ফেসবুক কর্মকর্তাকে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী: মোবাইল নম্বর দিয়ে আইডি খোলার যথার্থতা যাচাইয়ে উদ্যোগ নিতে পরামর্শ

প্রশাান্তি ডেক্স ॥ কেউ যাতে ভুয়া পরিচিতি ব্যবহার করতে না পারে সে ক্ষেত্রে এনআইডি বা মোবাইল নম্বর দিয়ে ফেসবুক আইডি খোলার বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে যথার্থতা যাচাইয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেছেন, ফেসবুক ব্যক্তিগত ওয়েব সাইট কিংবা সংবাদ প্রচারের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি কোনও কোনও ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন ও গুজব ছড়ানোসহ এটির অপব্যবহার ভয়ংকর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সমাজ কিংবা রাষ্ট্রই নয়, এটি ফেসবুকের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সুজানা সারোয়ার গত মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সঙ্গে সচিবালয়ে তার দফতরে বৈঠক করেন। বৈঠককালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মোস্তাফা জব্বার ফেসবুককে বাংলাদেশের আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ছাড়াও দেশ ও দেশের বাইরে থেকে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সম্মান বিঘ্নিতকারী মিথ্যা ও গুজব বা অপপ্রচারমূলক উপাত্ত প্রচার ছাড়াও সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পর্নোগ্রাফি, জুয়া ও বাংলাদেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধবিরোধী উপাত্ত প্রচার না করতে ফেসবুককে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশ ফেসবুকের একটি বড় বাজার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী ইন্টারনেটসহ শক্তিশালী টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ফেসবুকের বাংলাদেশে এখাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে।’ তিনি কোনও অশুভ শক্তি যেন ফেসবুককে তাদের মিথ্যাচার, অপপ্রচার কিংবা ব্যক্তিগত আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, এই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকের ভুয়া আইডি ব্যবহার করে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি এক শ্রেণির প্রতারকের মাধ্যমে কেউ কেউ প্রতারিত হচ্ছে।’ ক্ষতিকর কনটেন্ট বন্ধ করতে বিটিআরসির পাঠানো রিপোর্ট আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিটিআরসির ডিজিটাল সেল রয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভিযোগগুলো বিটিআরসি যাচাই বাছাই করে ফেসবুককে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠিয়ে থাকে। প্রেরিত রিপোর্টের বিষয়ে জরুরি কার্যকর উদ্যোগ আরও দ্রুততার সঙ্গে গ্রহণ করে অভিযোগ নিষ্পত্তির হার আরও বেশি পরিমাণ হওয়া অপরিহার্য।’ তিনি জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপনে যাতে ফেসবুক ব্যবহৃত না হয়, সে বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ জানান।

সুজানা সারোয়ার বলেন, ‘অন্যান্য দেশের পলিসি, আইন আর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। আমরা ক্ষতিকর কনটেন্টের বিষয়ে সতর্ক আছি। যে কোনও বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে অবশ্যই মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিবেচনায় রাখা উচিত। আমাদের পলিসিতে ঝুঁকিপূর্ণ কনটেন্টের বিষয়ে সচেতন থাকার বিষয়ে সরকার থেকেও বারবার বলা হয়েছে, আমরা সেই আলোকে ব্যবস্থাও নিয়েছি। ভবিষ্যতেও ফেসবুক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.