভাসমান থাকুক বর্তমান এবং আগামীর পৃথিবী। মানুষ সৃষ্টির প্রকৃত তাৎপর্য বাস্তবে রূপায়িত হউক সৃষ্টিকর্তার পরিপূর্ণতার পরিপূর্ণতায়। আগামীর তরে সকলেই প্রস্তুত হউক এই বৈশাখী সাজে এবং কাজে। সকল নতুনকে স্বাগত জানিয়ে অগ্রগামী হউক আমাদের আগামীর কল্যাণ।
সকলের জন্য আমার ও আমাদের বৈশাখী কামনা হলো, সুন্দর হউন, নির্মল হউন, সুন্দর থাকুন, নির্মল রাখুন, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যে, কর্মে এবং এবাদতে সকল অবস্থায় এবং সকল ক্ষেত্রে রঙ্গিল স্বপ্নিল আনন্দের ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং যাবেন ও যাওয়ার সুযোগ করে দিবেন। ”সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে” এই মর্মবানীর শতভাগ সফলতা বাস্তবায়ন এবং রূপদানে নিয়োজিত হউন এই কামনা করেই সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।